নির্বাচনী রোডম্যাপ নিয়ে ভিন্ন অবস্থানে বিএনপি-জামায়াত
অনলাইন ডেস্ক:
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে গঠন হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এরপরই বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন ওঠে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন কবে? এ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোও কথা বলেছে। এরই মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়েছে বিএনপি। তবে এ ব্যাপারে ভিন্ন অবস্থানে তাদের রাজনৈতিক মিত্র বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
জানা যায়, রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে দুই দলের মধ্যে মতের মিল থাকলেও জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে তাদের দুই ধরনের বক্তব্য উঠে এসেছে।
গত রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে সেই ভাষণে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ না থাকায় গত সোমবার বিএনপির পক্ষ থেকে এক ধরনের আক্ষেপ প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনামুখর না হলেও তাদের প্রত্যাশা যে পূরণ হয়নি, নেতাদের বক্তব্যে সেটি স্পষ্ট।
অন্যদিকে জামায়াত প্রধান উপদেষ্টার ভাষণকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। সরকারকে সময় দিতে চায় দলটি।
চিকিৎসকদের এক সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, শহিদের রক্তের দাগ এখনো শুকাইনি। আহতরা হাসপাতালে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। এই অবস্থায় নির্বাচনের চিন্তা দলের নেই।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে তাদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে আন্দোলনে ছিল বিএনপি ও জামায়াত। এবারও ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় দুই দলের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ ছিল।
গত রোববার জাতির উদ্দেশে প্রথম ভাষণ দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভাষণে বিচার বিভাগ, পুলিশ, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন তিনি। পরে সোমবার এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হলে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। তবে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে রোডম্যাপ না থাকায় নির্বাচন কবে হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি বলে মনে করেন তিনি।
‘কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়’—জাতির উদ্দেশে ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এমন বক্তব্যের জবাবে সোমবার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, ‘এখনো একটা জিনিস ধোঁয়াশা, যেটা আমার পরিষ্কার হয়নি।’
অবশ্য প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে জাতির আকাঙ্ক্ষার প্রতিধ্বনি হয়েছে বলে মনে করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। গত সোমবার রাজধানীতে এক কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সরকার সঠিক পথে আছে বলে তারা মনে করেন।
জামায়াতের আমির বলেন, সাড়ে ১৫ বছর যেহেতু ধৈর্য ধরেছেন, আরো কিছুটা সময় ধৈর্য ধারণ করুন। অন্তর্বর্তী সরকারকে গুছিয়ে নেয়ার সুযোগ দিন। তাদের এভাবে ব্যতিব্যস্ত রাখলে তারা কাজ করবে কিভাবে?
জামায়াত নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, এখন জনসম্পৃক্ত কাজের দিকে তাদের বেশি মনোযোগ। মানুষের কাছাকাছি গিয়ে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হতে চান তারা।