রক্তে হিমোগ্লোবিনের বাড়ায় কলার মোচা
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ডেস্ক:
সারা বছর পাওয়া যায় এমন একটি ফলের নাম কলা। কলায় থাকা অনেক পুষ্টিগুণ থাকে কলার মোচায়ও। কলা গাছের শুধু কলা নয়, এর পাতা, ফুল, মোচা, কাণ্ড, থোর সবই উপকারী। মোচাকে বলা হয় পুষ্টির পাওয়ার হাউস। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি হজমে সাহায্য করে। মোচা খেলে পাওয়া যায় সার্বিক সুস্থতাও। বিশেষজ্ঞরা বলেন, কলা পটাশিয়াম ও বিভিন্ন ভিটামিনে ভরপুর। কলার পাতা হজমে সাহায্য করে। এর ফুল ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী।
কলার মোচাতে রয়েছে ফাইবার, যাতে উচ্চ মাত্রার লৌহ উপাদান থাকে এবং লোহিত কণিকার উৎপাদন বাড়ায়। এতে করে হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে নিয়মিত কলার মোচা খেলে রক্তে চিনির মাত্রা কমে ও ইনসুলিন এর মাত্রা ঠিক থাকে। অর্থাৎ ডায়াবেটিস ও রক্তশূন্যতা দূর করতে কলার মোচা বেশ উপকারী।
চিকিৎসকরা বলছেন, বৃক্ক বা কিডনিতে পাথর জমতে বাঁধা দিতে পারে কলার মোচা। তাছাড়া যাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের সংখ্যা কম তাদের অবশ্যই কলার মোচা খাওয়া উচিত। কলার মোচায় থাকা ভিটামিন বি ৬ এবং আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায়। পাশাপাশি কমায় কোলেস্টরলের মাত্রাও।
মোচার পুষ্টিগুণ
প্রতি ১০০ গ্রাম মোচায় থাকে – ভিটামিন এ, ভিটামিন বি সিক্স, ভিটামিন সি ৪২০ মিলিগ্রাম; ভিটামিন ই, প্রোটিন ১.৭ গ্রাম; ক্যালসিয়াম ৩২ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৪২ মিলিগ্রাম, লৌহ ১.৬ মিলিগ্রাম, ফ্যাট ০.৭ গ্রাম, পটাশিয়াম ১৮৫ মিলিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৫.১ গ্রাম, রিবোফ্লেবিন .০২ মিলিগ্রাম, আঁশ ১.৩ গ্রাম, থায়ামিন .০৫ মিলিগ্রাম।
মোচার উপকারিতা
১. পিরিয়ড স্বাভাবিক রাখে: অনেক নারী অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যায় ভোগেন। এই চক্র ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত খেতে পারেন কলার মোচা। কলার মোচায় থাকা বিভিন্ন উপকারী উপাদান পিরিয়ড চলাকালীন ব্যথা কমায়। সেইসঙ্গে এটি প্রোজেস্টেরন উত্পাদন বৃদ্ধি করে রক্তস্বল্পতা কমায়।
২. ওভারিয়ান সিন্ড্রোম সমস্যায় কার্যকরী: বর্তমানে অনেক নারীর পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম বা পিসিওএস দেখা দেয়। এ ধরনের সমস্যায় সন্তানধারণসহ স্বাভাবিক অনেক কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিয়মিত কলার মোচা খেলে তা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম সারাতে কাজ করে। সেইসঙ্গে এটি কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে ফোলাভাব ইত্যাদিও দূর করে।
৩. মন ভালো রাখে: যারা বিষণ্নতা বা হতাশায় ভুগছেন তারা পাতে রাখতে পারেন কলার মোচা। কলার মোচায় আছে ম্যাগনেশিয়াম। এটি হতাশা, উদ্বেগ ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে। এটি মন ভালো রাখে। বিষণ্নতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।
৪. ডায়াবেটিসে উপকারী: যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য উপকারী সবজি হতে পারে কলার মোচা। এতে থাকা ফেনলিক অ্যাসিড এবং অন্যান্য বায়োঅ্যাক্টিভ উপাদান রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয় ডায়াবেটিসও।
৫. ক্যান্সার ও হৃদ্রোগ প্রতিরোধ করে: কলার মোচা মারাত্মক সব অসুখ প্রতিরোধ করতে পারে। এতে থাকে ফেনোলিক অ্যাসিড, ট্যানিন, ফ্লেভানয়েড ও নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা শরীরের ফ্রি-র্যাডিকেল ধ্বংস করে। এর ফলে ক্যান্সার প্রতিরোধ সহজ হয়। সেইসঙ্গে ভালো থাকে হৃৎপিণ্ডও।