যে রোগ হলে মানুষ সবার সামনে কথা বলতে ভয় পায়
স্বাস্থ্য ডেস্ক:
গ্লসোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি মানুষের সামনে কথা বলতে গেলেই ভয় এবং দুশ্চিন্তায় ভোগান্তিতে পড়েন। তাই তিনি জনসমক্ষে কথা বলা এড়িয়ে চলেন। কিন্তু এই ধরনের ঘটনা চলমান থাকায় তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়ে।
কারণ
সুনিদির্ষ্ট কারণ এখনো অজানা। তবে এর পেছনে জেনেটিক, পরিবেশগত, শারীরিক এবং মানসিক কারণ আছে। কেন এমন হচ্ছে এবং কী এই ভয়টাকে ট্রিগার করছে এটা বুঝতে পারলে এর রোগের প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা সহজ হবে।
তবে এ ক্ষেত্রে জেনেটিক কারণ ভূমিকা রাখতে পারে।
যেসব কারণে সবার সামনে কথা বলতে ভয় হয়যেসব কারণে সবার সামনে কথা বলতে ভয় হয়
এ ছাড়া ব্যক্তির পারিবারিক ইতিহাস রোগাক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু তাই নয়, ব্যক্তির পরিবেশগত এবং সামাজিক কারণ ও এখানে ভূমিকা রাখতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, আক্রান্ত ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা, পারিবারিক পরিবেশ, ছোটবেলায় কোন পরিবেশে বড় হয়েছেন সে ঘটনাগুলো এই ভয় তৈরি করার কাজে উপাদান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। মোটকথা অতীতের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা পরবর্তী জীবনে জনসমক্ষে কিছু বলার সক্ষমতাকে কেড়ে নেয়।
খোঁজ নিলে দেখা যাবে, এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি অতীতে জনসমক্ষে কিছু বলার সময় কখনো অসম্মানিত, উপহাসের পাত্র, বিব্রত অথবা প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। সে সময়টাতে তিনি এতই আহত হন যে, এই ভয় তীব্রভাবে তাঁর অবচেতন মনের গভীরে জেঁকে বসে থাকে। ফলে আজকে যখন তিনি জনসমক্ষে কথা বলতে যান, আগের পুরোনো মনোদৈহিক ভয়ের প্রভাবে তিনি কুঁকড়ে যান। তবে, একেকজনের ক্ষেত্রে একেক ধরনের ট্রিগার ভয়কে উজ্জীবিত করে।
মানুষের সামনে কথা বলতে গেলেই কেন ভয় হয়?মানুষের সামনে কথা বলতে গেলেই কেন ভয় হয়?
সব থেকে বেশি দেখা যায়, সামনে কেউ বসে আছে ভাবলে গলায় কথা আটকে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে আলাপচারিতা চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। আবার নতুন চাকরি শুরু করলে অফিসের মানুষের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিব্রত বোধ করেন। এ ক্ষেত্রে কিছু কারণ উল্লেখ করা যেতে পারে। যেমন:
ভুলে যাওয়ার দুশ্চিন্তায় খুব ভয় পাচ্ছেন? জেনে নিন প্রতিকারভুলে যাওয়ার দুশ্চিন্তায় খুব ভয় পাচ্ছেন? জেনে নিন প্রতিকার
১. জেনেটিক বৈশিষ্ট্য এবং পারিবারিক ইতিহাস: যদি পরিবারে কারও থেকে থাকে তবে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
২. মস্তিষ্কের কার্যক্রম: মস্তিষ্কের একটি অংশ মানুষের ভয়ের প্রতিক্রিয়াকে সামাল দিতে সাহায্য করে। আক্রান্ত ব্যক্তি যদি বেশি কর্মক্ষম হন তাহলে স্ট্রেস, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগও প্রকট হবে।
৩. মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা: যদি জনসমক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার সময় বা কথা বলার সময় অতীতের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা থাকে, তবে তা ভয় হিসেবে কাজ করবে। এতে অবস্থা খারাপ হবে।
৪. বাবা–মায়ের প্রভাব: ছোটবেলায় যদি বাবা–মা মানুষের সামনে কথা বলতে উদ্বিগ্ন বোধ করেন, তাহলে বাবা–মায়ের এই আচরণ পরবর্তীকালে সন্তানের জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করবে।
লেখক: চিকিৎসক, কাউন্সিলর, সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, বাংলাদেশ