প্লে-অফে বেঙ্গালুরু
স্পোর্টস ডেস্ক:
জেতার জন্য শেষ ওভারে দরকার ৩৫ রান। প্লে-অফে যেতে হলে ১৭ রানই যথেষ্ট ছিল চেন্নাই সুপার কিংসের। যশ দয়ালের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। তবে দ্বিতীয় বলেই ধোনিকে ফিরিয়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন দয়াল।
গত আসরে শেষ দুই বলে ১০ রান নিয়ে চেন্নাইকে শিরোপা জিতিয়েছিলেন জাদেজা। আজও একই সমীকরণ ছিল তার কাছে। কিন্তু বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি তিনি। পরপর দুই বলেই ডট দিয়ে চেন্নাইকে ডোবালেন হারের বেদনায়, আর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ভাসল প্লে-অফে ওঠার আনন্দে।
বিরাট কোহলিদের একটা সময় বাতিলের খাতায় তাদের ফেলে দিয়েছিল অনেকেই। কিন্তু টানা ছয় ম্যাচ জিতে আসরের শেষ দল হিসেবে সেরা চারে নাম লেখালেন তারা। যা পূর্ণতা পায় আজ চেন্নাইকে ২৭ রানে হারানোর ফলে।
বেঙ্গালুরুর আকাশে বৃষ্টি নেমেছে ঠিকই, কিন্তু খেলায় সেভাবে জটিলতা তৈরি হলো না। মাঠে গড়াল সেই ৪০ ওভারই। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ২১৮ রান জমা করে বেঙ্গালুরু। ফাফ দু প্লেসি ও বিরাট কোহলির উদ্বোধনী জুটি থেকেই আসে ৭৮ রান। কোহলি ফিফটি করতে না পারলেও (৪৭) পেরেছেন দু প্লেসি। কিন্তু দারুণ ছন্দে থেকেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক। ৩৯ বলে তিনটি করে চার ও ছক্কায় ৫৪ রান করেন তিনি।
পরে রজত পাতিদার ও ক্যামেরন গ্রিন যোগ করেন ৭১ রানের জুটি। ২৩ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৪১ রানে থামেন পাতিদার। তবে গ্রিন অপরাজিত থাকেন শেষ পর্যন্ত। ১৭ বলে তিনটি করে চার ও ছক্কায় ৩৮ রান করেন এই অজি অলরাউন্ডার। পাতিদারের পর ক্যামিও ইনিংস উপহার দেন দীনেশ কার্তিক (১৪) ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (১৬)।
তাড়া করতে নেমে প্রথম বলেই অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়কে হারায় চেন্নাই। থিতু হতে পারেননি ড্যারিল মিচেলও। এরপর অজিঙ্কা রাহানেকে নিয়ে হাল ধরেন রাচিন রবীন্দ্র। প্রথমবার ফিফটি পাওয়া রবীন্দ্র দারুণ কিছুরই আশা জোগাচ্ছিলেন। কিন্তু ৩৭ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৬১ রানে ফেরেন এই কিউই ওপেনার। ১৪ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে আবারও বিপাকে পড়ে চেন্নাই। এবার ম্যাচের মোমেন্টাম বদলানোর দায়িত্ব নেন রবীন্দ্র জাদেজা। ধোনিকে নিয়ে চেন্নাইকে প্লে-অফে নেওয়ার মিশনে নামেন তিনি। তার ব্যাটিং রীতিমত ভড়কে দেয় বেঙ্গালুরুকে। তাই শেষ ওভারের আগপর্যন্তও ম্যাচ ঝুলছিল সমান পাল্লায়।
চেন্নাইয়ের জন্য কোনোমতে ১৮ রান বা এর কমে হারলেই প্লে-অফ নিশ্চিত হয়ে যেত। কেননা ১৪ পয়েন্ট আগেই অর্জন করে রেখেছে তারা। যে কারণে রানরেটের মারপ্যাচে সমীকরণ ছিল ভিন্ন। বেঙ্গালুরুর অবশ্য জয়ের পাশাপাশি রানরেটের দিকেও খেয়াল রাখতে হয়েছে। শেষ ওভারের আগে চেন্নাই জয় থেকে ৩৫ রান দূরে থাকলেও আতঙ্ক ছিল তাদের মনে। দু প্লেসি বল তুলে দেন যশ দয়ালের হাতে। বাঁহাতি এই পেসারকেই গত আসরে শেষ ওভারে ৫ ছক্কা হাঁকিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিয়েছিলেন রিংকু সিং।
এবারও প্রথম বলে ছক্কা হজম করেন দয়াল। কিন্তু পরের পাঁচটি বল সুনিপুণভাবে করে তিনি দেখালেন শেষ ওভারে ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা তারও আছে। আর জাদেজা পুড়লেন আফসোসে। ২২ বলে ৪২ রানের তার অপরাজিত ইনিংসটি জলেই গেল। ধোনির ১৩ বলে ২৫ রানের ইনিংসটিও কাজে এলো না শেষ পর্যন্ত।
১৪ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে চারে থেকে প্লে-অফ নিশ্চিত করল বেঙ্গালুরু। অথচ প্রথম আট ম্যাচে তাদের জয় ছিল কেবল একটি। এরপর যা হলো তা ফিরে আসার দারুণ এক গল্প। যা হার মানিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইকেও। সমান পয়েন্ট নিয়েও শুধুমাত্র রানরেটে (০.০৬৭ ব্যবধানে) পিছিয়ে থাকার কারণে প্লে-অফে খেলা হচ্ছে না তাদের। ইনিংস শেষ করে ৭ উইকেটে ১৯১ রান নিয়ে।