সাতক্ষীরায় ৫ আগষ্ট পরবর্তী সহিংসতায় ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের পরিধি বাড়ছে

রঘুনাথ খাঁ ঃ গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর সাতক্ষীরা জেলায় সহিংসতায় ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের পরিধি বেড়েই চলেছে।শুক্রবার ও শনিবার পাটকেলঘাটা, সদরের ফিংড়ি, বারপোতাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, পাটকেলঘাটা থানাধীন বাইগুনি গ্রামের ও মেলেকবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিমল বৈরাগীর বাড়ি ভাঙচুর করা হবে না এমন শর্তে ২০ হাজার টাকা, ও একই এলাকার পরিতোষ দাসের কাছ থেকে ৮ আগষ্ট পাঁচ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। লালচন্দ্রপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা গোবিন্দ মÐলের ছেলে তারক মÐলের স্টেশনারী দোকান ভাংচুর শেষে লুটপাট করা হয়েছে। তার ভাই গৌতম মÐলের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। ৫ আগষ্ট রাতে মজুমদার ফিলিং স্টেশনের পাশে তৈলকুপি গ্রামের গণেশ সাধুর সার, বীজ ও কীটনাশক এর গুদাম ভাঙচুর শেষে লুটপাট করা হয়েছে। একই রাতে পাটকেলঘাটা ওভারব্রীজের উপর শিবু ঘোষের ভাগ্যকুল মিষ্টান্ন ভাÐার ও গুদাম ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পাটকেলঘাটা বলফিল্ডের পাশে হাসান হোসেন বাবুর সিংগার মেশিনের শোরুম, ৫ টি মটর সাইকেল ও বাসা ভাঙচুর করে লুটপাট শেষে আগুন দেওয়া হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে অ্যাড, মোহাম্মদ হোসেনের ল’ চেম্বার ও নীচে পরেশ সরকারের মুদি দোকান ভাংচুর শেষে লুটপাট করা হয়েছে। লুটপাট শেষে আগুন দেওয়া হয়েছে দেলোয়ার হোসেন টিটুর টিভি ফ্রিজের দোকান, স্বজল নন্দীর আলু-পিয়াজ, হলুদ ও রসুনের গুদাম। পাঁচ রাস্তার মোড়ে অমল সেনের মিষ্টির দোকান, আওয়ামী লীগ অফিস, চেয়ারম্যান আব্দুল হাই এর বাসা ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ি অসীম সাধুর ভাঙচুর ও লুটপাট ছাড়াও স্বর্ণপট্টীর প্রশান্ত সান্ন্যালের নকুল জুয়েলার্স এর শার্টারও চারটি সিসি ক্যামেরা ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পাটকেলঘাটা ব্রীজের নীচে সজীব ঘোষের আদি ঘোষ ডেয়ারী ও রাজেন্দ্রপুর গ্রামের বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। কুমিরা রাঢ়ীপাড়ার মঙ্গল প্রামানিকের গোয়াল থেকে গরু খুলে নিয়ে জবাই করে পিকিনিক করা হয়েছে। এ ছাড়া কুমিরা বাসস্ট্যাÐে জয়দেব দাসের দোকান ভাঙচুর করে আট হাজার টাকা, মুকুন্দ দাসের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা, প্রশান্ত হোড়ের ছেলে বুদ্ধদেব হোড় এর দোকান থেকে এক কার্টুন সিগারেট, ২৪ টি স্পীড, ও সাড়ে সাত লাখ টাকা লুট করা হয়েছে। নিবাস সরকারের সার, বীজ ও কীটনাশকের দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে ৫ আগষ্ট রাতে। সুধান্য হোড়ের ছেলে চৈতন্য হোড়ের ইলেক্ট্রনিক্সের দোকান ভাঙচুর শেষে হরিলুট করা