পরীক্ষামূলক চালু হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
ডেস্ক রিপোর্ট:রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আরএনপিপি) নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।তারা জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের কাজ শেষ পর্যায়ে। ২০২৫ সালে প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রস্তুতিমূলক সব কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে এগিয়ে চলেছে। পরে দ্বিতীয় ইউনিটটি উৎপাদনে যাবে পরের বছর ২০২৬ সালে।সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, এ প্রকল্পটি চালু করার সময় যে বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে, তা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড থেকে নেয়া হবে। প্রকল্প এলাকায় এই বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তুতির কাজও এগিয়ে চলছে। এর প্রথম অংশের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। অক্টোবরের আগে বাকি কাজও শেষ হবে।চূড়ান্তভাবে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার আগে আগামী অক্টোবরে কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার দিকে যাচ্ছি। অক্টোবরে প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে।রাশিয়ার প্রযুক্তি ও আর্থিক সহযোগিতায় পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে নির্মিত হচ্ছে দেশে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে দেশটির রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশন (রোসাটম)। এই প্রকল্পে রাশিয়ার উদ্ভাবিত থ্রিজি(+) ভিভিইআর ১২০০ রিয়্যাক্টর স্থাপন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের জ্বালানিও সরবরাহ করবে রাশিয়া। গত বছর অক্টোবরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়াম বুঝে পেয়েছে বাংলাদেশ।এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনার জন্য বিশেষজ্ঞ তৈরি ও তাদের প্রশিক্ষণের কাজও করছে রাশিয়া। প্রকল্পটি চালুর পর ৫-৬ বছর বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে রাশিয়ার বিশেষজ্ঞরাই এটি পরিচালনা করবেন। পরে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনার দায়িত্ব বুঝে নেবেন বলে জানিয়েছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।এরই মধ্যে রাশিয়া থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আরো প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ তৈরির জন্য রাশিয়ায় প্রশিক্ষণে পাঠানো হচ্ছে। রাশিয়া থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর পর এর পরিচালনার কাজে যুক্ত হবেন।এ বিষয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, আমাদের টিম ওয়ার্ক ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। নির্মাণ কাজ থেকে শুরু করে জ্বালানি আসা পর্যন্ত সব কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আরো বিশেষজ্ঞ তৈরির জন্য লোক পাঠানো হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর পর তারা কাজ করবেন।রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুইটি ইউনিটের প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট অর্থাৎ দুইটি ইউনিট থেকে মোট দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।এদিকে, প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালুর পর এই একই স্থানেই দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। দ্বিতীয় প্রকল্পটিও বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিচ্ছে রাশিয়া। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে রোসটামের প্রধানের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাশিয়ার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সরকারের সংশ্লিষ্টদের আলোচনাও শুরু হয়েছে।