চার বছরের শিশু সন্তান আফরানকে ফিরে পেতে কালিগঞ্জের নলতায় ভারতীয় নারী আসমা
রঘুনাথ খাঁঃ প্রায় চার বছর বয়সী শিশু সন্তান আফরানকে ফিরে পেতে জনপ্রতিনিধি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভারতীয় নারী আসমা খাতুন। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ থানাধীন বাঁকড়া গ্রামের আজমান গাজীর মেয়ে।আসমা খাতুন জানান, ২০১৪ সালের শেষের দিকে তাদের গ্রামে অবস্থান করাকালিন পরিচয় হয় বসিরহাটের ইটিন্ডা গ্রামের সাঈদুর রহমানের ছেলে খলিলুর রহমানের। ২০১৫ সালের ২২ মার্চ ইসলামী শরিয়ত মতে তাদের বিয়ে হয়। এর আগে খলিলুর ইটিন্ডার ঠিকানায় পাসপোর্ট তৈরি করেন। করেছে বাংলাদেশে যাতায়াতও। বিয়ের কয়েক মাস পর তারা তামিলনাড়–তে একটি পোশাক কারখানায় কাজ শুরু করেন। এরমধ্যে তাদের ঘরে আফরান নামে এক সন্তান আসে। ১৮ মাস বয়সী আফরানকে নিয়ে হঠাৎ খলিলুর নিখোঁজ হয়ে যায়। পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন যে খলিলুর তার আসল ঠিকানা বাংলাদেশের সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের বাক্ নলতা গ্রামে নিয়ে গেছে। বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করে তিনি জানতে পারেন যে খলিলুর রহমানের প্রকৃত নাম খলিলুর রহমান খান। তার বাবা মৃত কাশেম খান। ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে সে তার বাপের নামও পাল্টিয়েছে। একপর্যায়ে ২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর তিনি পাসপোর্টে নলতায় আসেন। কথা বলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আরিজুল ইসলামের সাথে। কথা হয় ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। তার সন্তান আরফানকে ফেরৎ চান তিনি। প্রথমে সন্তান ফেরৎ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও খলিলুর রহমান ও তার স্বজনরা তাকে জীবননাশের হুমকি দেন। পরে তিনি দেশে ফিরে যান। গত ২৭ ফেব্রæয়ারি তিনি আবারো ভোমরা বন্দর দিয়ে নলতায় আসেন। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ডাকে সাড়া দিয়ে খলিলুর না আসায় মনিরুল ইসলাম ও আল আমিনসহ চারজন গ্রাম পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে পরিষদে ডেকে আনেন। সেখানে খলিলুর কথা বলার একপর্যায়ে তাকে মারপিট করতে উদ্যত হয়। ১৮ মাসের শিশু আফরান তার কাছে না থাকায় বাক নলতায় খলিলুরের বাড়িতে বেড়ে ওঠায় সে তার মাকে ভালভাবে বুঝে উঠতে পারছে না। এমত পরিস্থতিতে সন্তানকে না পেয়ে তিনি সাতক্ষীরা আদালতে আসেন। আদালতে এক আইনজীবীর পরামর্শে তিনি বৃহষ্পতিবার নলতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনের শরনাপন্ন হন। আবুল হোসেনের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় তিনি এখন কিংকর্তব্যবিমুড় হয়ে পড়েছেন। তাকে যে ব্যক্তি নলতায় আশ্রয় দিয়ে সন্তান ফিরে পাওয়ার ব্যপারে সহযোগতিা করছেন তাকেও বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে খলিলুর। তার দুধের সন্তানকে তুলে নিয়ে যে বাংলাদেশে এসেছে তার বিচার চান তিনি। একইসাথে তিনি তার সন্তানকে কিভাবে আইন মোতাবেক ফিরে পেতে পারেন তার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।