দেবহাটায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ব্যবসায়ীকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা!
স্টাফ রিপোর্টার: দেবহাটার পারুলিয়ায় জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব শত্রæতার জেরে মো. আসাদুল ইসলাম (৩৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে পরিকল্পিতভাবে বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ফাঁসানোর অপচেষ্টায় লিপ্তের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম পারুলিয়ার মৃত দৌলত মোল্যার ছেলে এবং কুলিয়ার মেসার্স মদিনা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক।
ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম তার অভিযোগে বলেন, ২০২২ সালে তার বন্ধু পারুলিয়ার আজিমুল বাশারের বাবা আবুল হোসেনের কাছ থেকে ২ শতক জমি ক্রয় করেন তিনি। এনিয়ে জমি বিক্রেতা আজিমুল বাশারের চাচতো ভাই এবাদুল ইসলামের পরিবারের সাথে তাদের বিরোধ ও আদালতে মামলা চলে আসছিল।
সম্প্রতি একের পর এক এবাদুল ইসলামের বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে চলেছে, যাতে সন্দেহভাজন হিসেবে তিনিসহ জমি বিক্রেতা মৃত আবুল হোসেনের দুই ছেলে আজিমুল বাশার ও মাসুদুল আলম খোকন এবং জমি ক্রয়কালীন দলিলের স্বাক্ষী পারুলিয়ার মৃত নূর মোহাম্মাদের ছেলে মনিরুল ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলামের। তিনি আরও বলেন, এবাদুল ইসলামের বাড়িতে ইলেকট্রিক সরঞ্জাম তৈরির কারখানা রয়েছে। নুন্যতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই বাসাবাড়িতে অবৈধভাবে ইলেকট্রিক সরঞ্জাম তৈরি করেন এবাদুলের পরিবার। সম্প্রতি পরপর তিনবার ওই কারখানার বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ শুক্রবার (১২ জুলাই) রাত ৮টার দিকে এবাদুল ইসলামের বাড়ির কারখানায় অগ্নিকান্ড ঘটে, যেসময় তিনি কুলিয়ায় তার ওয়ার্কশপে কর্মরত ছিলেন। ওয়ার্কশপের সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও তার উপস্থিতির প্রমান রয়েছে। অথচ বারবার অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এবাদুল ইসলামের পরিবার তাকে সহ জমি বিক্রেতার দুই ছেলে আজিমুল বাশার ও মাসুদুল আলম খোকন এবং জমি ক্রয়কালীন দলিলের স্বাক্ষী মনিরুল ইসলামকে জড়িয়ে হয়রানী করে আসছেন। এবাদুল ইসলামের পরিবারের একাধিক ব্যাংক ঋন, ইলেকট্রিক কারখানার মালামালের ঋন পরিশোধ না করার পাশাপাশি প্রতিপক্ষকে হয়রানীর উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে বারবার নিজেরাই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলেও জানান ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম।
এবাদুল ইসলামের বাড়ির ইলেকট্রিক কারখানার এক কর্মচারি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রাত ৮টার সময় যখন ওই বাড়িতে কর্মচারি সহ অন্তত ১৫ জন অবস্থান করছে সেসময় বাইরের কোন ব্যক্তির পক্ষে অগ্নিসংযোগ করা সম্ভব না। তাছাড়া এসব অগ্নিকান্ডে কেবলমাত্র কারখানার বাতিল বা ইউজলেস মালামাল পুড়ছে যা রীতিমতো হাস্যকর। এসব অগ্নিকান্ডের ঘটনা পরিকল্পিত বলেও মনে করেন ওই কর্মচারি।
দেবহাটা থানার ওসি সেখ মাহমুদ হোসেন বলেন, একই বাড়িতে বারবার অগ্নিকান্ডের ঘটনা রহস্যজনক বলে পুলিশের কাছে মনে হয়েছে। শুক্রবার রাতে তিনি সহ দেবহাটা সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো. ফজলুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তদন্ত শেষে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ওসি।