কুল্যায় লোহার শিকলে বন্দি মানসিক প্রতিবন্ধী মোহাম্মদ আলী
জি এম মুজিবুর রহমান:
আশাশুনি উপজেলার কুল্যা গ্রামে ভ্যানচালক রেজাউল ইসলামের একমাত্র অবুজ ছেলে মানসিক প্রতিবন্ধী মোহাম্মদ আলীকে শেকলে বেধে বন্ধি করে রাখা হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায় সে।
তার পিতা রেজাউল ইসলাম পেশায় একজন ভ্যানচালক। তার মা একজন কৃষানী। মোহাম্মদ আলীর পিতা-মাতা সারাদিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পরের কাছে জনমজুরি খেটে উপার্জন করে থাকেন। দু’বেলা দু’মুঠো লবণ ভাত খেয়ে অর্থ সঞ্চয় করেন তাদের ১৭ বছর বয়সী একমাত্র ছেলে মোহাম্মদ আলীর চিকিৎসার জন্য। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ফিস, মেডিকেল রিপোর্ট, যাতায়াত ও মেডিসিন খরচ বাবদ প্রতিমাসে খরচা হয় এক থেকে দেড় হাজার টাকা। নিম্ন বিত্ত পরিবারের পক্ষে সাংসারিক খরচ করে অতিরিক্ত এক থেকে দেড় হাজার টাকা ছেলের চিকিৎসার জন্য খরচ করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে বলে জানান মোহাম্মদ আলীর পিতা। ছেলে মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় এবং পিতা-মাতা বাড়িতে না থাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত লোহার শিকলে বন্দি থাকতে হয় তাকে। মাঠে কৃষানী কাজ শেষে বাড়িতে ফিরে শিকলের বন্দী জীবন থেকে মুক্ত করেন তার মা। এমনিভাবেই মানবেতার জীবন যাপন করতে হয় অসহায় পরিবারের মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলে মোহাম্মদ আলীর।
মোহাম্মদ আলীর পিতা জানান, মাত্র দুই শতকের ভিটাবাড়ি তার। পায়ে চালানো ভ্যানই তার পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস। পরিবারের অভাব অনাটন ঘোচাতে তার স্ত্রীকেও মাঠে যেতে হয় কামলার জন্য। অভাবের সংসারে তাদের একমাত্র ছেলে মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিপাকে পড়েছে তারা। পা ভ্যান চালিয়ে যেখানে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, সেখানে ছেলের উন্নত চিকিৎসা কিভাবে করবেন তিনি! তাদের একমাত্র ছেলের উন্নত চিকিৎসার জন্য এনজিও প্রতিষ্ঠান ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। তা না হলে বিনা চিকিৎসায় ধুকে ধুকে মৃত্যুর পথে পথযাত্রী হতে হবে তাদের একমাত্র অবুঝ ছেলে মোহাম্মদ আলী।
এ বিষয়ে আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মিজানুল হক বলেন, এ ধরনের রোগের জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীকে রেফার করা হবে।
Please follow and like us: