নিলামে কোটিপতি, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই নিঃস্ব ক্রিকেটার
স্পোর্টস ডেস্ক:
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) রাতারাতি ভাগ্য বদলে দিয়েছে অসংখ্য ক্রিকেটারের। এবারের নিলামেও তেমনই বেশকিছু উদাহরণ তৈরী করেছে ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টটি। তবে একই নিলামে কোটিপতি হওয়ার কয়েকঘণ্টা পরই নিঃস্ব হয়েছেন ২৭ বছর বয়সী এক যুবক।
সুমিত কুমারের পরিবার ভেবেছিল, ২৭ বছর বয়সী উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানও এমনই একজন। গত ১৯ ডিসেম্বর আইপিএল নিলামে টিভিতে সুমিতের ছবি দেখ গেছে। ২০ লাখ রূপির ভিত্তিমূল্যের সুমিতকে ১ কোটি রুপিতে কিনে নেয় দিল্লি ক্যাপিটালস, মধ্যবিত্ত এক পরিবারের ভাগ্য রাতারাতি বদলে যায়।
আইপিএল নিলামের দিন সুমিত বাসায় ছিলেন না। ব্যস্ত থাকায় নিলামও দেখা হচ্ছিল না। কিন্তু ভারতের আর সব ক্রিকেটার পরিবারের মতো তার পরিবার বসেছিলেন টিভির সামনে। আশায় ছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনির অধীনে নিজের স্কিল নিয়ে কাজ করা সুমিত এবার ডাক পাবেন আইপিএলে।
নিলামে সুমিতের নাম আর ছবি পর্দায় ভেসে উঠতে প্রার্থনা শুরু করেন তার মা। বেশ কয়েকটি দল আগ্রহ দেখায়। ফলে দ্রুত দাম উঠতে থাকে তার। এক পর্যায়ে এক কোটি রুপিতে দিল্লি ক্যাপিটালস কিনে নেয়।
আনন্দে ভেজা চোখ নিয়েই সুমিতকে ফোন করে সে খবর দেন তার মা। দিল্লি ক্যাপিটালসও তার ছবি দিয়ে তাকে ট্যাগ করে পোস্ট করে, দিল্লি ক্যাপিটালস পরিবারেও স্বাগত জানায়।
বেশ কিছু স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদমাধ্যম এসে সুমিতের পরিবারের প্রতিক্রিয়া নেয়। প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন এসে জোরো হয়, অভিনন্দন জানায়। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পর সে আনন্দ উবে যায়।
ঝাড়খণ্ডে সুযোগ মিলছে না দেখে নাগাল্যান্ডে চলে গিয়েছেন সুমিত। একটু পর এই উইকেটকিপার অবাক হয়ে দেখেন দিল্লি ক্যাপিটালসের ইনস্টাগ্রামে আর তার ছবি নেই। হরিয়ানার আরেক সুমিত কুমারের ছবি। ২৮ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার অবশ্য পেস বোলিং অলরাউউন্ডার।
ধাক্কা পুরোপুরি সামলে নেয়ার আগে সুমিত আগে মাকে ফোন করেন ব্যাপারটা বোঝানোর জন্য। কিন্তু কান্নাভেজা কণ্ঠে তার এমন চেষ্টায় মায়ের দুঃখ আরো বেড়েছে, ‘আমার মা কত খুশি হয়েছিল। আমার জন্য সারাক্ষণ প্রার্থনা করেন। কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব? আমি স্বীকার করি যে দুজনের নাম এক হতে পারে কিন্তু টিভিতে দেখানো ছবি? আমার ছবি ছিল সেখানে, আমার নাম ছিল সেখানে।’
প্রায় দুই সপ্তাহ পর টাইমস অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে কথোপকথনের সময়ও ভেতরের কষ্ট লুকাতে পারেননি সুমিত, ‘আমার মাকে সান্ত্বনা দিতে ব্যর্থ হয়েছি আমি। টিভিতে আমার নাম ও ছবি দেখে এত খুশি হয়েছিল। এরপর এটা ঘটল। দিল্লি ক্যাপিটালস একটা বড় দল। একজন ক্রিকেটারের আবেগ নিয়ে ওরা খেলবে, এটা আশা করা যায় না। আমার পরিবার ও আমার খুব খারাপ লেগেছে।’
এত বড় ভুল কীভাবে হয়, সেটাই মাথায় আসছে না সুমিতের, ‘ওরা ইনস্টাগ্রামে আমার ছবিও দিয়েছে। তার মানে ওরা আমাকে খুঁজে দেখেছে। আমাকে ট্যাগ দিয়েছে। আমার কাছে যখন নোটিফিকেশন এল, আমি শতভাগ নিশ্চিত হয়েছে। কয়েক ঘণ্টা পর ওরা যখন ডিলিট করে দিল, আমি বিভ্রান্ত হয়েছি, ধাক্কা খেয়েছি।’