আশাশুনিতে সাব রেজিস্ট্রার না থাকায় দাতা-গ্রহীতারা বিড়ম্বনার শিকার
জি এম মুজিবুর রহমান:
আশাশুনি উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে সাব রেজিস্ট্রার না থাকায় পদটি শূন্য রয়েছে গত কয়েক বছর যাবত। সাতক্ষীরা সদর সাব রেজিস্ট্রার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে থাকেন আশাশুনি সাব রেজিস্ট্রি অফিসে। সপ্তাহে একদিন রবিবার সাব রেজিস্ট্রি অফিসে জমি রেজিস্ট্রেশনের দিন ধার্য থাকলেও মাঝে মধ্যে সাব রেজিস্ট্রার অনুপস্থিত থাকায় ভোগান্তির অন্ত থাকেনা।
গতকাল রবিবার (৩ মার্চ) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সাব রেজিস্ট্রার রিপন মুন্সী অফিসে উপস্থিত না হওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত জমির মালিক বা দলিলের দাতা-গ্রহীতাদের। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জব্বার এসেছিলেন জমি রেজিস্ট্রী করাতে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সাতজন জমির মালিককে একত্রিত করে জমি রেজিস্ট্রেশনের জন্য রেজিস্ট্রি অফিসে এসেছিলাম। এসে শুনলাম সাব রেজিস্ট্রার আসেননি। সাতজন জমির মালিককে একত্রিত করতে এবং উপজেলা সদরে তাদের নেওয়ার জন্য পরিবহন খরচ, নাস্তা খরচ দিয়ে মোটা অংকের টাকা খরচ হয়েছে তার। জমি রেজিস্ট্রি না হওয়ায় আগামী রবিবার আবারো মোটা অংকের টাকা গুনতে হবে তাকে। বুধহাটা ইউনিয়নের বাসিন্দা বিকাশ সরকার বলেন, অসুস্থ জনিত কারণে এ সপ্তাহে জমি বিক্রি করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু সাব রেজিস্ট্রার দপ্তরে না থাকায় তার রেকর্ডীয় জমি রেজিস্ট্রি না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে তাকে।
আশাশুনি উপজেলার সব থেকে বেশি রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান আশাশুনি সাব রেজিস্ট্রি অফিস। সপ্তাহে মাত্র একদিন জমি রেজিস্ট্রেশনের কাজ হলেও হঠাৎ করে সাব রেজিস্ট্রারের অনুপস্থিতির কারণে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে সরকার। আশাশুনি উপজেলা দলিল লেখক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্ধারিত সাব রেজিস্ট্রার না থাকায় এবং অনিবার্য কারণে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সাব রেজিস্ট্রারগন এভাবে অনুপস্থিত থাকলে তাদেরও ভোগান্তির অন্ত থাকে না।
এ উপজেলায় নির্ধারিত একজন সাব রেজিস্ট্রার কর্মরত থাকলে একদিকে যেমন সরকার বাহাদুর নিয়মিতভাবে রাজস্ব আদায় করতে পারতেন অন্যদিকে ভোগান্তি লাঘব হতো ভূমি মালিক বা দাতা-গ্রহীতাদের। আশাশুনি সাব রেজিস্ট্রি অফিসে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সাব রেজিস্ট্রার রিপন মুন্সীর কাছে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে জেলা সাব রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আবু তালেব সাংবাদিকদের জানান, সাব রেজিস্ট্রার রিপন মুন্সী শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার কারণে তিনি আজ আশাশুনিতে যেতে পারেননি। আশাশুনিতে নির্ধারিত সাব রেজিস্ট্রার পোস্টিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জেলার সাতটি উপজেলার জন্য সাব রেজিস্ট্রার আছে মাত্র তিনজন। ফলে কোন উপজেলাতেই নির্ধারিত সাব রেজিস্ট্রার প্রদানের সুযোগ নেই।