মুখে কালি মেখে ব্যাংকে হামলা চালায় কেএনএফ’র নারী সদস্যরা
ডেস্ক নিউজ:
বান্দরবানের রুমা ও থানচির তিনটি ব্যাংকে হামলায় অংশ নেয়া কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্যদের শনাক্তে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরই মধ্যে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাংক ডাকাতির সিসিটিভি ফুটেজ। এতে দেখা গেছে, থানচির দুটি ব্যাংকে হামলার ঘটনায় সরাসরি অংশ নিয়েছে কেএনএফ’র নারী সদস্যরা।
জানা গেছে, গোপন আস্তানায় প্রশিক্ষণ নেয়া কুকি-চিনের নারী সদস্যদের মধ্যে তিনজনকে শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা হলেন- এজী, থাংনেম পার এবং ভানথারময় ওরফে আমই।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, গত ২ এপ্রিল রাতে কুকি চিনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সোনালী ব্যাংক রুমা শাখার ভল্ট ভাঙার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অসংখ্যবার চেষ্টা করেও ভল্ট ভাঙতে না পেরে অস্থিরভাবে পায়চারী করছিল তারা। তাদের পরনে ছিল সামরিক বাহিনীর মতো পোশাক, মুখে ছিল কালি মাখানো।
আরেকটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, গত ৩ এপ্রিল দিনদুপুরে থানচি সোনালী ব্যাংকে হানা দিয়েছে কেএনএফ’র সশস্ত্র সদস্যরা। অস্ত্রের মুখে ব্যাংক কর্মকর্তাসহ সেবা নিতে আসা সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ব্যাংকের ক্যাশে থাকা সব টাকা লুট করে নিয়ে যায়। আর ব্যাংকের ভেতরে তাণ্ডব চালানো সন্ত্রাসীদের মধ্যে অধিকাংশই নারী সদস্য।
এতদিন পুরুষ সদস্যরা অপহরণ এবং চাঁদাবাজিতে অংশ নিলেও প্রথমবারের মতো ব্যাংক ডাকাতিতে নারী সদস্যদের ব্যবহার করেছে কেএনএফ। সিসিটিভি ফুটেজে এসব নারী সদস্যদেরই সবচেয়ে বেশি আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা গেছে। সবার হাতেই ছিল অস্ত্র।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে আলম মিনা জানান, কেএনএফ’র নারী সদস্যরা সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ঢুকে মুহূর্তের মধ্যে নগদ টাকা নিয়ে দৌড়ে গাড়িতে ওঠে। এছাড়া বাইরে তিনটি গাড়ি ব্যবহার করে তারা। সেখানে তাদের পুরুষ সহযোগীরাও ছিল।
এ ঘটনায় গত ২ এবং ৩ এপ্রিল হামলার ঘটনায় বান্দরবানের রুমা থানায় ৫টি এবং থানচি থানায় ৩টি মামলায় করা হয়। বিশেষ ক্ষমতা আইনের পাশাপাশি অস্ত্র ও ডাকাতি এবং অপহরণের অভিযোগে এসব মামলা হলেও এজাহারে কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। তাৎক্ষণিক কারো নাম পরিচয় উল্লেখ করা না গেলেও তদন্ত প্রতিবেদনে নাথান বমসহ সবাইকে অভিযুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ডিআইজি নূরে আলম মিনা বলেন, আমরা যতটুকু তথ্য বা সাক্ষ্য পাবো তা দিয়েই প্রমাণ করবো যে ঐ আসামিরা সেখানে ছিল। তাদের গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যাবে কার নেতৃত্বে কে কে সেখানে ছিল।
উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল কেএনএফ রুমার সোনালী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করে এবং পুলিশ ও আনসার সদস্যের ১৪টি অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায় এবং এরপর দিন থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে হামলা চালিয়ে ১৭ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করলেও ৪৬ ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করে র্যাব।