শ্যামনগরে প্রচন্ড তাপদাহে সুপেয় পানির সংকটে জনজীবন অতিষ্ঠ
মোঃ আলফাত হোসেন: দেশের দক্ষিণ পশ্চিমা অঞ্চল সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবন একবারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে।
সর্বত্র প্রচন্ড খরতাপ ও ভ্যাপসা গরমে জনজীবনসহ প্রাণীকুল অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বৈশাখের এই গরমে উপকূলীয় প্রাণ ওষ্ঠাগত। ঘরে বৈদ্যুতিক ফ্যানের বাতাসেও যেনো আগুনের হাওয়া বইছে। কোথাও একটু স্বস্থি নেই। অপরদিকে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়ছে। তাই হাসপাতাল গুলোতে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেশকিছু দিন ধরে তাপদাহে পুড়ছে সারাদেশ। গ্রীষ্মের তপ্তরোদ ও ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে প্রাণীকুলের জীবন,মানুষের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বিশেষ করে দুপুরে রোদে ঘরের বাইরে চলাচলকারীদের শরীরও মুখমন্ডল জলতে থাকে। ঘরের বাইরে তাকালেই চোখ বন্ধ হয়ে আসে,ঘরে ফ্যানের বাতাসেও যেনো আগুনের হাওয়া বইছে। কোথাও একটু স্বস্থি নেই। বৈশাখের এই গরমে সাধারণ মানুষের প্রান উষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে,তেষ্ঠায় বুক গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।
অনেকে এই তীব্র খরতাপ ও ভ্যাপসা গরম থেকে একটু স্বস্থি পেতে দুই থেকে তিন বার গোসল করছেন। তীব্র খরায় গাছ-গুল্ম-লতাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অপরদিকে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ভূক্তভোগীরা জানান, পানির অপর নাম জীবন হলেও এই পানি এখন এ উপজেলার মানুষের বিপদ ডেকে আনছে। চারদিকে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার চলছে। পানির জন্য কলসি হাতে দূর-দূরান্তে ছুটছে মানুষ। সুপেয় পানির সংকট এ অঞ্চলের মানুষদের নিত্যদিনের সমস্যা।গত কয়েক বছর ধরে এ সমস্যা চলে এলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন ভয়াবহ রুপ নিচ্ছে, এটি স্থায়ী সমাধানের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে ও অভিযোগ,কৈখালী,পদ্মপুকুর,বুড়িগোয়ালীনি,আটুলিয়া,গাবুরা মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। তারা আরও জানান,এলাকার বেশিরভাগ খাল ও পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় কোথাও গোসল এবং খাবারের পানি মিলছে না। ফলে লোকজনকে আর্সোনিকযুক্ত নলকূপ,ও নোংড়া পুকুরের পানি পান করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় মানুষজন এ পানি পান করে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে ভুগছেন।
শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায় প্রচন্ড গরমে পানি বাহিত রোগ ডায়রিয়া, শাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে,সরেজমিনে কৈখালী গ্রামের দেখা যায় শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষেরা ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল ক্লিনিকগুলোতে হচ্ছে ভর্তি। এছাড়া পল্লী চিকিৎসকদের কাছ থেকে ও চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা,শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী গ্রামের পল্লী চিকিৎসক ডাঃ রুহুল আমীন বলেন একদিকে অতি তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায়, অন্যদিকে এই এলাকার মাটির তলদেশের ও নলকূপের পানি নোনা এবং অ- পরিকল্পিত ভাবে খাওয়ার পানির ফিল্টার, পুকুরগুলো সংস্কার করার অভাবে পানি-বাহিত ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধ বয়সের মানুষ।
কৈখালী গ্রামের স্থানীয় বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন এই এলাকার পানি লবণাক্ত এবং বিশেষ করে কৈখালী ইউনিয়নের ১,২,৩,নং ওয়ার্ডে সরকারি অনেক জায়গা থাকলে ও সরকারি কোনো পুকুর বা জলাধর না থাকায় আমারা প্রতিবছর দুই থেকে তিন মাস বিশুদ্ধ খাবার পানির কষ্টে জীবন কাঁটাতে হয়,এখানে বিশুদ্ধ সুপেয় পানি সময় মত পাওয়া যায়না।
এখনকার সময়ে খরা বা অনাবৃষ্টির কারণে শুকিয়ে আসছে,পুকুরের পানি ও গভীর নলকূপের পানি নোনা হওয়ায় এই এলাকায় নেই টিউবওয়েল।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি বিশুদ্ধ সুপেয় পানির জন্য বেশি বেশি করে পুকুর খনন ও পানির ফিল্টার সংস্কার তৈরি করলে এই সুপেয় পানির সংকট সমাধান হবে বলে মনে করেন তারা,স্থানীয় জনপ্রতিধিদের ভোগবিলাসী আর স্বজনপ্রীতি ছাড়া নিজেদের আখের গোছানোর প্রচেষ্টায় ব্যস্ত থাকেন মেম্বার চেয়ারম্যানগুলো, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি এনজিও গুলোর সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবী জানান সচেতন মহল।