বিরোধী দল ভাঙতে ষড়যন্ত্র করছে সরকার ——-মঈন খান
ডেস্ক রিপোর্ট: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, হামলা-মামলা ও গুলির মাধ্যমে বিরোধী দলকে দমনের জন্য অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার।তারা বিরোধী দল দমনসহ বিএনপিকে ভাঙতে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে।বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর মগবাজারে বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সহসম্পাদক হৃদরোগে আক্তান্ত ডা. পারভেজ রেজা কাকনের শারীরিক খোঁজখবর নিতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।এসময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ড. মঈন খান অসুস্থ কাকনের শারীরিক ও পারিবারিক অবস্থান খোঁজ নেন।মঈন খান বলেন, যেভাবে আমাদের নিরীহ ও নিরস্ত্র নেতাকর্মীদের ওপর সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিভাবে টিয়ারশেল ছুড়েছে। অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এটা সকলেই জানেন। তবুও নেতাকর্মীরা কিন্তু থেমে যাননি। তারা আন্দোলন চালিয়ে গেছেন।তিনি বলেন, দল গোছানো ও সংগঠন পুনর্গঠন করা চলমান প্রক্রিয়া। রাজনীতি কোনো কাপড় নয় যে, সাজিয়ে গুছিয়ে আলনা বা আলমারিতে রাখা যায়। এটা সঠিক যে, গত রোজায় ২৮ অক্টোবর পরবর্তী অনেক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে কারাগারে নেওয়া হয়েছিল। আমরা তাদেরকে জামিনের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছি। কারণ বিএনপি আইনের শাসনে বিশ্বাসী। নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। সেজন্যই জামিনের বিষয়ে চেষ্টা করেছি। আজকেও কিন্তু মামলা-মোকদ্দমা শেষ হয়নি। এখনও প্রতিদিন হাজার হাজার নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন কোর্টে হাজিরা দিচ্ছেন। আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে কারও বিরুদ্ধে ৩০০ থেকে ৫০০ পর্যন্ত মামলা আছে। এখানে কে ডাক্তার, কে প্রকৌশলী? কিংবা কিসের সুশীল পেশাজীবী? কেউ বাদ যায়নি মামলা থেকে। শুধু তাই নয়, গভীর রাতে গ্রামে-গঞ্জের তৃণমূল নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে হানা দিয়েছে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সরকারকে বলবো- প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে একটি আদর্শের রাজনীতিতে ফিরে আসুন। বিএনপি নিয়মতান্ত্রিকভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবো ইনশাআল্লাহ। উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে মঈন খান বলেন, অতীতে কখনই বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেটা বাদ দিয়ে তা দলীয় প্রতীকে শুরু করেছে। আমরা কিন্তু লিখিতভাবে এটার প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। সেসময় বলেছিলাম যে, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলে দেশের সামাজিক সংস্কৃতি বিনষ্ট হয়ে যাবে। তারই ফল কিন্তু গ্রামে-গঞ্জে ঘরে ঘরে দ্বন্দ্ব। এখন দেখেন উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিজেরা নিজেরাই দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে। কাজেই ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণকে আওয়ামী লীগকে বর্জনের পর আওয়ামী লীগ বুঝতে পেরেছে যে, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করা হলে দেশের সামাজিক কাঠামোটা ভেঙে যাবে। আমি বিশ্বাস করি এ উপলব্ধি থেকেই তারা দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচন করছে না। নিজেদের নৌকা নিজেরাই ডুবিয়েছে। সুতরাং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ছাড়া এবং এ সরকার ও তাদের সাজানো নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবো না। তবে গ্রামে-গঞ্জে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কে যাবে কে যাবে না সেটা তো বিএনপি দলীয়ভাবে দেখতে পারে না।
প্রসঙ্গত, গত রোববার সকালে ডা. পারভেজ রেজা কাকন ম্যাসিভ হার্টঅ্যাটাকে আক্রান্ত হন। পরে তাৎক্ষণিকভাবে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে কাকনের হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা তিনটি রিং পরিয়েছেন। গত বুধবার তিনি বাসায় ফেরেন।এরপর গতকাল বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ ইবনে সিনা হাসপাতালে গিয়ে বিএনপির অসুস্থ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার শারীরিক অবস্থা খোঁজ খবর নেন ড. আব্দুল মঈন খান।রফিকুল ইসলাম মিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তিনি বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।