বুধহাটায় প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে দেদারসে চলছে বন্ধকী ব্যবসা
জি এম মুজিবুর রহমানঃ আশাশুনি উপজেলার বৃহৎ বাণিজ্যিক এলাকা বুধহাটা বাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের রমরমা বন্ধকী ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি নিয়ম-কানুনকে তুয়াক্কা না করে স্বর্ণ বন্ধক রেখে চড়াদামে সুদ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বুধহাটা বাজারের জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় মোটা আংকের টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে একদিকে যেমন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা দেদারসে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন অন্যদিকে নিজেদের ইচ্ছেমতো স্বর্ণের বন্ধকী ব্যবসাও চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বর্ণ বেচাকেনা ও কারিগরদের জন্য ডিলিং লাইসেন্স সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একাধিক লাইসেন্স গ্রহণ করা ব্যবসায়ীদের জন্য বাধ্যতামূলক হলেও কোনটাই নেই স্বর্ণের ব্যবসায়ীদের। শুধুমাত্র স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। সোনা-রুপা বন্ধক রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকার সুরক্ষিত লেনদেন আইন ২০২৩ প্রণয়ন করলেও এ আইনকে তোয়াক্কা করেন না বুধহাটা বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তথা কর্তৃপক্ষের নজরদারী না থাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা চালিয়ে যাচ্ছেন স্বর্ণের বন্ধকী ব্যবসা। স্থানীয়রা জানান, জরুরী অর্থের প্রয়োজনে স্বর্ণ বন্ধক রাখলে একদিকে যেমন দাম অনুযায়ী অর্ধেকের ও অধিক কম ঋণ পাওয়া যায়, অন্যদিকে সুদের হার ও দিতে হয় অনেক বেশি। কয়েক বছর পর শত কষ্ট করে সুদসহ বন্ধকী ঋণ পরিশোধ করলেও বন্ধকী স্বর্ণ উদ্ধার করতে বেগ পেতে হয় গ্রাহকদের।
স্থানীয় ভুক্তভোগী আলমগীর হোসেন জানান, অতি প্রয়োজনে জরুরী ভিত্তিতে নগদ অর্থের প্রয়োজনে নিজের স্ত্রীর কানের স্বর্ণ বুধহাটা বাজারের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নিকট বন্ধক রেখেছিলেন তিনি। কয়েক বছরের মধ্যে সুদ সহ ঋণের টাকা পরিশোধ করেন তিনি। তবে স্বর্ণ ফেরত দেওয়ার সময় চালাকি করে স্বর্ণ ব্যবসায়ী কম ওজনের অনুরূপ স্বর্ণের কানের ফিরিয়ে দেন।
বন্ধক রাখার সঠিক কাগজপত্র বা প্রমাণ না থাকায় আইনি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস) জেলা শাখা থেকে জানানো হয়েছে, সোনা কেনাবেচা করার জন্য ডিলিং লাইসেন্স করা বাধ্যতামূলক। তবে ডিলিং লাইসেন্স থাকুক বা না থাকুক, নিয়মনীতি না মেনে স্বর্ণের বন্ধকী ব্যবসা পরিচালনা করলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারী জানান লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।