জমজমাট আয়োজন এবার ঈদ নাটকে
বিনোদন ডেস্ক : টেলিভিশন ও ইউটিউব চ্যানেল মিলিয়ে এই ঈদেও প্রচারিত হবে কয়েকশ’ নাটক ও টেলিছবি। তবে এর মধ্যে একক নাটকের আধিপত্য বেশি। অন্যদিকে গত ঈদে ৬০০ নাটক প্রচার হলেও আলোচনার টেবিলে টিকেছে হাতেগোনা কয়েকটি নাটক। এই ঈদেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।গত বছরের নভেম্বর থেকেই এই ঈদের নাটক, টেলিফিল্ম, ধারাবাহিক নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। অনেক টেলিভিশন চ্যানেল, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ঈদের অর্ধেক কাজই সম্পন্ন করেছে গত বছরেই! নির্বাচন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছাড়াও খরচ কমাতেই এত আগে কাজ শুরু করা হয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ঈদের নাটকে স্বাভাবিকভাবেই বাজেট বেড়ে যায়। কখনো কখনো দুই লাখ টাকার কাজ চার লাখে গিয়েও দাঁড়ায়। ঈদের অনেক আগে কাজ করানোর অন্যতম কারণ এই বাজেট। তাছাড়া ঈদ যতই ঘনিয়ে আসে, ততই চিত্রগ্রাহক, রূপসজ্জাকারী, লাইট ক্রু, প্রোডাকশন বয় থেকে শুরু করে সবাই পারিশ্রমিক বেশি দাবি করেন।গত কয়েক বছর ছোটপর্দার ঈদ আয়োজন মানেই ছিল মোশাররফ করিমের নাটক। সর্বাধিক নাটকের অভিনেতার খেতাবটি ছিল তারই দখলে। চ্যানেলে চ্যানেলে চোখ রাখলেই তাকে পাওয়া যেত। ধীরে ধীরে এ চিত্র হারাতে বসেছে। তিনি মনোযোগ বাড়াচ্ছেন ওটিটি ও সিনেমায়। তেমনি ছোটপর্দায় প্রায় অনুপস্থিত চঞ্চল চৌধুরী। জিয়াউল হক অপূর্ব, আফরান নিশোদের ঈদ নাটক নিয়ে ব্যস্ততা নেই! তারা কি নাটক থেকে একেবারেই সরে যাচ্ছেন?এ বিষয়ে জিয়াউল হক অপূর্ব বলেন, ‘টিভি নাটক দিয়েই তো দর্শক আমাকে চিনেছে। নাটক থেকে দূরে থাকা অসম্ভব। তবে এটি সত্য, আগের চেয়ে নাটক একটু কম করছি। চেষ্টা করছি একটু বড় পরিসরে ভালো কিছু উপহার দেওয়ার। একটু সময় নিয়ে ভালো গল্প এবং বড় আয়োজনে দর্শকদের নতুন কিছু উপহার দেওয়ার চেষ্টা করছি।গত দুই বছর নাটক থেকে দূরে মেহজাবীন চৌধুরী। ঈদেও দেখা যায়নি তাকে নতুন নাটকে। অবশ্য মাঝে ‘অনন্যা’ নামে একটি মাত্র নাটকে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এ ব্যাপারে মেহজাবীন বলেন, ‘গত দুই বছর ঈদের নাটকে কাজ করা হচ্ছে না। যদিও গত দুই বছরে ঈদে পুরোনো কিছু নাটক চলেছে। তারপরও নতুন নাটকের জন্য দর্শকের অনেক অনুরোধ থাকে। কিন্তু নিজেকে নতুন উদ্যমে উপস্থাপন করা জরুরি।নতুনদের হাতে কাজ বেশি ঈদ উপলক্ষ্যে পাঁচ শতাধিক নাটক প্রচারিত হবে বলে জানায় টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টেলিপ্যাব)। এবারও সময়ের জনপ্রিয় তরুণ তারকাদের নিয়েই সাজানো হয়েছে ঈদ আয়োজন। অভিনেতাদের মধ্যে রয়েছেন জোভান আহমেদ, নিলয় আলমগীর, ইরফান সাজ্জাদ, খাইরুল বাসার, মুশফিক আর ফারহান, তৌসিফ মাহবুব, আরশ খান প্রমুখ। অভিনেত্রীদের মধ্যে তানজিন তিশা, সাফা কবির, সাবিলা নূর, সালহা খানম নাদিয়া, হিমি, সামিরা খান মাহি, কেয়া পায়েল, তটিনী, নীহা, সাদিয়া আয়মান, তানিয়া বৃষ্টিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন ঈদের নাটক নিয়ে। এবার ১৩/১৫টি নাটকে দেখা যাবে সামিরা খান মাহিকে।
গত দুই-তিন বছর ধরেই নাটকে প্রেম, পরিবার ও মানবিক গল্পের প্রাধান্যই বেশি দেখা যাচ্ছে। এবারও সেই চিত্রই দেখা যাবে। পাশাপাশি কমেডি ঘরানার নাটকও দেখা যাবে। ইউটিউবের পাশাপাশি প্রতিটি নাটক থেকে ফেসবুকের জন্য ৭/৮টা ‘স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিও প্যাকেজ’ প্রচারের উদ্দেশ্যও থাকে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের। এসব ভিডিওগুলো যত ইমোশনাল হয়, মানুষ ততই বেশি দেখেন। তাই বাস্তব ঘরানার নির্মাণে সবাই বেশি ঝুঁকছেন। নির্মাতাদের মধ্যে সকাল আহমেদ, শিহাব শাহীন, মিজানুর রহমান আরিয়ান, তপু খান, ভিকি জাহেদ, মাবরুর রশিদ বান্নাহ, রাফাত মজুমদার, শহীদ উন নবী, জিয়াউদ্দিন আলম, আবু হায়াত মাহমুদ, অনন্য ইমন, সানজিদ খান প্রিন্স, মইদুল রাকিবরা হাজির হবেন নাটকের পসরা সাজিয়ে।