কী করলে দ্রুত ক্যালোরি পুড়বে?
লাইফস্টাইল ডেস্ক:
হাঁটলেই যদি ক্যালরি পোড়ে তাহলে সকাল-সন্ধ্যায় নিয়মিত হেঁটেও কেন অনেকের ওজন কমে না? অনেকে তো বছরের পর বছর ধরে হেঁটেও ওজন কমাতে পারেন না!
কেউ কেউ হয়তো বলবেন ওজন কমানোই তো হাঁটাহাঁটির একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। কথা সত্যি। ওজন কমানো ছাড়াও নিয়মিত হাঁটার অন্য অনেক স্বাস্থ্যগত উপকারিতা আছে। আপনি ১ কিমি হাঁটলে যতটা ক্যালোরি খরচ হবে; আমি ১ কিমি হাঁটলে ততটা ক্যালোরি খরচ নাও হতে পারে। আসলে এই হাঁটা ও ক্যালোরি খরচের সঙ্গে অন্য কয়েকটি বিষয় জড়িয়ে আছে। যেমন আপনার ওজন কত, আপনি কী গতিতে কতটা সময় ধরে কী রকমের পথে হাঁটছেন। কত কিলোমিটার হাঁটলে কতটুকু ক্যালোরি পোড়ে সেই হিসেব কী জানেন?
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ৫ জন বন্ধু গল্প করতে করতে রোজ একই গতিতে, একই রাস্তায় হাঁটেন। তা সত্ত্বেও ৫ জনের ক্ষেত্রে ক্যালোরি পোড়ার পরিমাণ কিন্তু আলাদা। কার শরীর থেকে কতটুকু ক্যালোরি পুড়বে তা অনেকটাই নির্ভর করে ঐ ব্যক্তির ওজন, হাঁটার গতি এবং কী ধরনের রাস্তায় হাঁটছেন তার ওপর।
ধরা যাক, কোনো ব্যক্তির ওজন ৭০ কেজি। এক কিলোমিটার রাস্তা হাঁটতে ঐ ব্যক্তির যে পরিমাণ শক্তি ক্ষয় হবে তার চেয়ে অনেক বেশি ক্যালোরি পুড়বে ৯০ কেজি ওজনের কোনো ব্যক্তির। প্রাথমিক ভাবে বলা যায়, ৭০ কেজি ওজনের কোনো ব্যক্তি ১ কিলোমিটার পথ হাঁটলে ৬০ থেকে ৭৫ ক্যালোরি এবং ৯০ কেজি ওজনের কোনো ব্যক্তি হাঁটলে ৮০ থেকে ১০০ ক্যালোরি পোড়ে।
এবার আসা যাক গতির প্রসঙ্গে। প্রতি ঘণ্টায় ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতে পারলে যে পরিমাণ ক্যালোরি ক্ষয় হবে, তার চেয়ে অনেক শক্তি ক্ষয় হবে প্রতি ঘণ্টায় ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার পথ হাঁটলে। হাঁটার গতির সঙ্গে হার্ট রেট বা হৃৎস্পন্দনের সম্পর্ক আছে। হৃৎস্পন্দনের হার বৃদ্ধি পেলে ক্যালোরিও পুড়বে তাড়াতাড়ি। সমতল জায়গায় হাঁটলে যতটুকু ক্যালোরি পুড়বে, তার চেয়ে অনেক বেশি ক্যালোরি পুড়বে পাহাড়ি বা খাড়াই রাস্তায় হাঁটলে। এখানে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বিপাকহার। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বিপাকহারের গতি ক্রমশ শ্লথ হয়ে আসে। তাই হাঁটার পাশাপাশি বিপাকহার বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে।
কী করলে দ্রুত ক্যালোরি পুড়বে?
১. সবচেয়ে কার্যকরী পন্থা হলো জোরে জোরে হাঁটা। দ্রুত গতিতে হাঁটলে হার্ট রেট অর্থাৎ হৃৎস্পন্দনের হার বেড়ে যায়। যা ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে।
২. সমতল রাস্তায় না হেঁটে একটু খাড়াই, পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটলে উপকার পাবেন। চড়াই-উতরাই পথে হাঁটতে গেলেও বেশি শক্তি ক্ষয় হয়। তাতেই অনেকটা পরিমাণে ক্যালোরি পোড়ে।
৩. ক্যালোরি পোড়াতে হলে শুধু দ্রুত গতিতে হাঁটলেই হবে না। সঙ্গে জগিংও করতে হবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর হাঁটা এবং জগিং করা— এই ছন্দ মেনে চলতে পারলে ক্যালোরি পোড়ানো সহজ হবে।
৪. হাঁটার সঙ্গে হালকা ওজন বইতে পারলে আরো ভালো হয়। ভার বহন করার সময়ে আরো বেশি শক্তির প্রয়োজন হয়। ক্যালোরি পুড়লে তবেই শক্তি পাওয়া যায়।
৫. একটু একটু করে হাঁটার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। এক কিলোমিটার থেকে শুরু করে ক্রমে দশ বা পনেরো কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত করতে পারলে ক্যালোরি পোড়ার পরিমাণও বাড়বে