কালীগঞ্জের অপহৃত নবম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন:আসামী তহমিনা জেল হাজতে!
স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকার আজিমপুর থেকে উদ্ধার হওয়া কালিগঞ্জের নবম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী রবিবার সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে জ্যেষ্ট বিচারিক হাকিম বণ্যা খাতুনের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দির পর মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। একই সাথে গ্রেপ্তার হওয়া আসামী তহমিনা খাতুনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
তাহমিনা খাতুন আশাশুনির শ্রীউলা গ্রামের অলিউল্লাহ সরদারের স্ত্রী।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউনিয়নের একটি গ্রামের ও আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে (১৫) বিদ্যালয়ে আসা ও যাওয়ার পথে প্রায়ই উত্যক্ত করতো শ্রীউলা গ্রামের অলিউল্লাহ সরদারের ছেলে আশাশুনি সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র সজীব আহম্মেদ শুভ। বিষয়টি ওই ছাত্রীর বাবা ও মা উত্যক্তকারির বাবা-মাসহ স্বজনদের কাছে অভিযোগ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হন সজীব, অলিউল্লাহ সরদার ও তার স্বজনরা।
একপর্যায়ে ওই ছাত্রীর বড়বোনকে গত ১৩ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৭টার দিকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিয়ে দেড় ঘণ্টা পর কাকার বাড়ির সামনে ইট সোলিং এর রাস্তা থেকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদি হয়ে ১৪ জানুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ সালের সংশোধিত ২০০৩ এর ৭/৩০ ধারায় থানায় এজাহার দায়ের করেন। যাহা গত ১১ ফেব্রুয়ারি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। মামলায় অপহরণকারি শ্রীউলা গ্রামের অলিউল্লাহ সরদারের ছেলে আশাশুনি সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র সজিব আহম্মেদ শুভ, অপহরণে সহযোগতাকারি তার বাবা অলিউল্লাহ সরদার, মা তহমিনা খাতুন ও চাচা বড়দল গ্রামের রবিউল ইসলামকে আসামী শ্রেণীভুক্ত করা হয়। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক নকীব আহম্মেদ পান্নু শনিবার সকালে ওই অপহৃত ছাত্রীকে ঢাকার আজিমপুরের আসামী রবিউল ইসলামের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়। শুভ পালিয়ে গেলে মা তাহমিনা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিন সন্ধ্যায় ভিকটিম ও আসামীকে কালিগঞ্জ থানায় আনা হয়।
ওই স্কুল ছাত্রীর মা জানান, রবিবার দুপুরে তার মেয়েকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে আদালতে আনা হয়। এ সময় তিনি মেয়েকে নিজ জিম্মায় নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন। জৌষ্ঠ বিচারিক হাকিম বণ্যা খাতুনের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি শেষে মেয়েকে বিকেল সাড়ে ৫টায় তার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ ডালিয়া আক্তার জানান, ওই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে মর্মে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মেহেদী হাসান জানান, জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বণ্যা খাতুনের কাছে জবানবন্দি দেওয়ার সময় অপহরণের কথা স্বীকার করেছে। একই সাথে তার সঙ্গে আসামী সজীব আহম্মেদ
শুভ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলো বলে জানিয়েছে। জবানবন্দি শেষে ওই ভিকটিমকে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত তাহমিনা খাতুনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।