ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিরা বিদেশ যেতে পারবে না: বাংলাদেশ ব্যাংক
ডেস্ক নিউজ:
ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে এবার আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ইচ্ছাকৃত খেলাপিরা বিদেশ যেতে পারবে না। পাশাপাশি ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুর ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিরা কোনো রাষ্ট্রীয় পুরস্কার বা সম্মাননার যোগ্য হবেন না। গাড়ি, জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট নিবন্ধনের ক্ষেত্রেও তারা বাধার মুখে পড়বেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রতিটি ব্যাংকে আগামী ৯ এপ্রিলের মধ্যে ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা শনাক্তকরণ ইউনিট নামে আলাদা ইউনিট গঠন করতে হবে। কোনো গ্রাহক খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সে ইচ্ছাকৃত খেলাপি কিনা, তা শনাক্ত করতে হবে। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও, ঋণ পরিশোধ না করলে এবং মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে কেউ ঋণ নিলে তা ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতাসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রতি ত্রৈমাসিকে ব্যাংকের অডিট কমিটির সভায় উপস্থাপন করতে হবে। অডিট কমিটি ওই প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলি পর্যালোচনান্তে গুরুত্ব বিবেচনায় এ বিষয়ে তাদের মতামত বা সিদ্ধান্ত পরবর্তী পর্ষদ সভাকে অবহিত করবে। ব্যাংক পরিচালিত নিয়মিত বা বিশেষ অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতার বিষয়ে পর্যালোচনাসহ একটি আলাদা অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং তা নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে টিকা আকারে প্রকাশ করতে হবে।
ইচ্ছাকৃত খেলাপির ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপিত বা অনারোপিত কোনো সুদ মওকুফ করা যাবে না এবং পুনঃতফসিলও করা যাবে না বলে নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইচ্ছাকৃত খেলাপির ঋণ হিসাবটি অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের টেকওভার করা যাবে না। ওই ঋণ সম্পূর্ণ আদায় বা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা হিসেবেই বিবেচিত হবেন।
ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের চিহ্নিত করতে ব্যাংকের এমডি ও সিইওর দুই ধাপ নিচের কর্মকর্তার অধীনে প্রধান কার্যালয়ে ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা শনাক্তকরণ ইউনিট’ গঠনের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী কারা ইচ্ছাকৃত খেলাপি কমিটি তা শনাক্ত করবে।
এরপর শনাক্তকরণের কারণ উল্লেখ করে ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে তার বক্তব্য দেয়ার জন্য ১৪ কর্মদিবস সময় দেবে। ওই সময়ের মধ্যে বক্তব্য দিতে ব্যর্থ হলে অথবা তার বক্তব্য যথাযথ বিবেচিত না হলে কমিটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমোদন নিতে হবে।