অসুস্থ স্বামীর জন্য ডাক্তার ডাকতে গিয়ে মার ধরের শিকার স্ত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি অসুস্থ স্বামীর চিকিৎসার বিষয়ে জরুরী বিভাগে কথা বলতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন স্ত্রী। এ সংক্রান্ত সিটিটিভির একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম্যে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থেকে গত কিছু দিন যাবত চিকিৎসা নিয়ে আসছেন উপজেলার কয়লা ইউনিয়নের আলাইপুর গ্রামের শেখ আবু তালেব। হঠাৎ সোমবার রাতে আবু তালেবের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তার স্ত্রী সুফিয়া খাতুন (৫৫) জরুরী বিভাগে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসককে জানালেও তারা বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। পরে মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে তিনি আবারো জরুরী বিভাগে যান। ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীর জাহান, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ফরহাদ হোসেন, ওয়ার্ড বয় শরীফ হোসেনসহ একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি। তখন কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সুফিয়া খাতুনকে গলা ধাক্কা ও মোবাইল ফোন দিয়ে মুখে আঘাত করেন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ফরহাদ হোসেন।
ওই রুমে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, কথা বলার এক পর্যায়ে সুফিয়া খাতুনের ঘাড় ধাক্কা ও হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে তার মুখে আঘাত করেন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ফরহাদ হোসেন। পরে ওয়ার্ড বয় শরিফ হোসেন দৌড়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং সুফিয়া খাতুনকে জরুরী বিভাগের বাহিরে পাঠিয়ে দেন।
ভুক্তভোগী সুফিয়া খাতুন বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘদিন অসুস্থ। আমি অর্থের অভাবে ভালো ডাক্তার দেখাতে পারছি না। যে কারণে কলারোয়া হাসপাতালে ভর্তি রেখেছি। সোমবার রাতে স্বামীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আমি প্রথমে নার্সদের কাছে যাই। তারা আমাকে নিচে ডাক্তারের কাছে যেতে বলেন। আমি নিচে গিয়ে ডাক্তারদেরকে বললে তারা বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। পরবর্তীতে সকালে আবারো আমি ডাক্তারের কাছে যাই। সেখান থেকে আমাকে বলেন, আপনার রোগী এখন নিয়ে চলে যান। কথা বলতে বলতে ফরহাদ হোসেন আমার ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিচ্ছিলেন। আমি তাকে বলি আমার গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন? হঠাৎ তাঁর হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে আমার মুখে আঘাত করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম জানান, আমি বিষয়টি জেনেছি। এটি দুঃখজনক ঘটনা। আমরা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি এবং সিসি ফুটেজ দেখেছি। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। আমরা খুব দ্রæত একটি তদন্ত কমিটি করে দোষীকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো।
এদিকে কলারোয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী সুফিয়া।
কলারোয়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক। অভিযোগ পেয়েছি। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।