সাতক্ষীরা জেল ভেঙে পালিয়ে যাওয়া ৫ আসামী গ্রেপ্তার
রঘুনাথ খাঁ:
সাতক্ষীরা জেলা কারাগার ভেঙে পালিয়ে যাওয়া ৫ জন আসামীকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আসামীরা এলাকায় ফিরে নতুন করে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছিল।র্যাব-৬ সাতক্ষীরার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, গত ৫ আগষ্ট বিকাল ৫ টা ৪০ মিনিটে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারের জেল রক্ষীদেরকে মারপিট ও লুটপাট শেষে জেল গেটের তালা ভেঙে কারাগার হতে আসামীরা পলায়ন করে এবং অন্যান্য আসামীদেরকে পালায়নের সহায়তা করে।
উক্ত আসামীগন সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে বের হয়ে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পেট্রোল বোমা, ককটেল, দাহ্য পদার্থ ব্যবহারসহ দাঙ্গা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে জেলা কারাগারের ভিতরে ভাংচুর করে, আগুন জালিয়ে দিয়ে জেলকারাগারের সকল নথিপত্রসহ বিপুল পরিমাণ সরকারি সম্পদ ক্ষতি সাধন করেছে এবং কারাগারের জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়।
কারাগার থেকে বের হয়ে সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা কার্যক্রম করে। এই সংক্রান্তে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি নাশকতা মামলা রুজু হয়। উক্ত নাশকতার প্রেক্ষিতে আসামিদের প্রতি বিশেষ নজরদারী রাখে র্যাবের একটি গোয়েন্দা টিম। র্যাব-৬, সিপিসি-১, সাতক্ষীরার একটি আভিযানিক দল নাশকতাকারীদেরকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে এবং অভিযান অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ আগস্ট সোমবার রাতে আভিযানিক দলটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, জেলার সদর থানা, পাটকেলঘাটা ও শ্যামনগর থানা এলাকায় জেল পলাতক ও নাশকতার মামলার এজাহার নামীয় আসামিগণ অবস্থান করছে।
উক্ত সংবাদের প্রেক্ষিতে র্যাব-৬, সিপিসি-১ সাতক্ষীরার আভিযানিক দল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে তাৎক্ষণিক উল্লিখিত স্থানে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নাশকতার মামলার এজাহার নামীয় আসামী ১। নুরুজ্জামান গাজী (৪৪), পিতা- কেরামত গাজী, গ্রাম- বৈশখালী, থানা- শ্যামনগরকে শ্যামনগর থানাধীন ভেটখালী এলাকা; ২। মোঃ মোশারফ হোসেন (৪৪), পিতা- মুনছুর আলী, গ্রাম- মাহমুদপুর, থানা- শ্যামনগরকে শ্যামনগর থানাধীন সোনারমোড় এলাকা; ৩। মোঃ আবু সাঈদ (২৭), পিতা- সামছুর গাজি, গ্রাম- বংশীপুর, থানা- শ্যামনগরকে শ্যামনগর থানাধীন বংশীপুর এলাকা; ৪। সুলতান মোড়ল (২৬), পিতা- লুৎফর মোড়ল, গ্রাম- হাজরাপাড়া, থানা- পাটকেলঘাটাকে পাটকেলঘাটা থানাধীন হাজরাপাড়া এলাকা ও ৫। আক্তারুল ইসলাম (৩২), পিতা- আহাদ শেখ, গ্রাম- ফয়জুল্লাহপুর, থানা- সাতক্ষীরাকে সদর থানাধীন ফয়জুল্লাহপুর নাকম এলাকা হতে সর্ব জেলা-সাতক্ষীরাদেরকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদেরকে সাতক্ষীরা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত: গত ৫ আগষ্ট সাতক্ষীরা কারাগার ভেঙে আসামী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গত ১৫ আগষ্ট সাতক্ষীরা কারাগারের জেলার হাসনা জাহান বিথী বাদি হয়ে সদর উপজেলার মহাদেবনগর গ্রামের গনেশ সরকারেরর ছেলে কলেজ ছাত্র গৌতম হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী ভাড়ুখালি গ্রামের শাহাদাত হোসেন, হাড়দ্দহ গ্রামের মাওলা সরদারের ছেলে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী সাহেব আলীসহ ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৩০০০/৩৫০০ জনকে আসামী করে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের ২০০৯ এর সংশোধিত ২০১৩ এর৬(২)(আ),৬(২)ই,৬(২ )উ/১২ তৎসহ ১৪৩/১৪৭/১৪৮/৩৭৯/৩৮০/২২৪/২২৫/৪২৭/৫০৬ ধারায়( পেনালকোড) মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক উজ্জ্বল সরকার গত ২৬ আগষ্ট শহরের মুন্সিপাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে ইমন গাইন, তলুইগাছা গ্রামের ওহাব সরদারের ছেলে শাহ আলম, ২৪ আগষ্ট কলারোয়ার গদখালির নাজমুল হাসানের ছেলে শাহ আলম কিবরিয়া, ২০ আগষ্ট একই উপজেলার তুলসীডাঙা গ্রামের মোস্তফা শেখের ছেলে আল আমিনকে গ্রেফতার করে। এছাড়া ২১ আগষ্ট শহরের সুলতানপুরের মহিউদ্দিন গাজীর ছেলে মেনহাজ গাজী আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।