আশাশুনির খাজরায় ১০ গ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন
স্টাফ রিপোটার : সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নের ১০ গ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন করতে স্লুইসগেট সংলগ্ন খালগুলো উন্মুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করে শনিবার বিকালে খাজরা ইউনিয়নের পশ্চিম খালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন চেউটিয়া টু খাজরা সড়কে ঘন্টা ব্যাপী এ কর্মসূচির আয়োজন করেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
খাজরা ইউনিয়নের ফটিকখালি, গজুয়াকাটি, খালিয়া, পশ্চিম খাজরা, দেয়াবর্ষিয়া, পিরোজপুর, রাউতাড়া, কাপসণ্ডা ও বড়দল ইউনিয়নের বাইনতলা, পাচপোতা সহ বিভিন্ন গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত সহস্রাধিক জমির মালিকের অংশ গ্রহণে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক ডা. নৃপেন্দ্র নাথ মণ্ডল।
শিক্ষক মনি মোহন মণ্ডলের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন প্রভাষক জাহাঙ্গীর কবির, কৃষক লীগ নেতা রবিউল ইসলাম রবি, যুবলীগ নেতা রমজান আলী মোড়ল, সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন বুলু, শিক্ষক কিংকর মণ্ডল, অরুণ মণ্ডল, ইউনুস আলী, ইউপি সদস্য রামপদ সানা, সাবেক সেনা সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গত এক বছর ধরে লবনাক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না হওয়ায় চাষাবাদ করতে পারিনি আশাশুনি উপজেলার খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার বিঘার আমন ধানের জমির মালিকেরা। এক ফসলি এ এলাকায় খাদ্য সংকটে পড়ে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে স্থানীয় মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে দরিদ্র পরিবারের মানুষ। পানি নিষ্কাশনের স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা বিভিন্ন দরবারে মাথা ঠুকেও অদ্যবধি কার্যকরি কোন ফল না পেয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টিকারী স্লুইসগেট সংলগ্ন খালগুলো উন্মুক্ত করার দাবিতে রাস্তায় নেমেছি।
গতবছর ফসল তুলতে পারিনি তাই পরবর্তী ফসল নির্বিঘ্নে চাষাবাদ করতে চাই পানি নিষ্কাশনের স্থায়ী ব্যবস্থা।
বক্তরা আরো বলেন, গত আষাঢ় মাস থেকে অতিবৃষ্টি ও লবন পানির ঘের মালিকদের নিষ্কাশিত লবনাক্ত পানিতে আমরা ডুবে আছি। সংশ্লিষ্ট এলাকার পানি কালকি স্লুইস গেট দিয়ে এতদিন নিষ্কাশিত হতো। কিন্তু বড়দলের কপোতাক্ষ নদের নাব্যতা হারিয়ে স্লুইস গেটের মুখে অতিরিক্ত পলি পড়ে গেট দিয়ে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। তারপর কপোতাক্ষ নদ খনন কাজ চলমান থাকায় পানি নিষ্কাশনের এ পথ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। তাই বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া এখন সময়ের দাবি। স্থায়ী সমাধানের জন্য খোলপেটুয়া নদীর চেউটিয়া খালের বাঁধে ৪ ব্যান্ড স্লুইস গেট নির্মাণ করতে হবে। যতদিন না হবে ততদিন পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমে চেউটিয়া খালের নদী সংলগ্ন পবনা খালের নেটপাটা অপসারণ করে আনুলিয়া ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামের হরিমর্দন গেট পর্যন্ত উন্মুক্ত করতে হবে। এছাড়া দেয়াবর্ষিয়া খাল, পুকুরের খাল ও ঝোরের খালের নেটপাটা অপসারণ করলে ফটিকখালি বিলের পানি নিষ্কাশন করা সম্ভব হবে।
জলাবদ্ধতার কারণে গত বছর ১০ হাজার বিঘা জমির মালিকরা ধান চাষাবাদ করতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরও একবছর যদি চাষাবাদ না করতে পারে তাহলে বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য সবাইকে এলাকা ছাড়তে হবে। দুর্ভোগ থেকে উত্তরণের জন্য চেউটিয়া বাঁধে স্লুইস গেট নির্মাণ ও খালের নেটপাটা অপসারণ করে জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ১০ গ্রামের মানুষ।