পাকিস্তানে তীব্র তাপপ্রবাহ, ছয় দিনে পাঁচ শতাধিক মৃত্যু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে করাচিসহ দক্ষিণ পাকিস্তানের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। দেশটিতে গত ছয়দিনে তীব্র তাপপ্রবাহ ও মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে ৫ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একদিনেই উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় দেড়শো জনের মরদেহ।
পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত দুই দিন করাচিসহ আশপাশের এলাকার তাপমাত্রা ৪১.৩ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে, অনুভূত তাপমাত্রা প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দেশটির ইধি (Edhi) অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা জানিয়েছে, তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাণহানির সংখ্যাও বেড়েছে। তারা করাচি শহরের মর্গে প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জনের লাশ নিয়ে আসছে।
ইধি সূত্র জানিয়েছে, গত ছয় দিনে তারা প্রায় ৫৬৮ টি মৃতদেহ মর্গে এনেছে। এরমধ্যে শুধু মঙ্গলবার একদিনে এনেছে ১৪১ জনের মরদেহ। প্রতিটি ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ ঠিক হিটস্ট্রোক কিনা, তা নিশ্চিত করতে পারেনি ইধি অ্যাম্বুলন্সে পরিষেবা।
পাকিস্তানের ডন পত্রিকার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শহরের রাস্তা থেকে জরুরি পরিষেবাগুলো গত তিনদিনে প্রায় ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। এগুলো হত্যাকাণ্ড নাকি হিটস্ট্রোকের শিকার তা নিশ্চিত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ সার্জন সুমাইয়া সৈয়দ জানিয়েছেন, তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। অনেকেই সন্দেহভাজন মাদকাসক্ত। তাই প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে উচ্চ তাপমাত্রার মধ্যেই করাচির বাসিন্দারা লোডশেডিংয়ে ভুগছে। ফলে তাদের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এতে বৃদ্ধ ও অসুস্থতা হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি।
হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শত শত লোক। করাচির সিভিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত রোববার থেকে বুধবারের মধ্যে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ২৬৭ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের প্রধান ডা. ইমরান সারওয়ার শেখ জানান, তাদের মধ্যে বারোজন মারা গেছে। তিনি বলেন, আমরা যাদেরকে হাসপাতালে আসতে দেখেছি তাদের বেশিরভাগই তাদের বয়স ৬০ বা ৭০ এর মতো। বেশির ভাগই বমি, ডায়রিয়া ও উচ্চ জ্বরের উপসর্গ নিয়ে আসছেন।
ডা. ইমরান বলেন, যারা হাসপাতালে আসছেন, তাদের অনেকেই শ্রমিক বা বাইরে কাজ করছিলেন। আমরা তাদের বলেছি যাতে তারা প্রচুর পানি পান করেন এবং এই উচ্চ তাপমাত্রায় হালকা পোশাক পরেন।