প্যারাগুয়েকে এক হালি গোল দিলো ব্রাজিল

স্পোর্টস ডেস্ক:
অবশেষে হলুদের ঢেউ উঠলো লাস ভেগাসের অ্যালিগেন্ট স্টেডিয়ামে। ভিনিসিয়ুস, সাভিনহো, লুকাস পাকেতা আর রদ্রিগোদের সেই হলুদের ঢেউয়ে ভেসে গেলো প্যারাগুয়ে। ৪-১ গোলের বিশাল জয়ে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টারের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেলো অন্যতম ফেবারিট ব্রাজিল।

লাস ভেগাসের অ্যালিগায়েন্ট স্টেডিয়ামে আজ (শনিবার) গ্রুপপর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে প্যারাগুয়ের মুখোমুখি হয় দরিভাল জুনিয়রের শিষ্যরা। যেখানে জয় ভিন্ন অন্যকিছু ভাবার সুযোগ ছিল না সেলেসাওদের সামনে। কোস্টারিকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ড্র করার পর কোপায় টিকে থাকার লড়াইয়ে যা প্রয়োজন ছিল, সেটাই পূরণ করলেন ভিনি-লুকাস পাকেতারা। ভিনির জোড়া অবদান ছাড়াও প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়েই গোল করেছেন ২০ বছর বয়সী স্যাভিও মোরেইরা, পেনাল্টিতে আরেক গোল আসে লুকাস পাকেতার পা থেকে।

বড় জয়ে ‘ডি’ গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে উঠে গেছে ব্রাজিল। দুই ম্যাচেই জয় পাওয়া কলম্বিয়া আছে শীর্ষে। এদিকে, আজকের হারে কোপা থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে প্যারাগুয়ের। যদিও ব্রাজিলের সঙ্গে প্রায় সমানতালে লড়েছিল র‌্যাঙ্কিংয়ের ৫৮ নম্বর দলটি। গোল লক্ষ্যে দু’দলই সমান ছয়টি করে শট নেয়। ফাউলের সংখ্যাও সমান ১৩টি করে, এর মধ্যে কড়া ট্যাকল করে প্যারাগুয়ে একটি লাল ও দুটি হলুদ কার্ড দেখেছে। ব্রাজিলও হলুদ কার্ড দেখেছে তিনটি।

ম্যাচে ব্রাজিল মূল কাজের অনেকটা প্রথমার্ধেই সেরে ফেলে। ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকার পর তারা দ্বিতীয়ার্ধে আরেকবার বল জালে জড়ায়। তবে এর মধ্যে ব্যবধান কমানো দারুণ এক গোল করেন প্যারাগুয়ের ওমর অ্যালদারেত। বুক দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা বল নামিয়ে তিনি শট নেন ডি-বক্সের বেশ বাইরে থেকে। শেষদিকে উভয়পক্ষই গোল বাড়ানোর চেষ্টা করলেও, আর স্কোরশিটে কারও নাম ওঠেনি। উল্টো হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে যাওয়া প্যারাগুয়ের তিক্ততা বাড়িয়ে ৮৩তম মিনিটে লাল কার্ড দেখেন আন্দ্রেস কুবাস। সেলেসাও মিডফিল্ডার ডগলাস লুইজকে পেছন থেকে মারাত্মক ট্যাকলের শাস্তি হিসেবে আসে এটি। তবে শেষ মুহূর্তে ১০ জনের দলের বিপক্ষে আর কোনো সুযোগ নিতে পারেনি দরিভালের শিষ্যরা।

লা লিগায় জিরোনার হয়ে দারুণ মৌসুমের পর ব্রাজিলের হয়ে কোপায় প্রথম গোল পেয়ে গেলেন স্যাভিও
এর আগে ম্যাচের ১৪তম মিনিটেই প্যারাগুয়ে এগিয়ে যেতে পারত। তবে প্রতিপক্ষের জোরালো শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। এরপর দুই পক্ষের বক্সেই একের পর এক হানা সামলাতে হয় গোলরক্ষকদের। ব্রাজিলই প্রথম এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় ৩২তম মিনিটে। তাদের নেওয়া শট লাফিয়ে ফেরাতে গিয়ে প্যারাগুয়ে ফুটবলারের হাতে লাগে। পেনাল্টিতে দলকে লিড এনে দেওয়ার সুযোগ পেয়েও বাইরে মেরে বসেন পাকেতা।

তার সেই আক্ষেপ টিকলো তিন মিনিট। দারুণ দলীয় বোঝাপড়ায় ডেডলক ভেঙে ব্রাজিলকে প্রথম উৎসবের উপলক্ষ্য এনে দেন ভিনিসিয়ুস। রিয়াল স্ট্রাইকার জাতীয় দলে গোল করতে পারছেন না কেন, তা নিয়ে কম সমালোচনা সইতে হয়নি। তারই যেন জবাব আজ অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই গোল দিয়ে দিয়ে দিলেন তিনি। ভিনি নিজেই বল নিয়ে বক্সের দিকে এগিয়েছেন, এরপর রদ্রিগো-পাকেতার দারুণ এক টাচ থেকে আবার তার পায়ে আসে। প্রথমে গোলরক্ষকে বোকা বানিয়ে বলে একপাশে নিয়ে যান, এরপর তার ঠিকানা বানান জালে।

৪৩তম মিনিটে আসে দ্বিতীয় গোলটি। রদ্রিগো গোয়েসের নেওয়া শট ঠেকান প্যারাগুয়ে গোলরক্ষক, তবে পুরো নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি বল। ফলে। প্যারাগুয়ে ডিফেন্ডারের পা ছুঁয়ে ফাঁকায় থাকা স্যাভিও পেয়ে যান, আলতো টোকায় তিনি লিড দ্বিগুণ করেন। বিরতির আগেই দুপক্ষই হাতাহাতিতে জড়ায়। একটি করে হলুদ কার্ড দেখে দু’দলই। সেই উত্তেজনার পারদ উঁচুতে রেখেই যোগ করা সময়ে ফের ব্রাজিলের আক্রমণ। বল বানিয়ে গোলও দিয়ে ফেলেছিলেন রদ্রিগো। তবে গোলরক্ষকের বাধা পেয়ে আলতোভাবে বল পেছনে ঠেলে দিলে, দৌড়ে এসে ভিনি নিজের দ্বিতীয় ও ব্রাজিলের তৃতীয় গোল পূর্ণ করেন। যা পরে পাকেতার সফল পেনাল্টিতে চারে পরিণত হয়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)