কালীগঞ্জে প্রধান শিক্ষক পরিমলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত ঠেকাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু !
হাফিজুর রহমান:
সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার উত্তর কালীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বহুল আলোচিত একই বিদ্যালয়ে ১৮ বছর চাকুরি করা প্রধান শিক্ষক পরিমল ঘোষের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর দায়ের করা ঘুষ, দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতা সহ নানা বিধ দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত ঠেকাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। গত ২৮ জানুয়ারি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর এলাকার অভিভাবক ও এলাকাবাসী তার অপসরণের দাবিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে আরা খানম গত ৮ জানুয়ারি বিষয়টি তদন্ত করে সাতক্ষীরা সদর থানার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে খবর পেয়ে, আলোচিত প্রধান শিক্ষক নিজের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্নীতি থাকতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে যে কারণে আজও পর্যন্ত তার কোন তদন্ত কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় এলাকার অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এদিকে বিদ্যালয় এর সামনে নির্মিত ৫/৬ টি পাকা দোকান ভাড়া দিয়ে দোকান ২ দুই হাজার টাকা করে দীর্ঘ ১৫ বছরে প্রায় লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করলেও ম্যানেজিং কমিটির কেউ জানে না। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। একই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ ১৮ বছর বাড়ির পাশে চাকরি করা এবং খুঁটির জোর নিয়ে জেলা এবং উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
এলাকাবাসী কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের বাতুয়া ডাঙ্গা গ্রামের অজিত ঘোষ এর পুত্র নপরিমল ঘোষ এর বিরুদ্ধে নানান অপকর্ম স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতির অভিযোগ একাধিকবার উঠলেও একই প্রতিষ্ঠানে ১৮ বছর চাকরি করা নিয়ে উপজেলার চায়ের দোকানগুলোতে মুখরোচক আলোচনা, সমালোচনার ঝড়ে বিষয়টি নিয়ে টক অফ দা টাউনে পরিণত হয়েছে। বিদ্যালয়টি পৈতৃক ভিটা বানিয়ে জেলা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতাদের ব্যবহার করে দুর্নীতি তোকমা লাগিয়ে বহাল বুকফুলিয়ে চাকরি করে যাচ্ছে । বর্তমান ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি৷ দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক অফিসার ওমর ফারুক কিছুই জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান। এ যেন “মিলেমিশে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ বিষয়টি জানতে এলাকার অভিভাবক এবং এলাকাবাসী স্কুলে গেলে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে তাড়িয়ে দেয় বলে ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের জানান। এ ব্যাপারে কালিগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশীষ সরকারের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান যেহেতু বিষয়টি নিয়ে জেলা কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ হয়েছে সেখানে আমাদের করার কিছু নাই। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে আরা খানমের নিকট জানতে চাইলে প্রথমে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান পরবর্তীতে অফিস সহকারী গোলাম মোস্তফা বলেন গত ৮ জানুয়ারি বিষয়টি তদন্ত করার জন্য সাতক্ষীরা সদরের সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
এ ব্যাপারে অত্র স্কুলের সামনে দোকানের ভাড়াটিয়া আল বারাকা হোমিও হল এর মালিক শরিফ এবং ভাড়াটিয়া সাইফুল, মিয়ারাজ, শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের জানান ২০১০ সালের আগে থেকে তারা ২ হাজার টাকা করে প্রতিমাসে ভাড়ার টাকা বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক পরিবারের নিকট জমা দেই। তবে টাকা নিয়ে কি করে সে বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। বিষয়টি তদন্ত-পূর্বক আইনঅনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।
Please follow and like us: