এক দিনেই ২৫৫২১ কোটি টাকা ধার দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক
ডেস্ক নিউজ:
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতার ফলে দেশব্যাপী টানা ৫ দিন ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। ফলে ব্যাংকগুলোতে লেনদেন না হওয়ায় বেড়েছে নগদ টাকার চাহিদা। বুধবার সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলার নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। আর প্রথমদিনই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রায় ২৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা ধার নিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক রেপো, অ্যাসিউরড রেপো, অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট (এএলএস) এবং শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর জন্য ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটির (আইবিএলএফ) নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। নিলামে ৭ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ১৪ ব্যাংক ও দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার ৭ কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়। ১৪ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ৯টি ব্যাংককে ২ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। ২৮ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ১২টি ব্যাংক ও ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ধার দেওয়া হয় ৭ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা।
এছাড়া ১৮০ দিন মেয়াদি অ্যাসিউরড রেপো আওতায় তিন ব্যাংকে ৫ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা এবং একদিন মেয়াদি অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট আওতায় ১১টি প্রাইমারি ডিলার ব্যাংককে ৩ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়। আর ১৪ দিন মেয়াদি ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটির আওতায় একটি ব্যাংকে দেওয়া হয় ৪৯৭ কোটি টাকা এবং ২৮ দিন মেয়াদে ৫ ইসলামি ধারার ব্যাংকে দেওয়া হয় ৯৮৪ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে একদিনেই ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধার দেওয়া হয় ২৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৭ দিন মেয়াদে টাকা ধারের সুদহার ছিল ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ, ১৪ দিন মেয়াদে সুদহার ছিল ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ ও ২৮ দিন মেয়াদি টাকা ধারের সুদহার ছিল ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এছাড়া অ্যাসিউরড রেপো ও অ্যাসিউরড লিকুইডিটির সুদহার ছিল সাড়ে ৮ শতাংশ। ইসলামি ধারার ব্যাংকের জন্য মুনাফার হার নির্ধারণ ছিল সাড়ে ৫ শতাংশ। আর ইসলামি ধারার ব্যাংকের জন্য ২৮ দিন মেয়াদির মুনাফার হার ছিল ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, নগদ টাকার চাহিদা বাড়ার কারণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো একদিনে সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে। এ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে থাকা হিসাবে ঘাটতি ও নগদ জমায় (সিআরআর) ঘাটতি হিসেবে ব্যবহার করে অনেক ব্যাংক। অনেক ব্যাংক আবার নগদ টাকা নিয়ে গ্রাহকের চাহিদাও মিটিয়ে থাকে।
এদিকে কারফিউ শিথিলের দ্বিতীয় দিনেও (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর ব্যাংকগুলোতে টাকা তোলার হিড়িক লেগেছে। টাকা জমা দেওয়ার গ্রাহক সংখ্যা একদমই হাতে গোনা।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাংক খোলা থাকাকালীন অবস্থায় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়া সাধারণ গ্রাহকদের টাকা জমার দেওয়ার পরিমাণ খুবই কম। সিংহভাগ গ্রাহকই টাকা তুলতে এসেছেন।