সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগ নেতাদের কঠোর সমালোচনা
রঘুনাথ খাঁ:
আগামি ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে বর্তমান জনপ্রতিনিধি ও সাবেক জনপ্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুর ১২টায় শহরের কামালনগরস্থ লেকভিউ কমিউনিটি সেন্টারে মতবিনিময় সভায় সভপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নাসেরুল হক।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাংসদ সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ঈগল প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাহাদাৎ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আকতার হোসেন, ঘোনা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ফজলুর রহমান মোশা, ধুলিহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী, বল্লী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যাড. মহিদুল ইসলাম, বৈকারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু মো. মোস্তফা কামাল, ঘোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাদের, বাঁশদহা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাস্টার মো. মফিজুর রহমান, ফিংড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. লুৎফর রহমান, ব্রহ্মরাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন ঢালী, আলিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মশিউর রহমান (ময়ুর ডাক্তার), আগরদাঁড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মজনুর রহমান মালি, বৈকারী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল, মো. আনসার আলী, ইউপি সদস্য মো. রবিউল ইসলাম, ফিংড়ী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মাহফুজ, আলিপুর ইউনিয়েনর ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম লাকী, ভোমরা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল গনি ও আব্দুর রশিদ প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-২আসনে আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতাকর্মী জাতীয় পার্টিকে মহাজোট বলে দাবী করে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা না থাকার পরও বর্ধিত সভা ডেকে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট চাইছেন। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ও দলের মানুষের বিরুদ্ধে কাজ করা তাদের অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে। সাতক্ষীরায় কতিপয় কিছু স্বার্থান্বেষী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ভোট আসলেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং দলের বিরুদ্ধে কাজ করে। ঐ স্বার্থান্বেষী চক্রটি দলের লোক হয়েও দলের বিরুদ্ধে কর্মকান্ড সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করে ফেলেছে। তারা দল ও দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে তাদের বিবেকে বাধেনা। এরা দেশ, দল ও জাতির ভালো চায়না। এরা ভোট আসলেই তাদের চেহারা পাল্টে যায়। কতিপয় ঐ সব নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করে হুসিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, আপনারা ভালো হয়ে যান। আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রী শেখ হাসিনার সৈনিক। আপনাদের বাঁধা ও হুমকি-ধামকি আমরা মানিনা। সাতক্ষীরায় নৌকা নেই আমরা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বারবার নির্বাচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা এমপি রবির ঈগল প্রতীক বিজয়ী করতে আমরা সোচ্চার ও ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আগামী ৭ জানুয়ারি ঈগল প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করে আমরা ঘরে ফিরবো ইনশাল্লাহ। বক্তারা আরো বলেন, আগামী ৭জানুয়ারি নির্বাচনে ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। ভোটারদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ এবং ভোটাধিকার প্রদানে জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন। সেলক্ষ্যে সদর নির্বাচনী এলাকার জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে যে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। সেজন্য আয়োজকদেরকে ধন্যবাদ জানান বক্তারা। ষড়যন্ত্রকারীরা গভীর ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করতে হবে।
এদিকে গত শুক্রবার পুরাতন সাতক্ষীরা মায়ের বাড়িতে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের সমর্থনে মতবিনিময় সভায় কাটিয়া মন্দিরের সভাপতি গৌর চন্দ্র দত্তের একটি বক্তব্য গুরুত্ব দিয়ে কয়েকটি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ। তারা জানান, একটি সভায় বেশ কয়েকজনহ বক্তব্য দিতে থাকেন। পত্রিকায় প্রধান অতিথি বা সম্মানিত অতিথির বক্তব্যকেই হাইলাইট করা হয়। এরপর অন্য কোন অতিথির বক্তব্য ইচ্ছ করলে পত্রিকায় ছাপা হতে পারে। সেক্ষেত্রে সাতক্ষীরার দুটি পত্রিকা অতি উৎসাহী হয়ে সাংসদ রবিকে আক্রমণ করতে এ ধরণের প্রতিবেদন ছাপিয়েছে।
তবে জেলা মন্দির সমিতি, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ ও পুজা উদযাপন পরিষদের বেশ কয়েকজন নেতা বলেন, মন্দিরে গত ২২ ডিসেম্বর ঈগল প্রতীকের ও ২৯ ডিসেম্বর লাঙ্গল প্রতীকের সমর্থনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যা’ নির্বাচন আচরণ বিধি ভঙ্গের শামিল মাত্র। নির্বাচনী আচরণ বিধিমালার ২০(ক) ধারায় মন্দির, মসজিদ. গীর্জা বা ধর্শীয় প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা বা মতবিনিময় সভা করা যাবে না। তাহলে বিশিষ্ঠ আইনজীবী, সমাজসেবক, ব্যবসায়ি ও চাকুরিজীবিরা এ সব সংগঠণের থাকার পরও হাতে গোনা কয়েকজন মায়ের বাড়িকে পৈতৃক সম্পত্তি বানিয়ে তাদের মত করে ব্যবহার করছেন। শুক্রবার লাঙ্গল প্রতীকের মত বিনিময় সভাকে ঘিরে যেভাবে ব্যানারে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথির নাম লেখার নির্দেশনা ছিল তা অ্যাড. সোমনাথ ব্যাণার্জী, নিত্যানন্দ আমিন ও বাসুদের সিংহ না লিখে আওয়ামী লীগের এক নেতার কথা মত ব্যনার তৈরি করেছেন। সাংসদ মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবি গত ১০ বছরে মন্দিরের জন্য যেটুকু করেছেন তা তারা চিরদিন মনে রাখবেন। অগামিতে যেই সাংসদ হয়ে আসুক না কেন তিনি ধর্শীয় সংখ্যালঘুদের কল্যানে কাজ করে যাবেন।