ঈদের দ্বিতীয় দিনেও নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির

ডেস্ক রিপোর্ট: ঈদের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীতে নিত্যপণ্যের বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সকল ধরনের পণ্য। ব্রয়লার মুরগি, সবজি ও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। তবে কাঁচা মরিচের দাম স্থিতিশীল আছে ৩০০ টাকায়। ঈদের ছুটির কারণে সরবরাহ কম থাকায় পণ্যের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন রাজধানীর খুচরা ব্যবসায়ীরা। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ সিন্ডিকেট আর বিক্রেতাদের খেয়াল খুশি মতো বাড়ছে পণ্যের দাম।মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকাল থেকে রাজধানীর রায়সাহেব বাজার, নয়াবাজার, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার ও কারওয়ান বাজারসহ একাধিক বাজার ঘুরে দেখা মেলে এমন চিত্রের।বাজারগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদের ছুটিতে বেশির ভাগ দোকান বন্ধ রয়েছে। কোরবানির দ্বিতীয় দিন বাজারগুলোতে কয়েকটি দোকান খোলা থাকলেও পণ্যের দাম বেশি চাচ্ছেন বিক্রেতারা।ব্রয়লার মুরগি ২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা ঈদের আগে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সোনালি মুরগি ৩৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দুদিন আগে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সোনালি ৩২০ টাকা এবং লেয়ার ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।সরবরাহ কম থাকায় বাজারে মুরগির দাম বেড়েছে বলে জানালেন শেওড়াপাড়া বাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. রাকিব। তিনি বলেন, ঈদের আগে কিছু মুরগি ছিল সেগুলোই বিক্রি করছি। আজকে দাম একটু বেশি হলেও কাল থেকে সরবরাহ বাড়বে, দামও কমে যাবে।এদিন রায়সাহেব বাজারে বাজার করতে আসা ইলিয়াস শেখ বলেন, কোরবানি দিতীয় দিন বাজারে অধিকাংশ দোকান বন্ধ থাকলেও কয়েকটি দোকান খোলা। তবে সব দোকানগুলোতে নিত্য পণ্যের দাম কিছুটা বাড়তি। কোরবানির আগে থেকেই বাজার চলা থাকায় বাড়তি দাম নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে এখন বিক্রেতারা।শুধু মুরগি নয় সবজির দামও কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। সরবরাহ কম থাকায় দাম কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন মিরপুরের সবজি বিক্রেতা দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে দুই-চারটি দোকান খোলা রয়েছে। তাও সব মালামাল পাওয়া যাচ্ছে না। তবে আগামীকাল থেকে সরবরাহ বাড়বে এবং দামও কমে আসবে বলে জানান সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা আল-আমীন ।
বাজারগুলোতে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ১০০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, পেঁপে প্রতি কেজি ৬০ টাকা, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ৭০ টাকা এবং শশা ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাকা টমেটো প্রকার ভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা এবং গাজর ৮০ টাকা। কাঁচা মরিচ ২৮০- ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
নয়াবাজারের সবজি বিক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রতিদিনই কমবেশি ওঠানামা করে সবজির দাম। কোরবানির ঈদ বা পূজার ওপর নির্ভর করে না সবজির দাম। আমরা খুচরা ব্যবসায়ী আমরা পাইকারি যে দামে ক্রয় করি। তার চেয়ে ৫-১০ টাকা লাভে সবজি বিক্রি করি। মনে হয় না এটা অন্যায় । তবে কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজার বেশ চড়া। এসব বাজারে লেবুর হালি ১০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতা কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৯০ টাকা আর আলু ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।রাজধানীর সেগুনবাগিচা কাঁচা বাজারে মরিচ কিনছিলেন কামরুল ইসলাম।তিনি কালবেলাকে বলেন, মজার ব্যাপার হচ্ছে দেশে উৎপাদিত কাঁচা মরিচের দাম ৩০০ টাকা কেজি। আবার চায়না থেকে আমদানি করা আঁদার দামও ৩০০ টাকা। দেশে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও কেন বাড়তি কাঁচা মরিচের দাম। এই বিষয়ে সরকারের কোন সংস্থা কাজ করছে বা বাজারে অভিযান করে কারণ খুঁজছে বলতে পারেন। আমরা সাধারণ মানুষ। ব্যবসায়ীরা যে দামে পণ্য বিক্রি করবে আমরা তা কিনতে বাধ্য। গত সপ্তাহে পেঁয়াজ ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকায়, হাঁসের ডিম ২০০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)