‘পরীক্ষা ছাড়াই’ পাস ১৭ শিক্ষার্থী
ডেস্ক নিউজ:
প্রভাব খাটিয়ে বোর্ড কর্মকর্তার ছেলেকে জিপিএ-৫ পাইয়ে দেওয়া কিংবা নম্বর ফর্দ ‘গায়েব’ হয়ে যাওয়া; এসব ঘটনার পর ‘পরীক্ষা ছাড়াই’ দুই শিক্ষার্থীকে জিপিএ-৫ পাইয়ে দিয়ে নতুন করে সমালোচনার জন্ম দেয় চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। আর সেখান থেকেই এবার যেন কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বের হওয়ার মতো করে বেরিয়ে এসেছে পরীক্ষায় না বসেও আরো ১৫ শিক্ষার্থীর পাস করে যাওয়ার তথ্য।
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে অংশ না নিয়েও পাস করেছেন তারা। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর সবার ফলাফল বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ।
তবে কীভাবে হলো এমন ভুল? নাকি পরিকল্পিত পাস?- দুটিই এখন প্রশ্ন শিক্ষকদের।
সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে কথা হয় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আইসিটি পরীক্ষা না দিয়েও দুই শিক্ষার্থীর জিপিএ-৫ পাওয়ার অভিযোগ উঠে সম্প্রতি। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গিয়ে আরো ১৫ জনের তথ্য বেরিয়ে আসে। সবার ফলাফল বাতিল করা হয়েছে। এটি ভুল নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে, বা কীভাবে এটি হয়েছে; সবকিছু তদন্তে বেরিয়ে আসবে। শিগগিরই তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
আইসিটি পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও জিপিএ-৫ পাওয়া দুজন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের তথ্য খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে আসে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের আরো ১৫ শিক্ষার্থীর নাম, যারা পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও করেছেন পাস।
মাধ্যমিকে আইসিটি বিষয়ে নৈর্ব্যক্তিক-২৫ ও ব্যবহারিক-২৫ মিলিয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হয়ে থাকে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেই পরীক্ষায় অংশ নেননি এসব শিক্ষার্থীর কেউই। তবে গত ১২ জুন প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে পাস করেছেন সবাই।
নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় অংশ না নিলে ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর কেন্দ্র থেকে পাঠানোর নিয়ম নেই বলে জানান বোর্ডের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম। ফলে ১৭ শিক্ষার্থী যে কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিয়েছেন, সেসব কেন্দ্রের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবে তদন্ত কমিটি- উল্লেখ করেন বোর্ড চেয়ারম্যান।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার এক হাজার ১২৫টি বিদ্যালয় থেকে মোট পরীক্ষার্থী ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার ৭৫৩ জন। এরমধ্যে পরীক্ষায় অংশ নেয় এক লাখ ৪৫ হাজার ২৪ জন। পাস করে এক লাখ ২০ হাজার ৮৭ জন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা শুরু হয়। তত্ত্বীয় অংশ শেষ হয় ১২ মার্চ। ব্যবহারিক শেষ হয় ২৭ মার্চ। মোট ২১৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এবার শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছে এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৪টি।