কালিগঞ্জ উপজেলায় ৯১ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংস্কার দেখিয়ে প্রায় কোটি টাকা লোপাট
হাফিজুর রহমান: কথায় আছে না কাজির গরু কিতাবে আছে গোয়ালে নাই। তেমনি অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান প্রধানরা জানেনই না যে তাদের প্রতিষ্ঠানে টাকা বরাদ্দ হয়েছে। তেমনি সম্প্রতি কয়েক মাস আগে ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ১২ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বিগত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ৭৯ টি ভোট কেন্দ্র বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত, সংস্কার দেখিয়ে প্রায় কোটি টাকা পরস্পর যোগ সোযোগে ভাগ বাটোয়ারার মাধ্যমে প্রকল্পের টাকা লোপাট করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। ঘটনাটি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার রিমালে ভুয়া ক্ষতিগ্রস্ত ১২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ৭৯ টি ভোটকেন্দ্র স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা সমূহ। সরো জমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায় ক্ষতিগ্রস্ত, সংস্কারের নামে বরাদ্দকৃত অর্থের কোন কাজ না করে ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে সমুদায় টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক গত ১৩-৬-২০২৪ ইং তারিখে উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ৩৮,০১,০০০০,৫০০,২০,১৩৩,২২-১৭৭১নংস্মারকে সারা বাংলাদেশে ১,১৬৩ প্রাথমিক বিদ্যালয় মেরামত, সংস্কার দেখিয়ে ১২ কোটি ২৫ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। এরমধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলায় ১২ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভুয়া ক্ষতিগ্রস্ত দেখিয়ে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ নিয়ে ২/১ টি প্রতিষ্ঠান বাদে বাকি সব প্রতিষ্ঠান কোন কাজ না করেই সমুদয় টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে। বিদ্যালয় গুলি হল নলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১ লক্ষ, নামাজগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১ লক্ষ, গোবিন্দ কাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১ লক্ষ, শুইল পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫০ হাজার, মাগুরালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫০ হাজার, নবীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫০ হাজার, বাগবাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫০ হাজার, ঘুসুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেন্টার ৫০হাজার, চাঁদখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫০হাজার, চাম্পাফুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫০ হাজার, গড়ুই মহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫০হাজার এবং এম খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। তবে এ বিষয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ কুমার নন্দীর নিকট জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানেন না বলে এ প্রতিবেদকে জানান। একইভাবে গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ঘ ৭৯ টি কেন্দ্রের প্রতিটিতে ১ লক্ষ টাকা করে ৭৯ লাখ টাকা বরাদ্দ নিয়ে সর্বমোট সাড়ে ৮৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু খোঁজ নিয়ে কোন ভোটকেন্দ্র সংস্কার না করেই ওই সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মিলে পরস্পার যোগসাযোগে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করলেও ঐ সমস্ত কেন্দ্রের বা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধান বা ওই সময় দায়িত্ব পালনকারী প্রিজাইডিং অফিসাররা কেউ কিছু জানেন না বলে জানান। অবস্থাটি এমনই সরকারি মাল দরিয়ায় ফেল। মিলেমিশি করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ। এইভাবে সরকারি অর্থ লোপাট হলেও দেখার কেউ ছিলনা ।