পুলিশ পরিচয়ে আটকের ৪৮ ঘণ্টায়ও সন্ধান মেলেনি কালুর
রঘুনাথ খাঁ ঃ গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে শরিফুল ইসলাম কালু নামে এক ব্যক্তিকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টায়ও সন্ধান পায়নি তার পরিবারের সদস্যরা। শনিবার রাত ১১টার দিকে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভেটখালি এলাকার সোড়া গ্রামের আকবর আলীর বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।শরিফুল ইসলাম (৪২) দেবহাটা উপজেলার চালতেতলা গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে।
শ্যামনগর উপজেলার সোড়া গ্রামের তাসলিমা খাতুন জানান, খলিষাখালি বিলে ভ‚মিদস্যুদের সাথে বিরোধের জেরে তার স্বামীর নামে কয়েকটি মামলা দেয়া হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে স্বামীর সঙ্গে তিনিও পাঁচ মাস যাবৎ যশোরের সলুযা বাজারে বাক্কারের কুড়োর মিলে কাজ করতেন। সম্প্রতি তারা বাড়িতে আসেন। গত শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে দেবহাটা থানার উপপরিদর্শক গিয়াসউদ্দিনের নেতৃতে পুলিশ তার স্বামী শরিফুলকে ধরতে চালতেতলার বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখানে না পেয়ে শনিবার রাত ১১টার দিকে একটি সাদা মাইক্রেবাসে করে সাদা পোশাকে থাকা ১০/১২ জন তার বাপের বাড়িতে আসে। মাইক্রোবাসটি তারানীপুর পাঞ্জাগানার পাশে রেখে আসে তারা। বাপের বাড়িতে এসে শরিফুলকে ধরে ফেলে হাতে হ্যাÐকাপ লাগায়। গামছা দিয়ে পিঠ মোড়া করে দুই হাত বেধে ফেলা হয়। তাকে ব্যপক মারপিট করা হয়। বাধা দেওয়া বাবা আকবর আলীকে মারপিট করা হয়। তাকেও গালিগালাজ করা হয়। একপর্যায়ে চোখমুখে কালো কাপড় বেঁধে তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। জানতে চাইলে তারা নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশ বলে পরিচয় দেয়। তাকে সোনাদানা ও অস্ত্র উদ্ধারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে কয়েকজন তাকে জানান। সাদা পোশাকধারি কয়েকজনের কাছে পিস্তল ও হ্যান্ডকাপ ছিল।
তাসলিমা খাতুন আরো জানান, রবিবার সকাল থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়, দেবহাটা, শ্যামনগর ও সাতক্ষীরা সদর থানাসহ বিভিন্ন স্থানে সন্ধান চালালেও কোন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। ফলে তিনিসহ শরিফুলের প্রথম স্ত্রী, সন্তান ও পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। সন্ধ্যার সময় শ্যামনগর থানায় সাধারণ ডায়েরী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে দেবহাটার মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ ঘোষের বাড়িতে ডাকাতি মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক নুরুজ্জামান ছিদ্দিক সোমবার বিকেল পৌনে ৬টায় এ প্রতিবেদককে বলেন, শরিফুল নামে কাউকে এ মামলায় আটক করা হয়নি।
সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক ফয়সাল ইবনে আজিজ, দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন ও শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের কাছে শরিফুল ইসলাম নামের কোন ব্যক্তিকে শ্যামনগরের ভেটখালি এলাকার সোড়া গ্রাম থেকে শনিবার রাতে ধরে আনার কথা অস্বীকার করেন।