কালিগঞ্জ থানার সাবেক ওসি এমদাদ সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা
হাফিজুর রহমান:বিএনপি নেতা ফার্মেসি মালিক আসাদুর রহমানকে বাড়িতে ও থানা হাজতে চাঁদার দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বহুল আলোচিত শেখ ইমদাদ উল হক সহ ৫ জনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের সাত হালিয়া গ্রামের মৃত সাইদুর রহমানের পুত্র ফার্মেসি মালিক আসাদুর রহমান বাদী হয়ে সাতক্ষীরার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ মামলা দাঁয়ের করেন। বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি তদন্ত-পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলো কালিগঞ্জ থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক বর্তমান পুলিশ পরিদর্শক শহীদুল্লাহ, উপ- পরিদর্শক নয়ন চৌধুরী এবং উপজেলার বাগমারি গ্রামের অনিল মৃধার পুত্র হরিপদ মৃধা, মলেঙ্গা গ্রামের বরকাতুল্লাহ গাজীর পুত্র আব্দুল গফুর গাজী। আদালতে দায়েরকৃত মামলার বিবরণে জানা যায় কালিগঞ্জ থানার সাতহালিয়া গ্রামের বিএনপি নেতা ফার্মেসি মালিক আসাদুর রহমানের কদমতলা বাজারে একটি ওষুধের দোকান আছে। তার খালাতো ভাই খুলনা মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। বাগমারি গ্রামের হরিপদ মৃধা ও মলেঙ্গা গ্রামের গফুর গাজী তার দোকান থেকে প্রায় বাকিতে ঔষধ নিত টাকা চাইলে বিএনপির লোক বলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিত। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে ৫ জুলাই তাকে পুলিশ দিয়ে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করায়। ২৫ জুলাই জেল হাজত থেকে জামিনে মুক্তি পায়। ২০১৪ সালে১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭ টার দিকে কালিগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক শহীদুল্লাহ সহ হরিপদ মৃধা ও গফুর গাজী তার বাড়িতে এসে মারপিট করে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা চায়। চাঁদা না পেয়ে বাড়ি ভাঙচুর করে এবং বলে টাকা না দিলে বিএনপি’র সন্ত্রাসী হিসেবে নাশকতার মামলায় জেলে পাঠানো হবে। তখন সে ৬২ হাজার টাকা দেওয়ার পরও উপ-কারীদর্শক নয়ন চৌধুরী হাতকড়া পরিয়ে বাকী ৩৮ হাজার টাকা না দিলে ওসি ইমদাদুল হকের সামনে নিয়ে আসে। তখন ওসি এমদাদুল হক বলে ৩৮ হাজার টাকা না দিলে তোকে নাশকতার মামলায় চালান দেব। পরে টাকা না দেওয়ায় থানা হাজতে ফেলে ওসি এমদাদের নির্দেশে উপ পরিদর্শক শহীদুল্লাহ ও নয়ন চৌধুরী চোখ বেঁধে বেধড়ক পিটিয়ে পায়ের গোড়ালি ভেঙে দেয়। নিরুপায় হয়ে বাড়ি থেকে দেড় লাখ টাকা এনে দেওয়ার পরেও ২০১৩ সালের ১৬ জুলাই দায়ের করা ১৬ নাং মামলায় তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়। ৪ মাস ১৩ দিন জেল খেটে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জমিনে মুক্তি পেয়ে বাড়িতে আসলে বিষয়টি কাউকে জানালে আবারো মামলার হুমকি দিয়ে দেশছাড়া করে পরে ভারতে যে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে আস এতদিন দেশে পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো না থাকায় মামলা করা সম্ভব হয়নি। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরে পরিস্থিতি অনুকূলে আশায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে মামলার বিজ্ঞ কৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান।