ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টায় পাল্টে যেতে পারে মার্কিন নির্বাচনের গতিপথ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গত কয়েকদিন ধরেই অস্থির যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গন। এরমধ্যেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে ২০ বছর বয়সী এক যুবক। এই ঘটনা ট্রাম্পের সমর্থকদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। অপরদিকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দল ডেমোক্র্যাটিকের দলের প্রচার-প্রচারণা স্তব্ধ করে দিয়েছে।

অনেক বিশ্লেষক বলছেন, বিতর্কে জো বাইডেনকে ধরাশায়ী করার পর এমনিতেই আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যেই তার ওপর চালানো হলো হামলা। নির্বাচনের আগে এমন হামলায় ট্রাম্পের ওপর বিশ্বনেতাদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণের সহানুভূতি বা সমর্থন বাড়তে পারে। ফলে রিপাবলিকান এ প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনাও আরো বাড়তে পারে।

শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় নির্বাচনি সমাবেশে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টায় হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় গুলিতে তার ডান কানের ওপরের অংশে ফুটো হয়ে যায়।

দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই হামলা হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো হয়েছিল। রক্তাক্ত ট্রাম্প তখনও শূন্যে হাত উঁচু করেন এবং তার প্রচারণা শিবির জানায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট সুস্থ আছেন।

সংবাদমাধ্যম বিবিসির নর্থ আমেরিকা এডিটর সারাহ স্মিথ লিখেছেন, মুখে রক্ত নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প মুষ্টিবদ্ধ হাত ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছেন এবং সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা তাকে মঞ্চ থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন—এ ছবি শুধু ইতিহাস বানায়নি বরং এগুলোই নভেম্বরের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের হিসাবনিকাশ পালটে দিতে পারে।

জানা গেছে, ট্রাম্পের হামলার ঘটনার পরপরই ডলারের মূল্য বেড়েছে এবং বাজার আরো চাঙা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ইস্টস্প্রিং ইনভেস্টমেন্টসের পোর্টফোলিও ম্যানেজার রং রেন গোহ মনে করেন, বাজারে এই বৃদ্ধির ধারা আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে।

১৯৮১ সালে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের ওপর গুলি চালানোর পর এবার ট্রাম্পের ওপর হামলা হলো। এই হামলার কারণে আসন্ন নির্বাচনে ট্রাম্প বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে যেতে পারেন। ভেন্টেজ পয়েন্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা নিক ফেরেস বলেন, তাকে হত্যার চেষ্টার পর জরিপে ট্রাম্প ২২ পয়েন্ট এগিয়ে গিয়েছেন। এই নির্বাচনে ভূমিধস জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতা ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদরা ট্রাম্পের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। টেসলার প্রধান ইলন মাস্কের মতো ব্যবসায়ী নেতারাও ট্রাম্পের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছেন।

রয়টার্স ও ইপসসের জরিপে দেখা গেছে, এবারের নির্বাচনে অভিবাসন ও অর্থনীতি প্রধান ইস্যু। ভোটারদের একটি বড় অংশ মনে করছেন, অর্থনৈতিক ইস্যুতে ট্রাম্প তুলনামূলকভাবে ভালো প্রার্থী।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের অধীনে আরো কঠোর বাণিজ্য নীতি এবং শিথিল জলবায়ু পরিবর্তন নীতিমালা আশা করা যায়। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, করপোরেট ও ব্যক্তিগত কর কমানোর কারণে ট্রাম্পের অধীনে বাজেট ঘাটতি বাড়তে পারে।

ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে পুনরায় নিয়োগ দেবেন না। ট্রাম্পের নির্বাচনী সম্ভাবনার কারণে মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের সুদ বাড়ছে।

নিক ফেরেস বলেন, ট্রাম্প সবসময়ই বাজারপন্থী। তবে রাজস্ব নীতি শিথিল হলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে এবং সুদের হারও বাড়বে। শেয়ারের দামও বাড়ছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ এবং ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ শেয়ার সূচক নতুন রেকর্ড করেছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ চলতি বছরে ১৮ শতাংশ বেড়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)