ঘুমের মধ্যে কথা বলা: কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায়
স্বাস্হ্য ও চিকিৎসা ডেস্ক:
ঘুমের মধ্যে কথা বলা, যেটি somniloquiy নামেও পরিচিত। এটি একটি কৌতূহলী ঘটনা যা যুগ যুগ ধরে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। ঘুমের মধ্যে কথাগুলো অনেক সময় হতে পারে খণ্ড খণ্ড বাক্য, কখনো বা দীর্ঘ আলাপ! এর অর্থ আসলে কী? কেনই বা আমরা ঘুমের মধ্যে কথা বলি?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্লিপ টকিং হলো ঘুমের সময় কথা বলার কাজ, যাকে এক ধরনের প্যারাসোমনিয়া হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয় – এটি এমন একটি আচরণ যা ঘুমের সময় ঘটে।
স্লিপ টকিং কী?
ঘুমের ভেতরে কথা বলা এত সাধারণ ও পরিচিত একটি ঘটনা যে একে অনেক সময় সমস্যা হিসেবেই বিবেচনা করা হয় না। এই সমস্যায় আক্রান্তরা সাধারণ শব্দ থেকে জটিল বাক্য পর্যন্ত যেকোনো কিছু উচ্চারণ করতে পারে, কখনো কখনো নিজের সঙ্গে বা অদেখা সত্তার সঙ্গে কথোপকথনে জড়িত হতে পারে।
কাদের এই সমস্যা হয়?
ব্যক্তি, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে ঘুমের মধ্যে কথা বলার অভিজ্ঞতা প্রায় সব বয়সীরই থাকতে পারে। ৩ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা দেখা যেতে পারে। মাঝ রাতে তারা ঘুমের ভেতরে কথা বলতে পারে। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি তুলনামূলক কম দেখা যায়। প্রায় ৫% প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মধ্যে এ ধরনের সমস্যা থাকে। ঘুমের মধ্যে কথা বলার নেপথ্যে জেনেটিক কারণও থাকতে পারে, যা একাধিক প্রজন্মকে প্রভাবিত করে।
ঘুমের মধ্যে কথা বলার কারণ কী?
যদিও ঘুমের কথা বলার সঠিক কারণ অজানা, এটি ঘুমের যেকোনো পর্যায়ে ঘটতে পারে এবং স্বপ্ন দেখার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে বা নাও হতে পারে। মানসিক চাপ, নির্দিষ্ট ওষুধ, জ্বর, মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাধি এবং পদার্থের অপব্যবহারের মতো কারণগুলো ঘুমের কথা বলার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, ঘুমের মধ্যে কথা বলা অন্তর্নিহিত একটি উপসর্গ হতে পারে।
সমস্যা নিয়ন্ত্রণের উপায়
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, ঘুমের মধ্যে কথা বলার জন্য কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। তবে অনেক সময় এটি অন্যদের ঘুমে বিঘ্ন ঘটায় এবং বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রে একজন ঘুম বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করলে তা উপকারী হতে পারে।
আবার লাইফস্টাইল পরিবর্তন যেমন মানসিক চাপ কমানো এবং নিয়মিত ঘুমের সময়সূচী বজায় রাখার অভ্যাস এ ধরনের সমস্যা কমিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে।