সারদেশে বড়দিন উদযাপন
ডেস্ক রিপোট: সারাদেশে আনন্দোৎসবের মধ্য দিয়ে উযাপতি হচ্ছে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন। খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিস্ট ২৫ ডিসেম্বর বেথলেহেমে জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিস্টধর্মাবলম্বীরা এ দিনটিকে ‘শুভ বড়দিন’ হিসেবে উদযাপন করে থাকেন।বড়দিন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় গির্জাগুলোকে সাজানো হয়েছে বর্ণিলভাবে। রোববার সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন গির্জা এবং তারকা-হেটেলগুলোতে ব্যবস্থা করা হয়েছে আলোকসজ্জার।সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন। নগরীর পাথরঘাটার বাণ্ডেল রোডে অবস্থিত পর্তুগিজদের নির্মিত প্রাচীন জপমালার রানী গির্জায় সকাল আটটায় শুরু হয় সকালের সমবেত প্রার্থনা। ফাদার রিজেন ডি কস্তার পরিচালনায় প্রার্থনায় জাতি-দেশ বিশ্বের শান্তি কামনা করা হয়। তুলে ধরা হয় যিশু জন্মের তাৎপর্য। প্রার্থনার পর বিশেষ কীর্তন অনুষ্ঠিত হয়। ছিল কেক কাটার অনুষ্ঠানও। এতে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। বড়দিন উপলক্ষে নগরীর গির্জাগুলো বিশেষভাবে সাজানোর পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে ক্রিস মাস ট্রি এবং যিশু খ্রিস্টের জন্মের স্মৃতি যুক্ত গোশালা।
রাজবাড়ী: রাজবাড়ীতে ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড় দিন উদযাপন করা হচ্ছে। সোমবার সকালে রাজবাড়ী ব্যাপটিস্ট চার্চে শুভেচ্ছা বিনিময় ও কেক কেটে বড় দিনের শুভ উদ্ভোধন করেন আমন্ত্রিতঅতিথিরা । এ সময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার চার্চে কেঁক উপহার নিয়ে আসেন।
উদ্বোধনে সভার রাজবাড়ীর ব্যাপপটিস্ট চার্চের জাজক জেমস হালদারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন, রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুবর্ণা রাণী সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইফতেখারুজ্জামানসহ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা।
রংপুর: খ্রিস্ট সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিনে রংপুরে বিভিন্ন গীর্জায় অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রার্থনা সভাসহ নানা অনুষ্ঠান। এসব অনুষ্ঠানে দেশ ও মানুষের কল্যাণ কামনা করা হয়েছে।বিভাগীয় নগরীর সবচেয়ে বড় গীর্জা রংপুর ব্যাপস্টিক চার্চে সকাল ৯ টায় উপাসনা গান দিয়ে শুরু হওয়া বড় দিনে বাইবেল প্রচার ও অন্য উপাসনা শেষে দেশবাসীর মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করে পালক প্রধান রেভারেন ফিলিফ বর্মণ। পরে যিশু খ্রিস্টের জন্ম দিন উপলক্ষে কেক কাটা হয়। এবারে প্রার্থনায় অংশ নিতে পেরে আনন্দিত ভক্ত অনুসারীরা।
বান্দরবান: নানা আয়োজনে বান্দরবানে উদযাপিত হচ্ছে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন। বড়দিন উপলক্ষে সকাল থেকে খ্রিস্টান ধর্মালম্বীরা মেতে ওঠেছে নানা উৎসবে। রাত ১২টা এক মিনিটে প্রার্থনার মধ্য দিয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন শুরু হয়। বড়দিনকে ঘিরে সকাল থেকে জেলা সদরে ব্যাপস্টিক গীর্জা ও ফাতেমা রাণী ক্যাথলিক গীর্জায় আয়োজন করা হয় সমবেত প্রার্থনা। সকাল থেকেই সম্প্রদায়টির শিশু-নারী ও পুরুষেরা সমবেত প্রার্থনায় মিলিত হয়ে আগামী দিনের সুখের জন্য বিশেষ প্রার্থনা করে। প্রার্থনায় আত্মশুদ্ধি মধ্য দিয়ে নতুন বছরের সুখ শান্তির প্রত্যাশা করেন সবাই। খ্রিষ্ট ভক্তরা এসময় যীশুর পথ নির্দেশনা অনুযায়ী সকলকে একসাথে সুন্দরভাবে পৃথিবীতে বসবাসের আহবান জানান। সমবেত প্রার্থনা শেষে সকলে মিলিত হয়ে যীশুর আরাধনায় সমবেত সংগীত পরিবেশন করে।
এসময় সমবেত প্রার্থনা পরিচালনা করেন ফাতেমা রাণী ক্যাথলিক গীর্জার পাল-পুরোহিত ফাদার সুমন পিটার কস্তা, সিএসসি।
গাজীপুর: দেশের বৃহত্তম খ্রিস্টান পল্লী গাজীপুরের খ্রিস্টান এলাকাগুলোতে বড়দিন বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন হচ্ছে। দিনটি উপলক্ষে নানা বয়সের নারী-পুরুষ যেমন নতুন জামা কাপড়ে সেজেছেন, তেমনি আলোকসজ্জায় গীর্জা, চার্চের পাশাপাশি সাজিয়েছেন বাসাবাড়ি। কেক কাটা, পিঠাপুলি, নাচ-গানসহ দিনব্যাপী তাদের নানা আনন্দ আয়োজন দিনটি তারা উপভোগ করছেন। এদিকে নাগরি, তুমুলিয়া, মঠবাড়িসহ বিভিন্ন গির্জায় গিয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সাথে সৌজন্য বিনিময় করেছেন, শুভকামনা জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এবং ডাকসুর সাবেক ভিপি ও সাবেক সংসদ সদস্য আখতারউজ্জামান। আখতারউজ্জামানের পক্ষ থেকে উপাসনালয়ে আসা লোকজনকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়েছে। এ দুজনেই এবারের সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী।
নেত্রকোনা: সারাদেশের মতো নেত্রকোনায় প্রার্থনা, ধর্মীয় সংগীত, শুভেচ্ছা বিনিময় ও কেক কাটাসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বড় দিন উদযাপন করছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ। দুর্গাপুর কলমাকান্দা, পূর্বধলা,মোহনগঞ্জ ও সদরের গীর্জাসহ শতাধিক ওপরে স্থানে উদযাপিত হচ্ছে এ উৎসব।
সোমবার সকাল ৯টায় শুভেচ্ছা বিনিময়, শুভেচ্ছা বক্তব্য, প্রভু যিশুর স্মরণে গানের মধ্য দিয়ে গীর্জাগুলোতে শুরু বড়দিনের অনুষ্ঠান। প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়। প্রার্থনা শেষ কেক কাটা, শুভেচ্ছা বিনিময়। দুপুরে বাড়িতে বাড়িতে চলছে শুভেচ্ছা বিনিময় ও প্রতিভোজ। সন্ধ্যায় কেকে কাটার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ উৎসব বলছেন ধর্মযাজকরা।
বড়দিনের প্রাক্কালে রোববার রাতে দুর্গাপুর বিরিশিরি এলাকার মারিয়া ধর্মপল্লীসহ পাঁচটি উপজেলার অধিকাংশ গীর্জাগুলোতে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ বড়দিন উৎসবের আনন্দে মেতে উঠে। গীর্জায় প্রার্থনা শেষে যীশুর জন্মের খবর দিতে রাতভর চলে বাড়িতে বাড়িতে কীর্তন।
উপাসনালয়ের ধর্মগুরু পাল পুরোহিত ও সহকারী পাল পুরোহিতরা বলছেন, যীশু খ্রিস্ট সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য এ পৃথিবীতে এসেছিলেন সেই বার্তা পৌঁছে দিয়ে সকল মানুষের কল্যাণ ও শান্তির জন্য প্রার্থনা করছেন তারা।
এছাড়া জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরি সেন্ট নিকোলাস চার্চের সহকারী পাল পুরোহিত ফাদার বিশ্বজিৎ বারনেট বর্মণ বলেন, গির্জায় বিশেষ প্রার্থনায় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সারা বিশ্বের শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা হয়।