জলপাই ফল ও পাতার গুণাগুন
স্বাস্থ্য ডেস্ক:
জলপাই ফলকে আমরা সবাই কমবেশি চিনি। জলপাই (Jalpai) একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় টক ফল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Elaeocarpus serratus। এটি সিলন অলিভ (Ceylon olive) নামেও পরিচিত।
ভারতীয় উপমহাদেশ, বাংলাদেশ, ইন্দোচীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে জলপাই ফল উৎপাদিত হয়। জলপাই গাছ মাঝারি আকারের, ১০ থেকে ১২ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। শীতকালে পাতা ঝরে পড়ে, ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে নতুন পাতা আসে। সেই সঙ্গে আসে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাদা ফুল।
জলপাই কাঁচা ও পাকা দুই অবস্থায়ই খাওয়া যায়। তবে কাঁচা জলপাই খেতে বেশ টক লাগে। জলপাইয়ের আচার করে বেশ উপাদেয়। জলপাই ফলের দামের তুলনায় এর তেলের দাম আকাশচুম্বী। জলপাই তেল বা Olive Oil এ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে, যেগুলো আমাদের শরীরকে সুস্থ এবং সুন্দর রাখে।
খাবারে জলপাইয়ের তেল ব্যাবহারের ফলে শরীরের ব্যাড ক্লোষ্টোরেল এবং গুড ক্লোষ্টোরেল নিয়ন্ত্রণ হয়। জলপাইয়ের তেলের গুণের কথা তো আমরা কমবেশি সবাই জানি। তবে জলপাই পাতারও গুণ আছে তা হয়তো অনেকেই জানেন না।
জলপাইয়ের পাতার মধ্যে অলিওরোপিয়েন নামক এক ধরনের ফিটোকেমিক্যাল পাওয়া যায় যা বিভিন্ন রোগ নিরাময় থেকে শুরু করে নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যা দূর করে।
জলপাই পাতার স্বাস্থ্য উপকারীতা
(১) জলপাইয়ের পাতা রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ‘টাইপ টু’ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে। জলপাইয়ের পাতা শরীরের স্বাস্থ্যকর টিস্যুগুলোকে সুরক্ষা দেয়।
(২) জলপাইয়ের পাতার নির্যাস স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
(৩) জলপাইয়ের পাতার মধ্যে থাকা অলিওরোপিয়েন উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। এটি রক্তনালিকে শিথিল করতে সাহায্য করে। রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন কমায়। এ ছাড়া করনারি আর্টারিতে রক্ত চলাচল ঠিক রাখতে কাজ করে।
(৪) জলপাইয়ের পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাকেটিরিয়াল উপাদান। এটি বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে।
(৫) এই পাতা হাড় তৈরিকারী কোষকে তৈরি হতে উদ্দীপ্ত করে।
(৬) জলপাইয়ের পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটোরি উপাদান। এটি মস্তিষ্ককে সুরক্ষা দেয়। কেন্দ্রীয় স্নায়ু পদ্ধতিকে স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে সুরক্ষিত রাখে। এ ছাড়া এটি প্রবীণ বয়সের পারকিনসন এবং স্মৃতিভ্রম রোগও প্রতিরোধ করে।