নৌকার প্রার্থী হয়েও হারলেন যারা
ডেস্ক নিউজ:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হয়েও অনেকে পরাজিত হয়েছে। পরাজিত এসব প্রার্থীর মধ্যে বর্তমানে মন্ত্রী পদে রয়েছেন এমন ব্যক্তি রয়েছেন। এছাড়া অনেক পরিচিত মুখও নৌকার পাল তুলতে পারেননি। নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছেই তাদের হারতে হয়েছে।
সদ্য অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বর্তমান সরকারের ক্ষমতাসীন মন্ত্রী পদে থেকে নৌকার টিকিট পেয়ে ভোটের মাঠে নেমে হেরেছেন অন্তত তিনজন প্রার্থী। তারা হলেন- বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী দুই বারের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী, ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী দুই বারের সংসদ সদস্য এনামুর রহমান এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী তিনবারের সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য।
এছাড়া নৌকা নিয়ে হেরে যাওয়ার তালিকায় রয়েছেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ, টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু।
যেসব আসনে নৌকার মাঝিরা হেরেছেন:-
ঢাকা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সানজিদা খানমকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওলাদ হোসেন। আওলাদ হোসেন মোট ভোট পেয়েছেন ২৪ হাজার ৭৭৫টি। সানজিদা খানম নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ২২ হাজার ৫৭৭টি। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৭ হাজার ৭৯৮ ভোট।
ঢাকা-৫ (ডেমরার একাংশ-মতিঝিলের একাংশ) আসনে মশিউর রহমান মোল্লা সজল নৌকার প্রার্থী হারুনর রশীদকে (মুন্না) পরাজিত করেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের মশিউর রহমান মোল্লা ৫০৬৩১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নৌকার প্রার্থী হারুনর রশীদ (মুন্না) ৫০৩৩৪ ভোট পেয়েছেন।
ঢাকা-১৯ আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ৮৪৪১২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। এ আসনে নৌকা প্রতীকের ডা. মো. এনামুর রহমান পেয়েছেন ৫৬৩৬১ ভোট। ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মো. তৌহিদ জং (মুরাদ) পেয়েছেন ৭৬২০২ ভোট।
দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনে ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী মো. জাকারিয়া বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। মো. জাকারিয়া পেয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ৫১৬ ভোট। তার নিকটতম আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোরঞ্জন শীল গোপাল পেয়েছেন ১ লাখ ৬ হাজার ৪৯৯ ভোট।
রংপুর-৫ আসনে বিজয়ী হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আশিকুর রহমান রাশেক নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৫৯০ ভোট, আর স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন এক লাখ ৯ হাজার ৭০৯ ভোট।
নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনে ৮৫ হাজার ১৮০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম ব্রহানী সুলতান মামুদ গামা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নাহিদ মোর্শেদ পেয়েছেন ৬২ হাজার ১৩২ ভোট।
নওগাঁ-৬ আসনে বেসরকারি ফলাফলে স্বতন্ত্র (ট্রাক প্রতীক) প্রার্থী অ্যাড. ওমর ফারুক সুমন ৭৬৭১৭ ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আনোয়ার হোসেন হেলাল (নৌকা প্রতীক) নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৬৯৯৭১।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনে নৌকার প্রার্থী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা হেরে গেছেন। তাকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন কেঁচি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুর রহমান বাদশা।
নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মো. শহিদুল ইসলামকে (বকুল) ১ হাজার ৯৯৬ ভোটে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবুল কালাম। তিনি পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৯৪৩ ভোট।
কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে মো. রেজাউল হক চৌধুরী (ট্রাক) ৮৯২৭৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এ আসনের নাজমুল হুদা পটল বিশ্বাস (ঈগল) পেয়েছেন ৫৩১০৫টি, আর আওয়ামী লীগের সরওয়ার জাহান বাদশাহ (নৌকা) পেয়েছেন ৪৮৯৬১টি।
কুষ্টিয়া-২ আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে হারিয়ে জয়লাভ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কামারুল আরেফিন। ট্রাক প্রতীকে কামারুল ১,২৫,৭৯৯ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাসানুল হক ইনু নৌকা মার্কায় ভোট পেয়েছেন ৯২,৪৪৫।
কুষ্টিয়া-৪ এ বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাব জর্জ হেরেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রউফের ( ট্রাক) কাছে।
ঝিনাইদহ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল এক লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি পেয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ১৫২ ভোট।
যশোর- ৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াকুব আলী ৬০ হাজার ৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য পেয়েছেন ৫৫ হাজার ৫৮৭ ভোট।
যশোর-৬ কেশবপুর আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন ঈগল প্রতীকের প্রার্থী আজিজুল ইসলাম। তিনি পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৯৪৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদার পেয়েছেন ৩৯ হাজার ২৬৯ ভোট।
বরগুনা-১ আসনে (সদর-আমতলী-তালতলী) আসনে হেরে গেছেন টানা তিনবারের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তিনি নৌকা প্রতীকে ৫৪ হাজার ১৬৮ ভোট পেয়ে হয়েছেন তৃতীয় ।এ আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম সরোয়ার টুকু। তিনি ভোট পেয়েছেন ৬১ হাজার ৮৭৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গোলাম সরোয়ার ফোরকান (স্বতন্ত্র) পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৮৭৪ ভোট।
পিরোজপুর-২ আসনের (ভান্ডারিয়া, কাউখালি, নেছারাবাদ) পটপরিবর্তন ঘটেছে। এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করায় ৩৮ বছর জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। কিন্তু এবার সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পিরোজপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজ।
টাঙ্গাইল- ৩ (ঘাটাইল) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আমানুর রহমান খান রানা ঈগল প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার কাছে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকার প্রার্থী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ডা. কামরুল হাসান খান।
টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে ট্রাক প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ঠান্ডুকে পরাজিত করে জয়ী হয়েছেন প্রবীণ রাজনীতিক নেতা আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। তার আরেক ছোট ভাই মুরাদ সিদ্দিকীও পরাজিত হয়েছেন এবারের নির্বাচনে।
টাঙ্গাইল-৫ আসনে টানা তিনবার বিজয়ী হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ছানোয়ার হোসেন। তিনি ঈগল প্রতীক নিয়ে ৭২ হাজার ২৭৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মামুন-অর-রশিদ নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮৬৭ ভোট।
জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে (স্বতন্ত্র) তেজগাঁও কলেজের প্রার্থী সাবেক অধ্যক্ষ আবদুর রশীদ ট্রাক প্রতীক নিয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৫০ হাজার ৬৭৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলাল নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪৭ হাজার ৬৩৮ ভোট।
শেরপুর-১ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছানুয়ার হোসেন ছানু ট্রাক প্রতীকে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯৩ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আতিউর রহমান আতিক পেয়েছেন ৯৩ হাজার ৩৭ ভোট।
ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনে ট্রাক প্রতীক নিয়ে ৯৩ হাজার ৫৩১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করে আসা স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হক সায়েম। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান এমপি জুয়েল আরেং-কে ১৯ হাজার ৬৭৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হলেন।
ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আব্দুল মালেক সরকার ৫২ হাজার ৭৮৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান এমপি অ্যাভোকেট মোসলেম উদ্দিন পেয়েছেন ৪২ হাজার ৫৫৮ ভোট।
ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এবিএম আনিসুজ্জামান ৭১ হাজার ৭৩৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান এমপি হাফেজ রুহুল আমীন মাদানী পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩০৯ ভোট।
ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ ৯৫ হাজার ২৮০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান এমপি কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনু পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৪২০ ভোট।
নেত্রকোণা-৩ কেন্দুয়া আটপাড়া আসনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু। ট্রাক প্রতীকে সাবেক সংসদ সদস্য ইফতিকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান সংসদ সদস্য অসীম কুমার উকিলের চেয়ে ১৫৬৩২ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব উদ্দিন। তিনি নৌকার প্রার্থী আবদুল কাহার আকন্দকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছেন।
মানিকগঞ্জ-২ (সিঙ্গাইর, হরিরামপুর ও সদরের একাংশ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (ট্রাক প্রতীক) দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে হেরে গেছেন তিনবারের এমপি কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৫২৫ ভোট। অন্যদিকে নৌকা প্রতীকে মমতাজ বেগম পেয়েছেন ৭৮ হাজার ২৬৯ ভোট।
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব বেসরকারিভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ৮৯ হাজার ৭০৫ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস পেয়েছেন ৮২ হাজার ৮৩৩ ভোট।
গাজীপুর–৫ আসনের তিনবারের এই সংসদ সদস্য নৌকার প্রার্থীদের মেহের আফরোজকে (চুমকি) হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুজ্জামান।
নরসিংদী-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা ঈগল প্রতীকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আসনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে রাব্বি খান। বিজয়ী সিরাজুল ইসলাম মোল্লা পেয়েছেন ৫৯ হাজার ২৯২ ভোট। আর আওয়ামী লীগের ফজলে রাব্বি খান পেয়েছেন ৪৩ হাজার ভোট।
ফরিদপুর-৩ সদর আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শামীম হক ৭৫ হাজার ৮৯ ভোট পেয়ে হেরে যান। এখানে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ। ঈগল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন এক লাখ ৩৪ হাজার ৯৮ ভোট।
ফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহ এবারও হেরে গেছেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬ ভোট। এ আসনে আওয়ামী লীগের আরেক নেতা নিক্সন চৌধুরী ঈগল প্রতীকে তৃতীয়বারের মতো জয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৫ ভোট।
মাদারীপুর-৩ আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোসা. তাহমিনা বেগম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৯৬ হাজার ৬৩৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আবদুস সোবহান মিয়া (গোলাপ) পেয়েছেন ৬১ হাজার ৯৭১ ভোট।
সুনামগঞ্জ-২ আসনে প্রায় ৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়া সেনগুপ্তা বিজয়ী হয়েছেন। দিরাই ও শাল্লা উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন সাবেক রেলমন্ত্রী প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তা। এ আসনে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ।
সিলেট-৫ (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসনে প্রায় ১৪ হাজার ব্যবধানে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে হারিয়ে জয় নিশ্চিত করলেন কেটলি প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা হুছামুদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী। আসনের ২৫২টি কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী মাওলানা হুছামুদ্দিন চৌধুরী কেটলি প্রতীকে পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৮১৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমেদ নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ৮৬৯ ভোট।
হবিগঞ্জ-৪ আসনে প্রায় এক লাখ ভোটের ব্যবধানে স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বিজয়ী হয়েছেন। এ আসনে নৌকার প্রার্থী ছিলেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। তিনি টানা দুইবারের সংসদ সদস্য। ব্যারিস্টার সুমন পেয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৯ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মাহবুব আলী পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৫৪৩ ভোট।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকার প্রার্থী বি এম ফরহাদ হোসেনকে হারিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান (কলার ছড়ি)।
কুমিল্লা-২ (হোমনা-মেঘনা) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ মেরিকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন হোমনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আব্দুল মজিদ। তিনি মোট ৪৪ হাজার ৭১৪ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিমা আহমদ মেরি পেয়েছেন ৪২ হাজার ৫৪৩ ভোট।
কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম সরকার। তিনি মোট ৮৩ হাজার ৯৭১ ভোট পেয়ে জয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান সংসদ সদস্য নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন পেয়েছেন ৭২ হাজার ১৪ ভোট।
কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ। তিনি পেয়েছেন ৯৬ হাজার ৮০৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল পেয়েছেন ৮১ হাজার ২৫৭ ভোট।
কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে। এ আসনে জয়ী হয়েছেন কেটলি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ জাহের। তিনি ভোট পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮১০টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফুলকপি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন পেয়েছেন ৬১ হাজার ৫২২ ভোট। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম খান পেয়েছেন ২২ হাজার ৩১৫ ভোট।
লক্ষ্মীপুর-৪ ঈগল প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন মো. আবদুল্লাহ। এখানে নৌকার প্রার্থী ছিলেন মোশারফ হোসেন (জাসদ)।
চট্টগ্রাম-১৫ লোহাগাড়া-সাতকানিয়া আংশিক আসনে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল মোতালেব। চট্টগ্রাম-১৫ লোহাগাড়া-সাতকানিয়া আংশিক আসনে নির্বাচনে লড়েছেন ৭ জন প্রার্থী। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন পেয়েছেন ৩৯ হাজার ২৫২ ভোট। বিজয়ী প্রার্থী ঈগল প্রতীকের আব্দুল মোতালেব পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৬২৮ ভোট।
চট্টগ্রাম-১৬ বাঁশখালী আসনে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন ঈগল প্রতীকের (স্বতন্ত্র) প্রার্থী মুজিবুর রহমান। বেসরকারিভাবে বিজয়ী প্রার্থী মুজিবুর রহমান পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৪৯৯ ভোট। এই আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী নিবার্চনের আচরণবিধি চরম লঙ্ঘনের কারণে মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।