রাজনৈতিক সহিংসতায় বিআরটিসির ক্ষতি হল যা
ডেস্ক রিপোট : গত বছরের ২৮ অক্টোবর থেকে ছয় ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে হরতাল-অবরোধের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিসি) আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার ৭৬০ টাকা। এক মাস ১০ দিনে ১৭টি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ১০টি বাসে অগ্নিসংযোগ, ৫টি বাস ভাঙচুর, মতিঝিল ও মিরপুরে দুটি বাস ডিপোতে হামলার পর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, এসব ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ১৫টি মামলা হয়েছে। মতিঝিল, জোয়ারসাহারা, রংপুর, নরসিংদী, মিরপুর, খুলনা, কল্যাণপুর, মোহাম্মদপুর ও গাবতলীর ডিপোর অধীনে চলাচলকারী বিআরটিসি বাসে হামলা চালানো হয়।ক্ষতিগ্রস্ত বাসগুলো বিআরটিসি কারখানায় মেরামত করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা বাস মেরামতে সক্ষমতা অর্জন করেছি। আগে ক্ষতিগ্রস্ত বাস মেরামত করার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ডিপোতে আস্তে আস্তে বাস নষ্ট হতো। এখন সেরকম কোনো সুযোগ নেই। দ্রুত সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সকল যান মেরামত হবে। আবারও রাস্তায় লাল বাসগুলো চলতে দেখা যাবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, সারা দেশে বিআরটিসি বাস ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো অবরোধ ও হরতাল দিলে বেসরকারি বাস চলাচল কমে যায়। এতে জনদুর্ভোগ বাড়ে কিন্তু সারা দেশে বিআরটিসি বাস চলাচল স্বাভাবিক ছিল। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কম সংখ্যক বাস রাস্তায় চলাচল করায় প্রতিষ্ঠানের কিছুটা আয় কমেছে বলেও জানান তিনি।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, হরতাল-অবরোধের দিনে গড়ে রাষ্ট্রীয় এই পরিবহন সংস্থার ৭০৭টি যানবাহন চলাচল করেছে। আর সাধারণ দিনে ১ হাজার ১৪২টি বাস রাস্তায় চলাচল করে। এ জন্য কিছুটা আয় কমেছে। তবে ট্রাক ও প্রশিক্ষণ থেকে আয় কমেনি এবং সবাই প্রতি মাসের এক তারিখে নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান।
বিআরটিসি হিসাব বিভাগের সূত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পরিবহন সংস্থাটি গত সেপ্টেম্বরে ৪৯ থেকে ৫০ কোটি টাকা আয় করেছে, যা ২৮ অক্টোবর থেকে কমতে শুরু করেছে। নভেম্বরে কোম্পানিটির আয় ছিল প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। সরকার পতনের একদফা দাবিতে বিএনপিরসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো কর্মসূচির ডাক দেয়। যার শুরু গত বছরের ২৮ অক্টোবর। সেদিন বিএনপি মহা সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তফসিল ঘোষণার পর থেকে আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। ধারাবাহিক আন্দোলনের একপর্যায়ে টানা হরতাল-অবরোধ শুরু হয়। এর মধ্যে চলে রাজনৈতিক সংঘাত ও সহিংসতা। যা থেকে বাদ যায়নি বিআরটিসি। একে একে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠানটির বাস জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করাও হয়েছে। হামলা হয়েছে বিআরটিসি ডিপোতেও। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠান।