রিজার্ভ চুরির মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে রায়

ডেস্ক নিউজ:
বহুল আলোচিত ৮১ মিলিয়ন ডলার রিজার্ভ চুরির ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক স্টেট কোর্টের ফার্স্ট আপিল বিভাগ মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে রায় দিয়েছে।

সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিবৃতিতে জানায়, ২৯ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশন (আরসিবিসি) এবং কিম অং-এর বিরুদ্ধে করা বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলা পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত।

এ রায়কে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ চুরির মামলায় প্রাথমিক জয় পেয়েছে বলে মনে করছে। বিশেষ করে আরসিবিসি ও এর দুই উচ্চপদস্থ নির্বাহী কর্মকর্তা লরেঞ্জো তান ও রাউল ভিক্টর বি তান এবং ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অং-কে রিজার্ভ চুরিতে সংশ্লিষ্টতার জন্য দায়ী করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবৃতির বরাতে জানা যায়, অভিযুক্তরা জেনেবুঝে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরি করেছে এবং স্টপ পেমেন্ট অনুরোধ তোয়াক্কা না করেই আরসিবিসির অভিযুক্তদের মানি লন্ডারিংয়ের সুযোগ করে দিয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকের করা মামলাকে যুক্তিযুক্ত মনে করছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা নিতে পারে বলে জানিয়েছে।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুইফট ব্যবস্থা কাজে লাগিয়ে ৩৫টি ভুয়া বার্তার মাধ্যমে ফেডারেল রিজার্ভের নিউইয়র্ক শাখায় বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০০ কোটি ডলার চুরির চেষ্টা চালান অপরাধীরা। এরমধ্যে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার লোপাট করতে পারলেও ৩ কোটি ৪৬ লাখ ডলার উদ্ধার করা গেছে। বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার এখনো আদায় করা সম্ভব হয়নি।

যেহেতু অপরাধ নিউইয়র্কে সংঘটিত হয়েছে, তাই নিউইয়র্কের আদালতে করা বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২০ সালের মামলায় এমন রায় রিজার্ভ আদায়ে বাংলাদেশকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক মামলায় জিতে গেলে চুরি যাওয়া অর্থ আরসিবিসিকে ফেরত দিতে হবে।

নিউইয়র্কের আদালতের রায় অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক আপাতত চারটি বিষয় (জালিয়াতি, অবৈধ অর্থ উপার্জন, অনধিকার প্রবেশ ও অর্থ গ্রহণ) সামনে রেখে মামলা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ফিলিপাইনের কোনো ব্যবসায়িক যোগযোগ নেই, সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এমন অর্থ লোপাটকে রায়ে গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আদলতের রায়ে আরিসিবিসির বেনামী হিসাব খোলা, চুরি সংঘটনের জন্য নিউইয়র্কের প্রতিনিধি ব্যবহার, চুরি যাওয়া অর্থ ব্যবসায় বিনিয়োগ এবং আরসিবিসির নির্দেশের হ্যাকারদের কাজ করার বিষয়গুলো উঠে এসেছে। এসব বিষয়কে সামনে রেখে মামলায় চূড়ান্ত বিজয়ের লক্ষ্যে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পর্যালোচনা করছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

পরবর্তীতে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের আপিল বা আরসিবিসি এবং কিম অং আপিল করলে শুধু জবাব প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। বরং বিচারিক আদালতে চলমান অর্থ পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)