কাঁটা বাঁশ অর্শরোগ ও বাতব্যথায় উপকারী

স্বাস্থ্য ডেস্ক:
সবচেয়ে লম্বা ঘাস, দ্রুত বর্ধনশীল চিরহরিৎ উদ্ভিদ হলো বাঁশ। বাঁশ মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কাজে লাগে। কাঁটা বাঁশ একটি গ্রামীণ বাঁশ ইংরেজিতে নাম Giant thorny bambo। এর বৈজ্ঞানিক নাম Bambusa bambos।

কাঁটা বাঁশ একটি লম্বা, উজ্জ্বল-সবুজ রঙের কাঁটাযুক্ত বাঁশের প্রজাতি, যা ঝোপঝাড়ের মধ্যে জন্মায় যার মধ্যে প্রচুর সংখ্যক ভারী শাখাযুক্ত ঘন গুচ্ছাকার যুক্তাক্ষ বাঁশ। এর কাঁটাযুক্ত কঞ্চি কান্ডের মাঝখান থেকে বের হয়ে অনেকটা নিচের দিকে ঝুলে থাকে। তরুণ বিটপ গাঢ় বেগুনি লাল, স্বল্প সংখ্যক সাদা রেখা যুক্ত, রোমশ বিহীন, ফলক ছাড়া, শীর্ষ ভোঁতা। পাতা দীর্ঘায়িত এবং সবুজ। এর কান্ড ফ্যাকাশে বা গাঢ় সবুজ ১০-৩৫ মিটার উঁচু, ব্যাস ২.৫- ৯.০ সেমি.।

কাঁটা বাঁশের কাণ্ড সোজা নয়, কিন্তু শক্ত এবং বাঁকা মেরুদণ্ড দিয়ে সজ্জিত। এগুলো উজ্জ্বল সবুজ, শুকানোর সময় বাদামী সবুজ হয়ে যায় এবং কচি অঙ্কুরগুলো গভীর বেগুনি হয়। গোড়া থেকে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে পড়ে। বায়বীয় শিকড় উপরে কয়েকটি নোড পর্যন্ত পৌঁছায়।

কাঁটা বাঁশ সাধারণত বাংলাদেশসহ উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলের বনে প্রাকৃতিকভাবে বৃদ্ধি পায়। কাঁটা বাঁশ এমন একটি উদ্ভিদ যেকেউ ভাবতে পারেন যে এর কোনো ধরনের যত্নের প্রয়োজন নেই, কিন্তু যে এলাকা যত ঠান্ডা হবে, এটি তত ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে।

তবে যেকোনো ক্ষেত্রে, এটি সরাসরি সূর্যের সংস্পর্শে থাকা জায়গায় স্থাপন করা প্রয়োজন, যাতে এটি কম বা বেশি সোজা হতে পারে এবং আঁকাবাঁকা না হয়। অনেক্ষেত্রেই কাঁটা বাঁশ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, প্রধানত সেতু তৈরির জন্য এবং মইয়ের জন্য। পাতাগুলো খড়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কাঁটা বাঁশের রয়েছে নানান ঔষধি গুণাগুণ।

কাঁটা বাঁশের ঔষধিগুণ

(১) কাঁটা বাঁশের কচি পাতা বেটে গরম করে প্রলেপ দিলে গেটেবাতের ব্যথা ও ফোলা কমে যায়।

(২) কাঁটা বাঁশের পাতা সিদ্ধ করে এই ক্বাথ খাওয়ালে অর্শ রোগ ভালো হয়।

(৩) কাঁটা বাঁশের কচি পাতা বেটে গরম করে প্রলেপ দিলে ফোঁড়া পেকে ফেটে যায় এবং ক্ষত দ্রুত ভালো হয়।

(৪) কাঁটা বাঁশের পাতার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে কাশি দ্রুত ভালো হয়।

(৫) কাঁটা বাঁশের গোড়া পুড়িয়ে ছাই করে চামেলী বা তিল তৈলের সঙ্গে মিশিয়ে টাকে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এই কয়লা দিয়ে দাঁত মাজলে মাড়ি ভালো থাকে, দাঁত হয় চকচকে।

(৬) কাঁটা বাঁশের নীলর ধোঁয়া খেলে হাঁপানি কমে।

(৭) ভঙ্গুর নখ বা ভঙ্গুর চুলের ক্ষেত্রে, এমনকি ক্লান্তি বা পিঠব্যথার ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয় এই উদ্ভিদ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)