সাতক্ষীরা-১ আসনে পঞ্চমুখি প্রতিদ্বন্দ্বীতা, নির্বাচন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী

রঘুনাথ খাঁ:
সাতক্ষীরা-১ আসনে পঞ্চমুখি প্রতিদ্বন্দ্বীতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সাথে জাতীয় পার্টির প্রার্থীসহ ৪ প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে জমজমাটভাবে। তবে নৌকা প্রতীক না দেওয়ায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ।
সাতক্ষীরা জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে জানা যায়, সাতক্ষীরা-১ আসনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ১০ প্রার্থী রয়েছেন। তারমধ্যে ফিরোজ আহমেদ স্বপনের নৌকা,সৈয়দ দীদার বখতের লাঙ্গল ও মুস্তফা লুৎফুল্লাহর কাস্তে-হাতুড়ি রয়েছে।  তবে  মোস্তফা লুৎফল্লাহর পক্ষে কেউ রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে প্রতীক নিতে জান নি।
সাতক্ষীরা-১ আসনটি তালা ও কলারোয়া উপজেলার ২৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ আসন থেকে জয়লাভ করেন। ২০১৪ সালে দ্বিতীয়বারের মতো প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সরদার মুজিবকে পরাজিত করেন ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। ২০১৮ সালেও তিনি নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হন। তবে এবার শেষ মুহুর্তে প্রত্যাহারের আদেশ না আসায় নৌকা প্রতীক পেয়েছেন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপন। বিপুল নেতা-কর্মী নিয়ে ফিরোজ আহমেদ স্বপন রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে আসনে প্রতীক বরাদ্দ নিতে।
প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হচ্ছেন ফিরোজ আহমেদ স্বপন।
তিনি বলেন,‘‘আমার মনোনয়নপ্রাপ্তিতে তালা-কলারোয়ায় গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। আমার বিজয় নিশ্চিত। শেখ হাসিনার উন্নয়নে লোকজন নৌকায় ভোট দেবে। ’’
বিজয়ের বিষয়ে ব্যাপক আশাবাদি ১৮ সালের আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ নূরুল ইসলাম।
তিনি বলেন,‘‘ দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দেই। তালা-কলারোয়ার অলিগলি আমি চিনি। জনগণ আমাকে ভোট দেবে।’’
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান । এছাড়াও নিজেকে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে দাবি করেন ১৪ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোট পাওয়া প্রার্থী সরদার মুজিব।
কেন্দ্রীয় সৈনিক লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সরদার মুজিব বলেন,‘‘ যেহেতু স্বতন্ত্র ভোট আমি করেছি। তাই ভোটের মাঠের হিসেবে আমি বিজয়ী হব। ’’
সাতক্ষীরা-১ আসনে জাতীয় পার্টির অবস্থান বেশ শক্তিশালী ছিল। বর্তমানে সেই অবস্থা না থাকলেও ব্যক্তি হিসেবে ভোটারদের মনে জায়গা রয়েছে এরশাদ সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দীদার বখতের। তবে জেলার অন্য কোন আসনে জাতীয় পার্টির দলীয় কার্যক্রম দৃশ্যমান না থাকলেও জাপা নেতা ও তালা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের সার্বক্ষনিক পদচারনা তালা- কলারোয়ার জাতীয় পার্টির ভোটে প্রতিফলন ঘটাবে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের ভোটের সঙ্গে প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ নুরুল ইসলাম ও সরদার মুজিবের পকেট ভোট সংযুক্ত না হলে বাস্তবতা ভিন্ন কথা বলতে পারে।
এবিষয়ে তালা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, সৈয়দ দীদার বখত তালা ও কলারোয়ার উন্নয়নের রুপকার। তিনি সবার কল্যাণ করেছেন। সুষ্ঠু ভোট হলে তিনি পাশ করবেন। ’’
এদিকে, সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ও বর্তমান সংসদ সদস্য মুস্তফা লুৎফুল্লাহ।
সেলফোনে মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, ‘‘১৪ দলের ৭টি আসনে ছাড় দেওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত ছিল। সাতক্ষীরা-১ আসন সেই ৭টি আসনের মধ্যে ছিল।  কিন্তু শেষ মুহুর্তে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মনোনয়পত্র প্রত্যাহার না করায় আমি নির্বাচনে যাচ্ছিনা।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)