নলতায় ভুল চিকিৎসায় গৃহবধুর মৃত্যু

হাফিজুর রহমান: হাসপাতালে অনভিজ্ঞ ডাক্তার, নার্স কর্তৃক ভুল চিকিৎসা, অবহেলা ও রক্তশূন্যতায় হাবিবা বেগম(১৯) নামে এক গৃহবধূ হার্ট অ্যাটাক করে মারা যাওয়ার ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (২৯ মে) সকাল ৮ টার সময় সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ডায়াবেটিক এন্ড জেনারেল হাসপাতাল লিমিটেডে ঘটনাটি ঘটে । নিহত গৃহবধূ ভাড়া সিমলা ইউনিয়নের বাগবাটি গ্রামের এশার আলী সরদারের কন্যা এবং নলতা কদমতলা গ্রামের সুমনের স্ত্রী। গৃহবধূর স্বামী সুমন সাংবাদিকদের জানান, তার স্ত্রী দীর্ঘদিন যাবত রক্ত শূন্যতা ও লিভারে পানি জমা কে কেন্দ্র করে বুক যন্ত্রণায় ভুগছিল। বিষয়টি নিয়ে তারা কালিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করে সেখানে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা না পেয়ে নলতা ডায়াবেটিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভালো চিকিৎসার প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে। এরপর গত ২৮ মে মঙ্গলবার নলতা ডাইবেটিক হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স না থাকায় ভুল চিকিৎসায় রাত্রে রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটলে সকালে দায় এড়াতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেয়। উপায়ান্তর না পেয়ে রোগীর স্বজনরা মৃত হাবিবা কে দ্রুত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে আধাঘন্টা আগে মারা গেছে বলে জানায়। পরে বিষয়টি নিয়ে পুলিশি ঝামেলা এড়াতে দ্রুত রোগীর স্বজনদের মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ এবং কাটা ছাড়ার ভয় দেখিয়ে দ্রুত লাশ দাফন সম্পন্ন করে।
এ বিষয়ে নলতা ডায়াবেটিকস জেনারেল হাসপাতাল লিমিটেডে গেলে কোন ডাক্তারকে না পাওয়া গেলেও হাসপাতালের একজন সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন জানান, এই রোগী সম্বন্ধে তার কিছু জানা নাই। হাসপাতালের মালিক সম্পর্কে জানতে চাইলে মালিক মিলন ঝিনাইদহ আছেন বলে জানান।
কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল কবিরের নিকট জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি সাতক্ষীরা জেলার সিভিল সার্জন এর সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
এদিকে কালিগঞ্জ উপজেলা জুড়ে ব্যাঙের ছাতার মত অনুমোদন বিহীন ডাক্তার, নার্স, প্যাথলজিস্ট ছাড়া অসংখ্য ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। এই সমস্ত ক্লিনিকে ডাক্তার নার্স না থাকায় প্রতিনিয়ত রোগীর মৃত্যু হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ দিলেও কোন কাজ হয় না সিভিল সার্জন অফিসের কর্তাদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জিম্মি করে রাখায় অভিযোগের কোন সুরাও হয় না। এই অবৈধ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো চালাতে মাসোহারা দিয়ে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের বড় বাবুদের ম্যানেজ করে চলে আসলেও বিষয়টি দেখার কেউ নাই। মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রীর নির্দেশনা অপেক্ষা করে উপজেলা জুড়ে অবৈধ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর ছড়া ছড়ি থাকলেও স্বাস্থ্য প্রশাসন সাপ লুডু খেলার মত দেখেও না দেখার ভান করে অভিযান থেকে রেহাই দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)