সাবেক এমপি হাবিবসহ শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্তদের নিঃশর্ত মুক্তি ও সকল রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারসহ ৫ দফা দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
রঘুনাথ খাঁঃ শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ সাজাপ্রাপ্ত সকল আসামীদের নিঃশর্ত মুক্তিসহ ৫ দফা দাবিতে সংবাদ সস্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর একটায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে এসব দাবি করেন কলারোয়া উপজেলা বিএনপির সহ-সাধারন সম্পাদক শেখ আব্দুল কাদের বাচ্চু। এ সময় জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক শেখ তারিকুল হাসান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখিত দাবী গুলোর মধ্যে রয়েছে, ২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনার ১২ বছর পর কলারোয়া থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে মনগড়া মিথ্যা অভিযোগপত্র দাখিল করেন। যার প্রেক্ষিতে বিতর্কিত চার্জশিট ও মিথ্যা স্বাক্ষ্যদানের ভিত্তিতে আদালত সাবেক এমপি হাবিবসহ ৫০ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে। নি¤œ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে কারাবন্দী বিএনপি নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। ইতোমধ্যেই এই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত চারজন বিএনপি নেতা কর্মী কারা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় মৃত্যুবরণ করেছে। সাবেক এমপি হাবিবসহ ৪৫ জন বিএনপি নেতাকর্মী অদ্যবধি কারা ভোগ করে চলেছে। অবিলম্বে কারাবন্দি বিএনপি নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। একই সাথে মামলায় ১২ বছর পর যাদের কাছ থেকে আলামত হিসেবে অস্ত্র জব্দ করা হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করার দাবী জানানো হয়। কারন অস্ত্র আইনে উল্লেখ রয়েছে যাদের কাছ থেকে আলামত উদ্ধার হবে তারাই আসামী হবে, এছাড়া ইংরেজী ২১৫ সালের ১৪ জুলাই কলারোয়া সেনালী ব্যাংকে ডাকাতি ও জোড়া খুনের মামলা পূনারাজ্জীবত করে এর সাথে সম্পৃক্ত আওয়ামীলীগ নেতাদের গ্রেপ্তারসহ আইনের আওতায় আনার দাবী জানানো হয়। ২০১৩ সালের ৫ মার্চ উপজেলা পরিরষদ ভাইস চেয়ারম্যান কার্যালয়ে বোমা প্রস্তুতকালে নিজেদের তৈরী বোমা বিস্ফোরিত হয়ে শুকুর আলী নামে একজন মারা যায়। আহত হয় আরো তিনজন। এ ঘটনায় জড়িতদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনার দাবী জানানো হয়। এছাড়া ২০০০ সালের ৫ অক্টোবর বন্যায় প্লাবিত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সড়ক পথে কলারোয়া আসার সময় পথিমধ্যে ঝাউডাঙ্গা কলেজের সামনে পৌছালে কলারোয়া আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তার গাড়ি বহরে হামলা চালায় ও নেত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষন করে। যে কারনে তিনি সেখান থেকে বিবিসিতে সাক্ষাৎকার দিয়ে ঢাকায় ফিরে যান। এরপর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ও পুলিশ প্রশাসন সম্মিলিতভাবে কলারোয়া চৌরাস্তায় নির্মিত সভামঞ্চে হামলা চালায়, ভাংচুর করে ও পুলিশ প্রশাসন রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এরপর তারা ৪৬ বিএনপি নেতা-কর্মীর নামে জননিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে। পরে আদালত থেকে তারা জামিনে মুক্তি পায়। এ ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তসাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের এবং সকল প্রতিষ্ঠান থেকে দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজ মুক্ত করার জোর দাবী জানানো হয়।সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবুল হাসান হাদী, পৌর বিএনপির আহবায়ক মাসুম বিল্লাহ শাহীন, জেলা যুবদলের প্রধান সমন্বয়ক আইনুল ইসলাম নান্টা, জেলা কৃষক দলের সাবেক আহবায়ক আহসানুল কাদির স্বপন, শহর বিএনপির সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শরিফুল ইসলাম সজীব, কলারোয়া উপজেলার বিএনপি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রশিদ মিয়া, সাধারন সম্পাদক শেখ শরিফুজ্জামান তুহিন, যুবদল নেতা সবুজ, পারভেজ, পলাশ, মোশরাফ, মোতাহার প্রমুখ।প্রধান অতিথি তারিকুল হাসান বলেন, শেখ হাসিনার গাড়ীবহর হামলার মিথ্যা মামলায় ফরমেয়শী রায়ে ৭০ বছর মেয়াদী কারাভোগ করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সাংসদ হাবিবসহ ৪৫ নেতা-কর্মী। ইতিমধ্যে চার জন কারান্তরীন অবস্থায় মৃত্যু বরন করেছেন। তাদেরকে জেলখানায় শারিরীক নির্যাতন করায় তারা বিনাচিকিৎসায় মৃত্যু বরন করেছেন। তিনি এই হত্যার পিছনে জেল কৃর্তৃক্ষকে দায়ী করেছেন।