রমজানে আল-আকসায় নামাজ পড়তে পারবেন ফিলিস্তিনিরা : ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জেরুসালেমে মুসলমানদের পবিত্র স্থান বলে বিবেচিত আল-আকসা মসজিদে রোজায় নামাজ পড়তে কোনো বাধা নেই। বিগত বছরগুলোর এ বছরও রমজান মাসে আল-আকসা মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবেন ফিলিস্তিনিরা। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়।

সংবাদমাধ্যম এএফপি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, বিগত বছরগুলোতে রমজানের প্রথম সপ্তাহে যত মুসল্লি টেম্পল মাউন্টে তথা আল-আকসায় নামাজ পড়তেন এ বছরও তার কোনো ব্যতিক্রম হবে না। তবে প্রতি সপ্তাহে জেরুজালেম ও টেম্পল মাউন্ট এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

প্রতি বছরই রমজান মাসে আল-আকসা মসজিদে নামাজ আদায় করেন লাখো মুসলমান। তবে গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান ও তার জেরে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী ও সেটেলারদের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষের কারণে এ বছরের পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা।

আরবি বছরের হিসাব অনুসারে, আগামী ১০ বা ১১ মার্চ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র রমজান। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে এবারের রমজানে আল-আকসায় ফিলিস্তিনিদের প্রবেশের পক্ষে ছিল না ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী ও কট্টর ডানপন্থী নেতা ইতামার বেন গাভির জানিয়েছিলেন, এবারের রমজানে আল-আকসায় পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের প্রবেশ করতে দেওয়া উচিত হবে না।

বেন গাভির বলেছিলেন, প্রথমত, এটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা এই ঝুঁকি নিতে পারি না। দ্বিতীয়ত, যেখানে আমাদের নারী ও শিশুরা গাজায় জিম্মি হিসেবে রয়ে গেছে সেখানে টেম্পল মাউন্টে হামাস তা উদ্‌যাপন করবে এমনটা আমরা হতে দিতে পারি না।

এই মন্তব্যের পর রমজানে আল-আকসায় নামাজ পড়তে দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছিলেন, এটি কেবল মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেওয়াই নয় বরং ইসরায়েলের নিরাপত্তার সঙ্গেও ব্যাপারটি সম্পর্কিত। পশ্চিম তীর বা আশপাশের অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়ালে তা ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা দেবে।

নেতানিয়াহুর দফতরের বিবৃতির পর পৃথক এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা বলেছে, ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের জন্য রমজান একটি পবিত্র মাস। বিগত বছরগুলোর মতে এ বছরও এ মাসের পবিত্রতা অক্ষুণ্ন রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে ইসরায়েল।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।

নজিরবিহীন সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর যোগ দেয় পদাতিক বাহিনীও। অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩০ হাজার ৫৩৪ জন, আহত হয়েছেন আরও ৭১ হাজার ৯৮০ জন ফিলিস্তিনি। নিহত ও আহতদের মধ্যে একটি বড় অংশই নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বেসামরিক লোকজন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)