সাতক্ষীরায় টাকা ফেরৎ চাওয়ায় এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগ, ১৫ জনের নামে আদালতে মামলা

রঘুনাথ খাঁ ঃ জমি লিখে না দেওয়ায় পাঁচ লাখ টাকা ফেরৎ চাওয়ায় আওয়ামী লীগের জনসভাস্থল থেকে ধরে নিয়ে ব্যান্রা ও ফেস্টুন জড়ানো লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ গুম করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার শ্রীফলকাটি গ্রামের নিহত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা ওরফে রানী বাদি হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে বৃহষ্পতিবার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক নয়ন বড়াল মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।মামলার আসামীরা হলেন, শ্যামনগর উপজেলার শ্রীফলকাটি গ্রামের রাজ্জাক গাইনের ছেলে রফিকুল গাইন, রবিউল গাইন, আব্দুর রব গাইন, একই গ্রামের ইউসুফ গাজী, মঞ্জুর মোড়ল, একই উপাজেলার ইসমাইলপুর গ্রামের শহীদ গাজী, হোাসইন গাজী, জাহাঙ্গীর মোড়ল, গাগড়ামারির আবু বক্কর খাঁ, শহরের সুলতানপুরের নাসির হোসেন, পুরাতন সাতক্ষীরার শেখ মাসুদুর রহমান, আহসান হাবিব ও কালিগঞ্জ উপজেলার কাশীশ্বরপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনসহ ১৫জন।মামলার বিবরণে জানা যায়, শ্যামনগর উপজেলার শ্রীফলকাটি গ্রামের রফিকুল গাইন, রবিউল গাইন ও আব্দুর রব গাইন গত বছর মুনজিতপুরে ভাড়া থাকাকালিন শ্রীফলকাটি গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী জাকিয়া সুলতানার পরিচয় হয়। বর্তমানে আসামী ওই তিন ভাই শ্রীফলকাটি গ্রামে বসবাস করে। ওই তিন আসামী শ্রীফলকাটি গ্রামে রাস্তার পাশে সরকারি খাস জমির উপর শেখ রাসেল চক্রের সাইন বোর্ড টানিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করিয়া থাকে। পূর্ব পরিচয়ের জের ধরে রফিকুল গাইন, রবিউল গাইন ও আব্দুর রব গাইন এক বিঘা জমি ১০ লাখ টাকায় বিক্রি করার জন্য মুন্সিপাড়ার ফিরোজ হোসেনের বাড়িতে বসে ২০২২ সালের ২২ মে বাদি জাকিয়া সুলতানার স্বামীর কাছ থেকে নগদ পাঁচ লাখ টাকা নেয়। এরপর থেকে বাকি টাকা দিয়ে জমি লিখে নিতে চাইলে প্রথম তিন আসামী নানাভাবে টালবাহানা করতে থাকে। একপর্যায়ে গত বছরের ৭ নভেম্বর সকাল ১০টায় শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে আওয়ামী লীগের জনসভা শুরু হলে বাদির স্বামী আশে পাশে ঘোরা ফেরা করতে থাকেন। সভা শেষ হলে প্রথমাক্ত তিন আসামীর নেতৃত্বে সকল আসামীরা বাদির স্বামী রফিকুলকে রাস্তা থেকে ধরে এনে গণপ্রন্থাগারের সামনে ব্যানার ও ফেস্টুন জড়ানো লাঠি দিয়ে মারপিট শুরু করে। তার মৃত্য নিশ্চিত হলে প্রথমাক্ত তিন আসামীসহ কয়েকজন একটি মাইক্রোযোগে রফিকুলের লাশ তুলে নিয়ে অন্যত্র মাটিতে পুঁতে ফেলে। তাকে বিভিন্ন স্থানে সন্ধান চালিয়েও পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে সদর থানায় গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসামীরা আওয়ামী লীগ করে বিধায় মামলা নেওয়া যাবে না বলে থাকা থেকে বের করে দেন। আসামীদের হুমকি ধামকিতে মামলা করা যায়নি। প্রমান লোপাট করতে আসামীরা রফিকুলের লাশ অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে মাটি চাপা দিয়েছে।মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. এসএম ফিরোজ হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)