কলেজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থআত্মসাতের অভিযোগ
Post Views:
২৪৬
নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ একই কলেজের উপাধ্যাক্ষ হয়ে দুই পদের বেতন ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে এক কলেজ শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিকার চেয়ে একাধিক বার সংক্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করেও অদৃশ্যকারনে প্রতিকার মেলেনি বলে দাবী ভুক্তভোগী শিক্ষকদের। অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক হলেন, সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটার হারুন অর রশিদ কলেজের উপাধ্যাক্ষ মোঃ আতিয়ার রহমান। নাম না জানানোর শর্তে ওই প্রতিষ্টানের একাধিক শিক্ষক জানান, আতিয়ার রহমান হারুন অর রশিদ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক থেকে পদন্নতি পেয়ে উপাধ্যক্ষ পদে উন্নিত হয় তিনি। তবে উপাধ্যক্ষ থেকে দায়িত্ব ভার গ্রহনের পর থেকে তিনি পূর্বের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বেতন ভাতা গ্রহণ করে আসছেন। একই সাথে উপাধ্যাক্ষ পদ ব্যাবহার করে তার যাবতীয় সুভিদা ভোগ করে আসছেন দীর্ঘদিনযাবত। এর আগে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের থেকে কয়েক দফায় বেতন ফেরতের পত্র প্রেরণ করেন তাতে ১১ মাসের টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দেওয়ার কথা জানানো হলে তিনি কৌশালে একটি মামলার করেন। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে তিনি ২০২৪ সাল পর্যন্ত কলেজের দুই পদের বেতন ভাতা র সকল প্রকার সুবিধা গ্রহণ করে আসছেন। এদিকে সরকারী টাকা তছরুপ ও দুই পদের বেতন ভাতা উত্তোলন পৃর্বক ভোগের বিষয়টি নিয়ে ক্ষুদ্ধ হয়েছে কলেজের শিক্ষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে রাষ্ট্র বিজ্ঞানের প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন আতিয়ার রহমান। তিনি ওই সময় কলেজের গভর্ণিং বডির সভাপতি ছিলেন জামায়াতের সংসদ সদস্য শেখ আনছার আলী। এরপর ২০১৭ সালে তিনি পদন্নতি পেয়ে কলেজটির উপাধ্যক্ষ হন। তবে তিনি পূর্বের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষকের পদের সকল বেতন ভাতা ভোগ করে আসছেন। বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে জানালে, রাষ্ট্রীয় কোষাগারে অর্থ ফেরতের পত্র প্রেরণ করেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধান। তবে পত্রের নির্দেশ অমান্য করে তিনি ২০২৪ সাল পর্যন্ত দুই পদের সকল সুবিধা গ্রহণ করে আসছেন দীর্ঘদিন যাবত। ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানায়, কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াকালীন তিনি সহ আরেক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেন।এ ঘটনায় কলেজ প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে কোন প্রতিকার মেলেনি। পরে কলেজ গভানিং বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানালে ঘটনার সত্যতা পেয়ে যৌন হয়রানীর দায়ে তাকে ২বার সাময়িক বরখাস্ত করে কলেজ কর্তৃপক্ষ । এছাড়া কলেজের অর্থ আত্নসাৎ ও দুনীর্তির অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হন তিনি। কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য মহসিন আলী জানান, শিক্ষক আতিয়ারের বিরুদ্ধে অগনিত অভিযোগ রয়েছে। সকল অভিযোগগুলোর সত্যতা পেয়েছেন তদন্ত কমিটি। তার প্রতি ক্ষুদ্ধ অধিকাংশ ছাত্রীরা। তিনি বেশ কিছু ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন। যেটা নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। ঘটনার তদন্তে এটার সত্যতা পাওয়ায় তিন লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিয়েছেন তিনি ।
হারুন অর রশিদ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল গফফার জানান, আতিয়ারের বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ সত্য।বর্তমানে তিনি কলেজের উন্নয়ন দেখে ইর্ষাণিত হয়ে কলেজ নিয়ে নানা ধরনের কুৎসা রটাচ্ছেন তিনি।
তার এই কর্মকান্ডে বাঁধা দিতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে মনগড়া সংবাদ পরিবেশন করান। বর্তমানে তিনি তার অপকর্ম বন্ধের জন্য তিনি জেলা প্রশাসক ও সংক্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ অস্বীকার করে উপাধ্যক্ষ আতিয়ার রহমান জানান, তাকে নিয়ে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সব ষড়যন্ত্র মূলক ভাবে করা হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ সহ বেশ কিছু শিক্ষক লেগে থেকে কাজগুলো করেছেন। আমি এসব বিষয়ের সাথে জড়িত না। তবে বেতন ভাতার প্রসঙ্গে কথা বললে তিনি মুঠোফোনের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ন কবির জানান,পাটকেলঘাটা হারুণ অর রশিদ কলেজের উপাধ্যক্ষ আতিয়ার রহামানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ শুনেছি। এছাড়া তিনি দুই পদ থেকে বেতন তুলেছেন সেটার লিখিত সত্যতা পেয়েছি । বিষয়গুলো তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দেওয়া হবে।