পাকিস্তান নির্বাচন: জয়ে এগিয়ে পিটিআই সমর্থিত নারী প্রার্থীরাও
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সাধারণ নির্বাচনের চার দিন পরও পাকিস্তানিরা জানেন না কোন দল তাদের পরবর্তী সরকার গঠন করবে কিংবা পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হবেন। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কারাবন্দি এবং তার রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই) নির্বাচনে নিষিদ্ধ করা সত্ত্বেও দলটির সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জাতীয় পরিষদের ৯৩টি আসনে জয় পেয়েছেন।
পিছিয়ে নেই নারীরাও। এবারের নির্বাচনে নারী প্রার্থীদের জয়জয়কার দেখা গেছে। গত ২০১৮ সালের নির্বাচনের তুলনায় সর্বশেষ নির্বাচনে জনগণের ভোটে দেশটিতে সরাসরি নির্বাচিত নারী প্রার্থীদের সংখ্যাও বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এছাড়া জাতীয় পরিষদে পিএমএল-এন বা পিপিপি’র তুলনায় ইমরানের পিটিআই-সমর্থিত নারী প্রার্থীরাই বেশি জয় পেয়েছেন।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনসভায় নারীদের ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের আহ্বানের মধ্যে গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ২৭ জন নারী প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। যা ২০১৮ সালের নির্বাচনের চেয়ে ১১ জন বেশি।
জিও নিউজ বলছে, ২০২৪ সালের নির্বাচনে মোট ৮৮২ জন নারী প্রার্থী জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের আসনগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ৩১২ জন জাতীয় পরিষদের জন্য এবং ৫৭০ জন প্রাদেশিক আইনসভার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। মূলত আগের নির্বাচনগুলোর তুলনায় এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নারী প্রার্থীদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছিল উল্লেখযোগ্যভাবে।
পাকিস্তানের এবারের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ১১১টি রাজনৈতিক দল ২৭৫ জন নারী প্রার্থীকে মনোনীত করেছিল। এছাড়া এই ১১১টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দল সাধারণ আসনে পাঁচ বা ৫ শতাংশের বেশি নারী প্রার্থী দেয়। আর চারটি রাজনৈতিক দল সাধারণ আসনে ৪.৫ শতাংশ থেকে ৪.৯ শতাংশ নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছিল।
এর আগে ২০১৮ সালে রেকর্ড ১৮৩ জন নারী পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সাধারণ আসনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং তাদের মধ্যে মাত্র আটজন জয়ী হতে পেরেছিলেন। বিজয়ী নারী প্রার্থীদের মধ্যে চারজন সিন্ধ প্রদেশে, তিনজন পাঞ্জাবে এবং একজন বেলুচিস্তানে জয়ী হয়েছিলেন। আর খাইবার পাখতুনখাওয়াতে কোনও নারী প্রার্থী সেসময় সাধারণ আসনে জয়ী হয়নি।
আর সাতজন প্রার্থী সেসময় প্রাদেশিক আসনে জয়ী হয়েছিলেন। যার দুজন সিন্ধু আইনসভায় এবং পাঁচজন পাঞ্জাব বিধানসভা থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
আর ২০১৩ সালে নারী প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩৫ জন। তবে এবার রেকর্ড ২৭ জন নারী প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে জাতীয় পরিষদে ১২ জন, পাঞ্জাবের আইনসভায় ১১ জন, সিন্ধ আইনসভায় দুজন এবং ১ জন খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রাদেশিক পরিষদে জয়ী হয়েছেন।
জিও নিউজ বলছে, ২০২৪ সালের জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সফল হওয়া নারী প্রার্থীদের মধ্যে চারজন নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন-এর মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তারা হলেন ─ শিজরা মানসাব খারাল, মরিয়ম নওয়াজ শরিফ, বেগম তেহমিনা দৌলতানা এবং নোশীন ইফতিখার।
আর পাঁচজন বিজয়ী নারী প্রার্থী ছিলেন ইমরান খানের পিটিআই-সমর্থিত। তারা হচ্ছেন ─ আয়েশা নাজির জাট, আম্বার মজিদ, জারতাজ গুল, শানদানা গুলজার খান এবং আনিকা মেহেদি।
এছাড়া বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপিপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে নাফিসা শাহ এবং শাজিয়া মারি নামের দুই নারী তাদের নিজ নিজ জাতীয় পরিষদের আসন থেকে গত সপ্তাহের নির্বাচনে জিতেছেন।
এর পাশাপাশি আসিয়া ইসহাক সিদ্দিকী নামে এমকিউএম-পির একজন নারী প্রার্থীও করাচি থেকে জাতীয় পরিষদে জয়লাভ করেছেন।