হয়েছে। তবি গাজীর ফ্লেক্সিলোড ও বিকাশের দোকান, পার্শ্ববর্তী আওয়ামী লীগ অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, কুমিরা বাজারে চেয়ারম্যানের মার্কেটের দীপঙ্করের চায়ের দোকান, ও ডাঃ মতিয়ার রহমানের চেমম্বার ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। স্বপন দে এর বাড়ি লুটপাট শেষে মধু ঘোষের অফিস, বিাকশ পালের বাড়িতে লুটপাট শেষে মা ও বোনের কানের সোনার দুল লুটপাট করা হয়েছে। ১৪ আগষ্ট বিকেল ৫টার দিকে সহকাারি ধর্মদাস মÐলকে নিয়ে মটর সাইকেলে বাড়ি ফেরার সময় ইসলামকাটি সাবরেজিষ্ট্রি অফিসের মোহরার মাদ্রা গ্রামের নিরঞ্জন মÐলের ছেলে উত্তম মÐললের গাড়ি থামায় ৮/১০ জন দুর্বৃত্ত। এ সময় ধর্মদাসকে মারপিট করে উত্তমকে মটর সাইকেলে তুলে একটি পানের বরজে নিয়ে ১০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। খবর পেয়ে সহকর্মীরা ছুটে এসে শালিস ও মধ্যস্তকারীসহ আড়াই লাখ টাকায় দফা রফা করা হয়।৫ আগষ্ট রাতে সাতক্ষীরা সদরের ডুমুরতলা গ্রামের শরৎ চন্দ্র মÐলের ছেলে অশোক মÐলের ঘেরের দেড় লক্ষাধিক টাকার মাছ, মটর সাইকেল লুটপাট শেষে ঘেরের বাসা থেকে জাল, ঘেরের আইল থেকে সবজি গাছ কেটে তছনছ করা হয়ছে। পরে বাড়িতে ভাংচুর ও , ২ ভরি সোনার গহনা, ৪৬ হাজার টাকা লুটপাট শেষে আগুন দেওয়া হয়েছে। একইভাবে বারপোতা গ্রামের ভ‚পতি সরকারের ছেলে উত্তম সরকারের বাড়িতে ঢুকে মা ও ঠাকুমরমাকে মারপিটের পর বেঁধে রেখে দুই লাখ ২০ হাজার টাকা, চার জোড়া সোনার দুল ও ৫ টি আংটি লুটপাট করা হয়েছে। ফিংড়ি বাজারে রেজিষ্টিকৃত জমিতে বানানো আওয়ামী লীগের অফিস ও নির্মাণাধীন ভবন ভেঙে জায়গা দখল করেছে ফিংড়ি গ্রামের বিএনপি কর্মী আব্দুস সবুর। সেখানে করা হচ্ছে নতুন ভবন। ৫ আগষ্ট রাতে ফয়জুল্লাপুর আওয়ামী লীগের অফিস ভাংচুর করা হয়েছে। গাভা গুচ্ছগ্রামে বসবসারত কবীর হোসেন ব্যাংদহা শ্মশানের জমি দখল করে নিয়েছে। ব্যাংদহা বাজারের আজিজুল ইসলামের কসমেটিকস দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। সাগর কর্মকারের লোহার তৈরি সামগ্রী লুটপাট শেষে ভাংচার করা হয়েছে দোকান। ৬ আগষ্ট লাকির চায়ের দোকান ভাংচুর করে লুটপাট শেষে আগুন দিয়ে ভষ্মীভ‚ত করা হয়েছে। হাবাসপুর গ্রামের উজ্জ্বল ঘোষের জায়গা দখল করে জামায়াত নেতা খলিল বাড়িঘর বানালে আদালত তা উচ্ছেদের আদেশ দিলেও ৫ আগষ্ট রাতে সেখানে খলিল পোল্ট্রি ফার্ম বানিয়েছেন ক্ষমতার দাপটে।
আশাশুনি উপজেলার ঠাকুরাবাদে যজ্ঞের মাঠ দখল ছাড়াও বড়দল ইউপি চেয়ারম্যান জগদীশ সানার ভাই অমল সানার বামনডাঙার বাড়ি ও দোকান ভাঙচুর শেষে লুটপাট করা হয়েছে। শোভনালি ইউনিয়নের কামালকাটি গ্রামের রমেশ মÐলের বাড়ি, খলিষানির তারক মÐলের বাড়ি ও বুধহাটা ইউনিয়নের বেউলা গ্রামের সুমন মুখার্জীর বাড়ি ও কুল্লা ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের উজ্জ্বল ঘোষের অফিস ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।

 

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)