ভোমরা স্থলবন্দরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারীদের কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক
নিজস্ব প্রতিবেদক: ভোমরা স্থলবন্দরকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। জেলার যেসকল প্রতিষ্ঠান নির্বাচন ছাড়াই চলছে সেসকল প্রতিষ্ঠানে অবিলম্বে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে দিতে হবে। রোববার (১২ মে) সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কেন্দ্রে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
এছাড়াও সাতক্ষীরা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় চলতি আম মৌসুমে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নিরাপদ আম সংগ্রহ ও পরিবহনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া, শহরের প্রাণ সায়রের খালকে প্রবাহমান করতে সুইস গেটের সাথে সংযুক্ত করা, শহরে যানজট নিরসনে দিনেরবেলায় ট্রাক চলাচল বন্ধের বিষয়টি জোর দেওয়া, শহরে যানজট সৃষ্টিকারী অনিবন্ধিত ইজিবাইকগুলো শহরের বাহিরে চলাচলের জন্য নির্দেশ দেওয়া, জেলার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের উপর নজর রাখা যাতে তারা মাদকে আসক্তি না হয়, নারীদের ইভটিজিংকারী বখাটেদের আইনের আওতায় আনাসহ জেলার উন্নয়ন কর্মকাÐে সকলে সহযোগিতার আহবান জানান বক্তারা।
সাতক্ষীরা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে ফজলুল হক বলেন, প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন যেভাবে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে সেজন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং বাকি ধাপের উপজেলা নির্বাচন গুলোও একইভাবে সম্পন্ন করার আহবান জানান।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ভোমরা স্থলবন্দরে অচলাবস্থা সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। কোনভাবে সেটা করতে দেওয়া হবে না। তাদেরকে কঠোরভাবে দমন করা হবে। শহরের ভিতরের রাস্তাগুলো প্রশস্থ করতে যেয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেদিকটা আমলে নিতে হবে। ঈদের আগে তাদের উচ্ছেদ না করে তাদের কিছুটা সময় দেওয়া।
সাতক্ষীরা সদর আসনের মো. আশরাফুজ্জামান আশু এমপি বলেন, চলমান বাকি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনগুলো সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হবে। জেলার রাস্তাগুলোর স্থায়ীত্ব করতে ট্রাকে অতিরিক্ত লোড নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।সেজন্য ট্রাফিক বিভাগকে আরো তৎপর হতে হবে।জেলার যেসকল প্রতিষ্ঠান নির্বাচন ছাড়াই চলছে সেসকল প্রতিষ্ঠানে অবিলম্বে নির্বাচনের দিনক্ষণ টিক করে দিতে হবে।ভোমরা স্থলবন্দরকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।সাতক্ষীরার একমাত্র দরবার হলটিকে সংরক্ষণ করতে হবে। কোন ভাবেই সেটিকে শপিংমল তৈরি করতে দেওয়া হবে না। যশোরের পুরাতন স্থাপনা টাউন হল, খুলনার হাদিস পার্ক, সেরকমই সাতক্ষীরার পুরাতন স্থাপনা দরবার হলটিকে টিকিয়ে রাখতে হবে।
সাতক্ষীরা-০১ আসেনর ফিরোজ আহমেদ স্বপন এমপি বলেন, সাতক্ষীরাকে একটি দৃষ্টি-নন্দন জেলা শহরে রুপান্তর করতে সকলের সহযোগিতা করতে হবে। সাতক্ষীরা জেলা শহরে প্রবেশ পথ কদমতলা-আলিপুর চেকপোস্ট, বিনেরপোতা, আমতলা মোড়, ধুলিহর-পুরাতন সাতক্ষীরা বাজার পর্যন্ত রাস্তাগুলোর মাঝখানে ডিভাইডার দেয়া। যার মাঝে বিভিন্ন ফল-ফুলের লাগানো। জেলার বেতনা, মরিচ্চাপ, কপোতাক্ষ নদীগুলো বাঁচাতে টিআরএম বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকার নদী বাঁচাতে খনন করছেন যেনতেন ড্রেজার মেশিন দিয়ে। নদী খননের ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীগুলো খনন করতে হবে।যেনতেন ড্রেজার মিশন দিয়ে নয়। তাহলে নদীগুলোর আবার তার হারানো যৌবন ফিরে পাবে।সরকারের গ্রাম হবে শহরের আওতায় গ্রামীণ সড়কগুলোকে টেকসই করতে হবে।সেজন্য আমাদের বাস্তবমূখী কাজ করতে হবে।ভোমরা স্থলবন্দরে অস্থিতিসৃষ্টি কারী যেই হোক তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।তাছাড়া স্থলবন্দরটির জিরো পয়েন্টে চাঁদাবাজি অবিলম্বে বন্ধ করতে প্রশাসনকে কঠোর থেকে কঠোর হওয়ার আহবান জানান।
সাতক্ষীরা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এমপি লায়লা পারভীন সেঁজুতি বলেন, সাতক্ষীরা জেলাকে ব্যান্ডিং করতে প্রবেশ পথে একটি দৃষ্টি-নন্দন গেট তৈরী করতে হবে।পৌর শহরের রাস্তা গুলোর যে বেহাল দশা তাথেকে রেহাই পেতে অবিলম্বে সংস্কার করার আহবান জানান।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সজীব খান বলেন, জেলা শহরের যানজট নিরসন ট্রাফিক পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করছে। যানজট কমাতে শহরের মধ্যে অবস্থিত জেলা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটাকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া জন্য জোর তাগিদ দেন।জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সাতক্ষীরার আইন শৃঙ্খলার সার্বিক বিষয় নিয়ে আরও বক্তব্য দেন, জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ আল মোন্তাসিম বিল্লাহ, সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ বাসুদেব কুমার বসু, পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান, ৩৩ বিজিবি’র মাসুদ, জেলা তথ্য অফিসার মো.জাহারুল ইসলাম, সকল উপজেলার নির্বাহী অফিসার, র্যাব, জেলা কারাগার, পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর, জেলা আনসার ব্যাটালিয়ন, জেলা পুলিশিং কমিটি, জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতে গত এপ্রিল মাসের মিটিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর পুর্ণ্যমুল্যায়ন মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।