ইরানে কি পাল্টা হামলা চালাবে ইসরায়েল?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বহুদিনের বৈরিতা থাকলেও এবারই প্রথমবারের মতো ঘোষণা দিয়ে সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালালো দেশটি।
তবে তিন শতাধিক ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর আপাতত পাল্টা হামলা না করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। তবে পাল্টা হামলা এলে আরো বড় ধরনের আঘাতের হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছে ইরান। এই অবস্থায় ইসরায়েল ইরানে পাল্টা হামলা চালাবে কিনা সেই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
ইসরায়েলের বড় মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাফ জানিয়ে দিয়েছে, পাল্টা হামলা চালালে ইসরায়েলকে সঙ্গ দেবে না তারা। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকেও পাল্টা হামলা না চালানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। এই অবস্থায় ইসরায়েল কী সিদ্ধান্ত নেয় সে দিকে তাকিয়ে আছে বিশ্ব।
ইরানের নজিরবিহীন হামলার পর নিজেদের করণীয় ঠিক করতে বৈঠক করেছে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। তবে সেখানেও তারা কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। বৈঠকে পাল্টা হামলা চালানোর পক্ষে যেমন মত এসেছে তেমনি হামলা থেকে বিরত থাকার পক্ষেও মত এসেছে।
সংবাদ মাধ্যমের ভাষ্য অনুযায়ী, ভূকৌশলগত দিক থেকে ইরান সুবিধাজনক স্থানে রয়েছে। কারণ দেশটির তিন দিকই পর্বত দিয়ে ঘেরা। ফলে অপর পাশে আরব সাগর হয়েও ইরানকে স্থল আক্রমণ করা কঠিন। খোদ যুক্তরাষ্ট্রই ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় ইরান আক্রমণের সাহস পায়নি। এছাড়া আকাশপথে আক্রমণও ইসরায়েলের জন্য সুবিধা হবে না। কারণ দেশটির প্রায় সব দিকেই ইরানের সামরিক উপস্থিতি আছে। সিরিয়ায় ইরানের সরাসরি সামরিক উপস্থিতি আছে। এছাড়া ইরাক ও লেবাননে ইরানের প্রক্সি গোষ্ঠী আছে। এমনকি খোদ ইসরায়েলের ভেতরে গাজায় রয়েছে হামাস, যারা ইসরায়েলের চির শত্রু। সামরিক শক্তির দিক থেকে ইসরায়েল শক্তিশালী হলেও ইরানে এমন কিছু ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে যেগুলোকে ভয় পাচ্ছে দেশটি। এসব বিবেচনায় ইসরায়েল পাল্টা হামলা থেকে বিরত থাকতে পারে।
তবে ইসরায়েলের ভেতর থেকে পাল্টা হামলার চাপ রয়েছে। এছাড়া দেশটি এই অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের যে চেষ্টা চালিয়ে আসছে পাল্টা হামলা না চালালে তাতে ভাটা পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েল শেষ পর্যন্ত পাল্টা হামলার সিদ্ধান্ত নিলে ইরানের যে ঘাঁটি থেকে হামলা চালানো হয়েছে, সেখানে হামলা চালাতে পারে। এছাড়া বিপ্লবী গার্ড কোরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেও হামলা চালাতে পারে, যাতে মানুষজন হতাহত হওয়া ছাড়াও অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।