মাশরুমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ডেস্ক:
‘ব্যাঙের ছাতা’ হিসেবে পরিচিত মাশরুম খেতে চান না অনেকেই, অথচ এটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। ‍মাশরুমে খাদ্য তালিকার অতি প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেল সহ পুষ্টিতে ভরপুর। এতে দেহের জন্য ক্ষতিকর খাদ্য উপাদান যেমন -ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেড নেই বললেই চলে।

মাশরুমে আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার অতি প্রয়োজনীয় উপাদান যেমন প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলে পরিপূর্ণ। পুষ্টির দিক বিচার করলে মাশরুম সবার সেরা। এছাড়া যেসব খাদ্য উপাদানের আধিক্য যেমন -ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেড আমাদেরকে জটিল ব্যাধির দিকে নিয়ে যায়, তা মাশরুমে নেই বললেই চলে।

এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যামাইনো অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এসব উপাদান ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধে ও ওজন কমাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। চলুন জেনে নিই মাশরুমের পুষ্টিগুণ এবং বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে।

মাশরুমের পুষ্টিগুণ

আমরা প্রতিদিন যেসব খাবার খাই মাশরুমের পুষ্টিগুণ সেগুলোর চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ায় এটি শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ সহ শরীরকে সুস্থ রাখতে খুবই সহায়ক। মাশরুমে মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় ৯টি এমাইনো এসিডের মধ্যে প্রত্যেকটিই বিদ্যমান। প্রোটিনে ভরপুর মাশরুমে কোন প্রকার ক্ষতিকর চর্বি না থাকায় নিয়মিত মাশরুম খেলে মেদ-ভূড়ি, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ, ইত্যাদি জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে প্রতি একশ গ্রাম মাশরুমে প্রোটিন ২৫-৩৫ গ্রাম, ভিটামিন ৫৭-৬০ গ্রাম ও ৫-৬ গ্রাম মিনারেল, শর্করা, উপকারী চর্বি ৪-৬ গ্রাম পাওয়া যায়। এতে আঁশের পরিমাণও খুবই সন্তোষজনক ও এর পরিমাণ প্রায় ১০-২৮%। এই পরিমাণটি অন্যান্য খাবারের তুলনায় অনেক বেশী। শুকনো মাশরুমে ৫৭-৬০% ভিটামিন ও মিনারেল থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকায় মাশরুম দেহকে সুরক্ষিত রাখতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে।

মাশরুমের উপকারিতা

১. মাশরুমে লো ক্যালোরি থাকায় যারা ওজন কমাতে চান তারা খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন।

২. পেশি বাড়াতে যারা বিভিন্ন ধরনের প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খোঁজেন, তাদের জন্য মাশরুম প্রোটিনের সেরা উৎস হতে পারে।

৩. মাশরুমে পেনিসিলিন থাকে, যা এক রকম অ্যান্টিবায়োটিক যেটি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

৪. মাশরুম ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে।

৫. ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক মাশরুম।

৬. হৃদ্‌যন্ত্র ভালো রাখতে সাহায্য করে।

৭. কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।

৮. মাশরুমে থাকা পুষ্টি উপাদান ক্যানসার ও টিউমার প্রতিরোধে বেশ সাহায্য করে।

৯. শিশুদের হাড় ও দাঁত ভালো রাখতে সাহায্য করে।

১০. অ্যানিমিয়া দূর করতে ভূমিকা রাখে মাশরুম। সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চার দিন মাশরুম খাদ্যতালিকায় থাকলে বেশ উপকারে আসে এক্ষেত্রে।

১১. মাশরুম শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

সম্পূরক খাদ্য হলেও অন্যান্য খাবারের সঙ্গে রান্না করলে এর স্বাদ বহুগুণে বেড়ে যায়। অনেক আগে থেকে ব্যবহার করে আসা মাশরুমের গুণাবলি বলে শেষ করার মতো নয়। তাই আসুন বেশী বেশী করে মাশরুম খাই এবং আমাদের শরীরকে করে তুলি রোগ প্রতিরোধ্য।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)